শরীয়তপুরে নাগরদোলার খাঁচা খুলে পড়ে আহত ৩
Published: 29th, August 2025 GMT
শরীয়তপুরে জেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত পার্কের নাগরদোলার একটি খাঁচা খুলে নিচে পড়ে তিন শিশু-কিশোর আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর দুইজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে শরীয়তপুর পার্কে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
আরো পড়ুন:
দুই মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কায় নিহত ১, আহত ৫
চট্টগ্রামে হতাহত ২৪ পরিবারকে কোটি টাকার সহায়তা দিল বিআরটিএ
আহতরা হলেন- আব্দুল্লা (১১), সিজান (১২) ও মিরাজ হাওলাদার (১৫)। তারা সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের সামনে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির পাশে পার্ক নির্মাণ করেছে জেলা প্রশাসন। শরীয়তপুর পার্ক নামে এটি চালু করা হয়। চারদিকে সীমানাপ্রাচীর ঘেরা ভেতরে শিশুদের খেলার জন্য রয়েছে অন্তত ২০টি বিভিন্ন ধরনের রাইড। সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শিশুদের এখানে নিয়ে আসেন অভিভাবকরা।
আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় পার্কজুড়ে ছিল শিশু কিশোরদের হৈ-হুল্লোড়। বিভিন্ন রাইডে চড়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ছিল তারা। হঠাৎ বিকট আওয়াজ করে নাগরদোলার একটি খাঁচা মাটিতে আছড়ে পড়ে। কিছু মুহূর্তের জন্য থমকে যায় পুরো আনন্দ। স্বজন ও পার্কে ঘুরতে আসা লোকজন দ্রুত ছুটে গিয়ে খাঁচার ভেতর থেকে আব্দুল্লা, সিজান ও মিরাজকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। গুরুতর দুইজনকে ঢাকায় পাঠান চিকিৎসক।
আহত মিরাজ হাওলাদার বলেন, “আমি মামা বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। এক মামা আর মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে পার্ক ঘুরতে যায়। আমরা পার্কের নাগরদোলায় উঠি। হঠাৎ শব্দ হয়ে নাগরদোলার খাঁচাটি নিচে পড়ে যায়। অনেক উপর থেকে পড়ায় আমরা সবাই আহত হই। আমি অজ্ঞান ছিলাম, জ্ঞান ফেরার পর দেখি হাসপাতালে।”
প্রত্যক্ষদর্শী জাহিদ হাসান বলেন, “আমি পার্ক ঘুরতে আসি। হঠাৎ দেখি, নাগরদোলার একটি খাঁচা ভেঙে নিচে পড়ে গেছে। আমরা দৌঁড়ে গিয়ে দেখি, খাঁচার মধ্যে তিনটি শিশু রয়েছে। আমরা তাদের ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
মিরাজ হাওলাদারের চাচাতো ভাই সোয়াদ বলেন, “আমার চাচাতো ভাই নাগরদোলা ভেঙে পড়ে আহত হয়েছে শুনে আমি হাসপাতালে এসেছি। ওর সঙ্গে থাকা আহত অন্য দুইজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। একটি সরকারি শিশু পার্কে এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমরা চাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।”
শেরপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা লিমিয়া সাদিনা বলেন, “পার্কের নাগরদোলার খাঁচা খুলে পড়ে আহত তিন শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের মধ্যে দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”
শেরপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, “আমরা আহত শিশুদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। কী কারণে এমন ঘটনা, এটি যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি অন্য বিষয় তা খতিয়ে দেখা হবে।”
ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত ন গরদ ল র দ ইজনক
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় বিবাদমান দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এক যুবদল নেতাসহ কয়েকজন আহত হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা জানায়, জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের চেরাগ আলী বেপারিকান্দি এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নাসির বেপারী এবং তাজুল ছৈয়ালের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উভয়পক্ষের লোকজন হাতবোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে বেশ কয়েকটি বসতবাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। হাতবোমার আঘাতে যুবদল নেতা সালাউদ্দিন বেপারী, কামাল বেপারীসহ কয়েকজন আহত হয়েছে। আহত দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে।
আরো পড়ুন:
ড্যাফোডিল-সিটি ইউনিভার্সিটি সংঘর্ষ: শিক্ষার্থীদের আসামি করে পাল্টাপাল্টি মামলা
শিশুদের ঝগড়া থেকে বড়দের সংঘর্ষ, আহত ৫০
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বেশ কিছু হাতবোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। দুইজনকে আটক করা হয়েছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘যারা এই নাশকতা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ইউপি সদস্য নাসির বেপারীর স্ত্রী সাবিনা আক্তার বলেন, ‘‘আমরা বাড়িতে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। বোমার শব্দে ঘুমে ভেঙে যায়। উঠে দেখি আমাদের বাড়িতে বোমা হামলা হচ্ছে। জানালার গ্লাস ভেঙে ধোঁয়ার রুম ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের প্রতিপক্ষের লোকজন তাজুল ছৈয়াল, মমতাজ বেপারী, মন্নাপ বেপারী, সুজন, রনি ভূঁইয়া, টিপু মাদবর হামলা চালিয়েছে।’’ তিনি দোষীদের বিচারের দাবি জানান।
আহত সালাউদ্দিনের স্ত্রী সুমি বলেন, ‘‘আমার স্বামী ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। বোমার শব্দে জানালার কাছে গেলে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। পরিকল্পিতভাবে এই হামলা হয়েছে।’’ তিনি জীবনের নিরাপত্তার পাশাপাশি দোষীদের শাস্তি চান।
উল্টো অভিযোগ করেছেন চম্পা আক্তার নামের এক নারী। তিনি বলেন, ‘‘সালাউদ্দিন বেপারী, নাসির বেপারী, ইব্রাহিম বেপারীরা আমাদের বাড়িঘরে বোমা হামলা করেছে। তারা আমাদের হুমকি দিয়েছে, বাড়িঘরে থাকতে দেবে না। আমরা এলাকায় শান্তি চাই।’’ যারা হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
তাজুল ছৈয়ালের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘরটি তালাবদ্ধ ছিল।
ঢাকা/আকাশ/বকুল