অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনের জন্য ওয়্যারলেস চার্জ প্রযুক্তির নতুন সংস্করণ কিউ-টু চালুর ঘোষণা দিয়েছে ওয়্যারলেস পাওয়ার কনসোর্টিয়াম (ডব্লিউপিসি)। এর ফলে ২৫ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জ প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বর্তমানের তুলনায় দ্রুত ফোন চার্জ করা যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, গুগলের আসতে যাওয়া পিক্সেল ১০ সিরিজের স্মার্টফোনে প্রথমবারের মতো এ প্রযুক্তি যুক্ত করা হতে পারে।

ওয়ানপ্লাস, শাওমি ও অপোসহ বিভিন্ন স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে নিজেদের তৈরি বেশ কিছু মডেলে ৫০ থেকে ৮০ ওয়াট পর্যন্ত ওয়্যারলেস চার্জ প্রযুক্তি যুক্ত করেছে। তবে এসব প্রযুক্তি মূলত প্রতিষ্ঠানভিত্তিক এবং নির্দিষ্ট ফোনেই সীমাবদ্ধ। অন্যদিকে অ্যাপল, গুগল ও স্যামসাং দীর্ঘদিন ধরেই ডব্লিউপিসি অনুমোদিত স্ট্যান্ডার্ড মেনে থাকে। ফলে তাদের ফোনে ওয়্যারলেস চার্জের গতি ১৫ ওয়াটেই সীমাবদ্ধ ছিল। এতে করে ওয়্যারলেস চার্জ প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন কমেছে, তেমনই আগ্রহ হারিয়েছেন ব্যবহারকারীরাও। তবে নতুন কিউ-টু প্রযুক্তির মাধ্যমে আবারও ওয়্যারলেস চার্জ প্রযুক্তি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

আরও পড়ুনঅ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে আইফোনের যে সুবিধা ব্যবহার করা যাবে১৪ এপ্রিল ২০২৫

বর্তমানে বাজারের অনেক ফোনেই ১০০ থেকে ১২০ ওয়াট পর্যন্ত তারযুক্ত চার্জ সুবিধা রয়েছে। এর ফলে মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিটেই পুরো ব্যাটারি চার্জ হয়ে যায়। সেই তুলনায় ওয়্যারলেস চার্জ প্রযুক্তি অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। তবে কিউ-টু শুধু গতি নয়, ফোন চার্জ করার সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ব্যাটারির স্থায়িত্ব রক্ষা এবং নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে।

আরও পড়ুনঅ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে প্রতারণামূলক বার্তা শনাক্তে গুগলের নতুন এআই–সুবিধা০৯ মার্চ ২০২৫

প্রযুক্তি–বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, বর্তমানে সিলিকন-কার্বন ব্যাটারির মতো নতুন প্রযুক্তি চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতা ও দীর্ঘস্থায়িত্ব বাড়িয়েছে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে কিউ-টু যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত ও নিরাপদে চার্জ করতে পারে, তাহলে ওয়্যারলেস চার্জ প্রযুক্তি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের কাছে নতুন করে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।

সূত্র: নিউজ১৮

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ

কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।

এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।

তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।

শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।

স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।

জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ