সিদ্ধিরগঞ্জে জুলাই আন্দোলনে হত্যাসহ ১০ মামলার,আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি ইউসুফ মোল্লা ওরফে হাতিয়ার স্বপন (৩৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ইউসুফ মোল্লা ওরফে হাতিয়ার স্বপন নিমাইকাশারী বাগমারা এলাকার মৃত কুদ্দুছ মোল্লার ছেলে এবং নাসিক ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন বিচরণ করেছেন।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ইউসুফ মোল্লার বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যাচেষ্টা ও হত্যা মামলা রয়েছে ৪টি এবং মাদকের মামলা রয়েছে ৬টি।

শুক্রবার দিবাগত রাতে বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যা মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইউসুফ মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জ নিমাইকাশারী বাগমারার অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে আসছিল।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন অপকর্মে যুক্ত ছিলেন। বিশেষ করে ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

একটি সূত্র জানায়, ইউসুফ মোল্লা এক সময় বিএনপি ছাত্র দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে সাবেক কাউন্সিলর বাদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর তিনি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাকে বিএনপি স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেওয়া হচ্ছে, যা নিয়ে দলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মমিনুর রহমান বাবু বলেন, স্বপনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমি অবগত আছি। তিনি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কিনা সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। 

তবে ২০১৮ সালে স্বপন আমাদের সঙ্গে ছাত্রদলে সক্রিয় ছিল। পরে কিছু সময় রাজনীতি থেকে বিরত ছিল। পরবর্তীতে থানা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সময় সে আবারও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার কর্মকাণ্ড ও সম্পৃক্ততা মূল্যায়ন করেই তাকে পদ দেওয়া হয়েছে।

৩নং ওয়ার্ড বিএনপির এক প্রবীণ নেতা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার আসামি কীভাবে বিএনপি স্বেচ্ছাসেবক দলে স্থান পায়, তা আমাদের বোধগম্য নয়। 

যারা তাকে দলে প্রবেশ করিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত হওয়া উচিত এবং প্রয়োজনে বহিষ্কারসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

স্থানীয়রা মনে করছেন, ইউসুফ মোল্লার গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে রসুলবাগ এলাকায় স্বস্তি ফিরবে। তবে শুধু তাকে আটকালেই হবে না, তার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ সন ত র স ন র য়ণগঞ জ ইউস ফ ম ল ল স দ ধ রগঞ জ আওয় ম স বপন ব এনপ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ