গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ভাঙ্গার জঙ্গল এলাকায় মকস বিলে ঘুরতে গিয়ে নৌকা ডুবে তিন বন্ধু নিখোঁজ হন। ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর একজনের মরদেহ উদ্ধার হলেও বাকি দুজন নিখোঁজ আছেন। তাঁদের উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ডুবুরি দলের সদস্যরা। এদিকে নিখোঁজ তরুণদের পরিবারের সদস্যরা বিলের ধারে বসে আহাজারি করছেন।

যাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁর নাম রফিকুল (১৮)। তিনি ঢাকার সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের হালিম মিয়ার ছেলে। এখনো নিখোঁজ আছেন কালিয়াকৈর উপজেলার সুরিচালা গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে মো.

শিমুল হোসেন ও একই এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান। তিনজনই সমবয়সী বন্ধু।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, ধামরাই উপজেলার শিমুলিয়া থেকে গতকাল শুক্রবার সকালে রফিকুল তাঁর খালার বাড়ি কালিয়াকৈরের সুরিচালা এলাকায় বেড়াতে আসেন। বিকেলে পাঁচ বন্ধু মিলে একটি ছোট নৌকা নিয়ে মকস বিলে ঘুরতে বের হন। এ সময় প্রচণ্ড বাতাস বইতে থাকায় বিলের পানিতে ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নৌকাটি বিলের পানিতে উল্টে যায়। সাকিব হোসেন ও আরাফাত হোসেন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও তিনজন পানিতে তলিয়ে যান।

খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন তাঁদের খুঁজতে বিলে নামেন। ব্যর্থ হয়ে তাঁরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিসের কালিয়াকৈরের কর্মী ও ডুবুরি দল উদ্ধারচেষ্টা শুরু করেন। একপর্যায়ে আজ শনিবার সকাল আটটার দিকে নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে রফিকুল নামে একজনকে উদ্ধার করা হয়। বাকি দুজনকে এখনো পাওয়া যায়নি।

মারা যাওয়া রফিকুলের চাচা ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমার ভাতিজা খালার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। পরে আমরা খবর পাই বিলে ডুবে গেছে। এবার সে এসএসসি পাস করেছে। আজ সকালে ওর লাশ ডুবুরিরা উদ্ধার করেছে। ওর শোকে ভাই–ভাবি পরিবারের সবাই পাগল হয়ে যাচ্ছে।’

কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন রায়হান চৌধুরী বলেন, ‘তিনজন নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে আমরা গতকাল থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছি। আজ সকালে রফিকুল নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুজনকে উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে অধ্যাদেশের খসড়াটি সচিব কমিটির মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশনের কাঠামো ও কার্যক্রমের খসড়া তৈরি করেছে।

খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এই কমিশনের চেয়ারপারসন হবেন। সদস্য থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ; গ্রেড-২ পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা; অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা; পুলিশ একাডেমির একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ; আইন, অপরাধবিজ্ঞান বিষয়ের একজন কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক; ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন একজন মানবাধিকারকর্মী।

আরও পড়ুনপুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে স্বাধীন কমিশন অপরিহার্য৮ ঘণ্টা আগেকমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন।

কমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন। সদস্যরা যোগদানের দিন থেকে চার বছর নিজ নিজ পদে থাকবেন। মেয়াদ শেষে কোনো সদস্য আবার নিয়োগের যোগ্য হবেন না।

অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ প্রতিপালনে বাধ্যবাধকতার বিষয়ে বলা হয়েছে—এই কমিশন যেকোনো কর্তৃপক্ষ বা সত্তাকে কোনো নির্দেশ দিলে উক্ত কর্তৃপক্ষ বা সত্তা অনধিক তিন মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। তবে কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ বাস্তবায়নে কোনো অসুবিধা হলে সে ক্ষেত্রে নির্দেশ বা সুপারিশ পাওয়ার অনধিক তিন মাসের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। কমিশন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে যে নির্দেশ বা সুপারিশ পাঠাবে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ বা সুপারিশ কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করে কমিশনকে জানাতে হবে।

আরও পড়ুনকোনো দল নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে আইন ও দেশের প্রতি৯ ঘণ্টা আগেপুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

এই কমিশনের সদস্য পদে নিয়োগের সুপারিশ প্রদানের জন্য সাত সদস্যের সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠন করা হবে। খসড়া অধ্যাদেশে প্রধান বিচারপতির মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির মনোনীত একজন সরকারদলীয় এবং একজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যকে বাছাই কমিটিতে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের উপস্থিতিতে বাছাই কমিটির কোরাম হওয়া ও বাছাই কমিটির বাছাই প্রক্রিয়া শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে।

আরও পড়ুন‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা১৭ ঘণ্টা আগে

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ খসড়ায় কমিশন প্রতিষ্ঠা, কার্যালয়, সদস্যদের নিয়োগ, মেয়াদ, কমিশনের সদস্য হওয়ার জন্য কারা অযোগ্য, সদস্যদের পদত্যাগ, অপসারণ, পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা বৃদ্ধি, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, নাগরিকের অভিযোগ অনুসন্ধান-নিষ্পত্তি, পুলিশ সদস্যদের সংক্ষোভ নিরসন, পুলিশপ্রধান নিয়োগ, আইন-বিধি, নীতিমালা প্রণয়ন ও গবেষণা বিষয়েও প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

আরও পড়ুনমাঝেমধ্যে শুনতে হয়, ‘উনি কি আমাদের লোক’: আইজিপি১৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
  • নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ৩১ বিভাগকে প্রস্তুতির নির্দেশ ইসির