থানায় জনগণকে হয়রানিমুক্ত সেবা দিতে পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

আইজিপি বলেন, “থানায় এসে কেউ যেন অপমানিত না হয়, থানার দরজা যেন মানুষের জন্য খোলা থাকে। থানার পরিবেশ যেন হয় সাহচর্যের, আতঙ্কের নয়। থানাই হোক ন্যায়বিচারের প্রথম ঠিকানা।”

আইজিপি বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজের এর সম্মেলন কক্ষে ‌‘থানায় হয়রানিমুক্ত ও আইনগত সার্ভিস ডেলিভারি প্রদানের মাধ্যমে জনআস্থা পুনরুদ্ধারে পুলিশের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

লোহাগড়ায় ট্রাক চাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত

সুনামগঞ্জে পিকআপের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু

পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এর ভারপ্রাপ্ত রেক্টর এস এম রোকন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সিনিয়র ডাইরেক্টিং স্টাফ (ট্রেনিং) ড.

এ এফ এম মাসুম রব্বানী, পিবিআইয়ের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোস্তফা কামাল, ডিআইজি (প্রশাসন) কাজী মো. ফজলুল করিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাহারুল আলম বলেন, “আমাদের পেছনের পথ ছিল অনেক ভুল সিদ্ধান্তের ফলাফল। আমরা মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছি।”

“আমাদের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। আসুন, আমরা প্রতিজ্ঞা করি, আমরা যেন হয়রানিমুক্ত সেবা দেই। থানায় অভিযোগ করতে এসে কেউ যেন অপমানিত না হয়, থানার দরজা যেন মানুষের জন্য খোলা থাকে। আমাদের আচরণ যেন মানবিক হয় এবং আমরা যেন জনমুখী সেবা দিতে পারি।”

পুলিশ প্রধান বলেন, “জুলাই বিপ্লব কেবল একটি ঘটনা প্রবাহ নয়। এটি ছিল ন্যায়, মানবতা ও দায়িত্ববোধের এক জাগরণ। এ জাগরণ আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, সেবাই আমাদের প্রকৃত পরিচয়, জনগণই ক্ষমতার উৎস।”

কর্মশালায় বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) থেকে পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ৫৯ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। 

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র আইজ প

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের