করপোরেট কর আগামীতে অনলাইলে দিতে পারবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, “করপোরেট কর, আয়করের জন্য অ্যাপ তৈরি করা হবে। ঘরে বসে কর সম্পর্কিত সব কাজ করা যায় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।”

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হলরুমে ট্যাক্স রিপ্রেজেনটেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (টিআরএমএস) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে করদাতাদের প্রশিক্ষণ দেবে রাজস্ব বোর্ড

বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের মালামাল খালাসে এনবিআরের নতুন নির্দেশনা

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদ।বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্যাক্স লইয়্যারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট রমিজ উদ্দিন আহমেদ, ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রোকনুজ্জামান এবং ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট  এম নাসিমুল হাই।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “নতুন অ্যাপসে অনেক সময় ছুঁটাছুটিতে সময় নষ্ট হয়ে যায়, এখানে সেটা হবে না। সব কাজ ঘরে বসে শেষ করা যাবে। এটা আপনাদের জন্য একটা বিরাট সুবিধা হবে।”

তিনি বলেন, “কীভাবে ব্যাংক থেকে রিটার্ন সরসরি নিয়ে আসা যায় সেটা করবো। আমরা বলেছি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে আমরা সিস্টেমটা কানেক্ট করে দেব। তখন দেখবেন রিটার্নে সবকিছু সহজে ফিলাপ হয়ে যাবে। এতে করে ভুলভ্রান্তি কমে যাবে। সম্পদ লুকানোর কোনো সুযোগ থাকবে না। এতে সবাই সুফল পাবেন।”

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “যে সফটওয়্যারটি উদ্বোধন করা হলো তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলস্টোন।”

তিনি বলেন, “রাজস্ব খাতে সরকার ভালো কিছু করছে, এটা কেউ স্বীকার করবে না। অ্যাপসের মাধ্যমে সরকারের উপকার হবে, দ্রুত ট্যাক্স সংগ্রহ করতে পারবে।”

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানায়, করদাতার প্রতিনিধিত্ব প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করার মাধ্যমে টিআরএমএস প্ল্যাটফর্মটি কর ব্যবস্থাপনায় অধিকতর দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে। আয়কর আইনে অনুমোদিত কর প্রতিনিধিরা যেসব করদাতাদের রিটার্ন দাখিল করার জন্য করদাতা কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত তাদের সবার আয়কর রিটার্ন টিআরএমএস সফটওয়্যারটিতে নিবন্ধনের মাধ্যমে অনলাইনে দাখিল করতে পারবেন। যেকোন করদাতা কর প্রতিনিধি নিয়োগের জন্য তার নিজ নামে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল ফোনে প্রাপ্ত ওটিপি কর প্রতিনিধিকে প্রদানের মাধ্যমে অনলাইনে তার রিটার্ন দাখিলের জন্য ক্ষমতা প্রদান করতে পারবেন।

একজন আয়কর প্রতিনিধি যতজন করদাতার আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করবেন তার সবগুলো রিটার্ন সংশ্লিষ্ট কর প্রতিনিধির নামের বিপরিতে টিআরএমএস সিস্টেমে সংরক্ষিত থাকবে। কর প্রতিনিধিরা রিটার্নের তথ্যাদি যেকোন সময় সিস্টেম থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

টিআরএমএস এর মূল বৈশিষ্ট্য: আয়কর আইন অনুযায়ী অনুমোদিত সব কর প্রতিনিধিদের ডিজিটাল নিবন্ধন; করদাতা কর্তৃক তার কর প্রতিনিধিকে অনলাইন সিস্টেমে ক্ষমতা অর্পন; প্রত্যেক কর প্রতিনিধি কর্তৃক দাখিলকৃত সব আয়কর রিটার্নের তথ্য আলাদাভাবে টিআরএমএস সিস্টেমে সংরক্ষণ; কর প্রতিনিধি কর্তৃক করাদাতাদের পক্ষে ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ; এটি করদাতা এবং কর প্রতিনিধি উভয়ের জন্যই ব্যবহারকারী-বান্ধব সহজ ইন্টারফেস।

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এনব আর আয়কর র ট র ন আয়কর র এনব আর র জন য কর ত ক উদ দ ন করদ ত

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ নভেম্বরের মধ্যে করদাতাদের ই-রিটার্ন জমা দিতে বলেছে এনবিআর

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে তাঁদের ই-রিটার্ন জমা দিয়েছেন। গত আগস্টে সব করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে সব ব্যক্তি করদাতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানায় সংস্থাটি।

গত বছর নির্দিষ্ট এলাকার অধিক্ষেত্রের ব্যক্তি করদাতা, সারা দেশে ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। তাতে ১৭ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেন।

দেশে বর্তমানে ১ কোটি ১২ লাখের মতো কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাঁদের মধ্যে প্রতিবছর মাত্র ৪০ লাখ টিআইএনধারী রিটার্ন দাখিল করেন।

এনবিআর জানায়, এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে চলতি বছর ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি কর্তৃক রিটার্ন দাখিল এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক ছাড়া সব ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

চলতি ২০২৫-২৬ করবর্ষে যেসব করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন, তাঁরাও চাইলে অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। অন্যদিকে ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধনসংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে না পারলে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে আবেদন করলে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে কাগুজে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। এই সময়সীমা ৩১ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ১৫ দিন বাড়ানো হয়েছে।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করদাতার পক্ষে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিও অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা দিতে পারছেন। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতাদের ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও তাঁদের পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, ই-মেইল ইত্যাদি তথ্য দিয়ে ই-মেইল করলে ই-রিটার্নের নিবন্ধন লিংক পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতারা ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন করে সহজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। কোনো ধরনের কাগজপত্র বা দলিল আপলোড না করেই করদাতারা তাঁদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত তথ্য ই-রিটার্ন সিস্টেমে এন্ট্রি করে ঝামেলাহীনভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। ই-রিটার্ন দাখিলের পর তাৎক্ষণিকভাবে জমা স্লিপ পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আয়কর সনদও প্রিন্ট করে নিতে পারছেন করদাতারা।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ই-রিটার্ন জমা সহজ করার জন্য গত বছরের মতো এবারও করদাতাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ই-রিটার্নসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা দিতে একটি কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। আবার ওয়েবসাইটে ই-রিটার্নসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা লিখিতভাবে জানালেও তার সমাধান পাচ্ছেন করদাতারা। কোনো করদাতা সশরীর নিজ নিজ কর অঞ্চলে গিয়েও ই-রিটার্ন জমা দেওয়াসংক্রান্ত সেবা নিতে পারছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩০ নভেম্বরের মধ্যে করদাতাদের ই-রিটার্ন জমা দিতে বলেছে এনবিআর