১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মীসভা ও লিফলেট বিতরণ
Published: 17th, October 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা অন্তর্গত ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মীসভা ও বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল শহরের মন্ডলপাড়ায় ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পরে শ্লোগানে শ্লোগানে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১দফা কর্মসূচির লিফলেট ও ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ করে ভোট প্রার্থনা করেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.
মহানগর ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আল আমিন প্রধানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিরযুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাশিদা জামাল, ডা. মজিবুর রহমান।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাকিত মোস্তাকিন শিপলু, ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাসেম, সদস্য আনোয়ার হোসেন, জনি, আউয়াল হোসেন, রিপন, এমদাদ, মাসুদ রানা, অপু, জুম্মান, আকরাম, কাদির হোসেন প্রমুখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র স রহম ন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জের লুবনা ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তার নামে মামলা
জাতীয় নাগরিক পাটি (এনসিপি) নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্য সোনিয়া আক্তার লুবনা সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ভুয়া তথ্য দিয়ে ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে সরকারি তালিকায় নাম দিয়েছেন, এমন অভিযোগ যাচাইয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. জাকির হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লুবনা ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ইফতেখার হোসেন (সিনিয়র ভেরিফিকেশন অফিসার, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), সাগর (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), মেহেদী হাসান প্রিন্স (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী (এক্সিকিউটিভ মেম্বার, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), আফজালুর রহমান সায়েম (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), সাইদুর রহমান শাহিদ (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), ফাতেমা আফরিন পায়েল (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), রেজা তানভীর (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), রাকিন, শামীম রেজা খান, আলিফ (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), জাহিদ (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন)।
তাদের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে বিএসএল অফিস কমপ্লেক্স, ১১৯ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, বিল্ডিং নং-২, ৪র্থতলা, ইন্টারকন্টিনাল ঢাকা হোটেল সংলগ্ন, ঢাকা।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তার স্বামী বুলবুল সিকদার ও পুত্র রাকিবুল হাসান গত ২০২৪ সালের ফ্যাসীবাদ বিরোধী বিপ্লবে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড ১০ তলা মাদানী নগর মাদ্রাসার সামনে দিয়ে মটর সাইকেল যোগে যাওয়ার পথে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিকলীগ, আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা ও পথচারীর উপর এলোপাথারী গুলি বর্ষন শুরু করে। এবং বাদীর স্বামী ও তার পুত্র সন্তানের উপর লাঠি, সোটা, রড, ইট, চাপাতি দিয়ে হামলা করলে বাদীর স্বামী ও তার সন্তান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
হামলায় বাদীর স্বামীর হাটুর নীচে পায়ের অংশ থেতলে যায় এবং বাদীর ছেলের পা ভেঙ্গে রগ ছিড়ে যায়। ৫ আগস্ট ফ্যাসীবাদের পতন ঘটে এবং উক্ত ফ্যাসীবাদের পতনের প্রেক্ষিতে জুলাই এর বর্ষা বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের মূল্যায়ন এর জন্য জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠিত হয়।
বাদী তার স্বামীকে নিয়ে জুলাই ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে চলতি বছরের ২০ মার্চ সকাল ১১টায় গেলে ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ভেরিফিকেশন অফিসার ১নং আসামী ইফতেখার হোসেন বাদীর সম্মুখে তার স্বামী ভিকটিম বুলবুল সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে, আপনি কিভাবে জুলাই-এ আহত হলেন এবং আপনাকেকে পাঠাইছে।
তখন বাদী এবং তার স্বামী ১নং আসামীকে আহত হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন এবং বলেন যে, ইতোপূর্বে তার আহত ছেলে রাকিবুল হাসান (জুলাই যোদ্ধা) এর ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লক্ষ টাকার চেক উত্তোলন করে নিয়ে গেছে। বাদীর স্বামী বুলবুল সিকদারের জুলাই যোদ্ধা গেজেট নম্বর ২৩৮৭ এবং মেডিক্যাল কেস আইডি ৩২৫০৬ এর কাগজ প্রদর্শন করলে ১নং আসামী, ২ ও ৩নং আসামীকে ডেকে নিয়ে আসে।
উক্ত ২ ও ৩নং আসামী ভিকটিমকে বাদীর নিকট হইতে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে যায় এবং বাদীকে অপেক্ষা করতে বলে। প্রায় ৩ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরেও ভিকটিম না আসলে বাদী তার স্বামীর মোবাইলে ফোন দেয়। কিন্তু ফোন ২নং আসামী সাগর রিসিভ করে। বাদী তার স্বামীর খবর জানতে চাইলে আসামী সাগর বলে "ভুয়া জুলাই যোদ্ধা ধরেছি। এখন তার জামাই আদর চলতেছে"।
বাদীকে বলে আপনি কোথায়, বাদী বলে আমি অফিসেই আছি। তখন সাগর বাদীকে ভেতরে যেতে বলে। পরবর্তীতে বাদী ভিতরে গিয়ে আসামী সাগর, সায়েম, ইফতেখার ও আসামী সাগরের স্ত্রীকে দেখতে পায়। তারা বাদীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় এবং বাদীর ব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে যায়।
এরপর বাদীকে জিজ্ঞাসা করা হয় আপনারা আফরিন (৩নং সাক্ষী) কে কিভাবে চিনেন, বাদী জানায় যে, তার ছেলে রাকিবুল হাসান (জুলাই যোদ্ধা)কে ডিসি অফিসে তার ছেলেকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে দিলশাদ আফরিনের সংগে পরিচয় হয়।
বাদীকে আসামী সাগর জিজ্ঞাসা করে আপনারা কি আফরিন (মামলার ৩নং সাক্ষী)কে টাকা পয়সা দিয়েছেন কিনা? বাদী উত্তরে দিলশাদ আফরিন কে কোন টাকা দেয় নাই বললে আসামীরা বাদীকে মারধর করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য।
তখন আসামী সাগরের সাথে উপস্থিত ১৩নং আসামী জাহিদ বাদীকে গণ ধোলাই দেওয়ার জন্য উস্কানী দেয়। এবং পুলিশ দিয়ে এ্যারেস্ট করার ভয় দেখায়, এরপর আসামী সাগরের সাথে উপস্থিত জাহিদ বাদীর মুখ চেপে ধরে এবং বাদীকে, চড়, থাপ্পর মেরে শারীরিক নির্যাতন করে। পরে আসামী ইফতেখার, সাগর বাদীকে চাপ দেয় দিলশাদ আফরিনকে ফোন দিয়ে আসার জন্য।
এতে বাদী রাজী না হলে আসামী সাবরিনা শ্রাবন্তী বিভিন্ন ভাবে মারধর করে। আসামীদের মারধরের কারনে বাদী ফোন করে ইতোমধ্যে ইফতার এর সময় অতিক্রান্ত হলে বাদীর স্বামীকে আবার আলাদা রুমে নিয়া যায় এবং প্রায় ৩ ঘন্টা বাদীর স্বামীকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে।
মামলার ৩নং সাক্ষী দিলশাদ আফরিন রাত প্রায় সাড়ে ১০ কি ১১টায় জুলাই ফাউন্ডেশন অর্থাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামীরা তাকে বিভিন্নভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে এবং পুলিশে সোপর্দ করার ভয় দেখিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি প্রদানে চাপ প্রয়োগ করে।
আসামীদের এইরূপ অত্যাচার ও ভয়ভীতি প্রদর্শনে দিলশাদ আফরিন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় বাদীর স্বামী বুলবুল সিকদার। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে দিলশাদ আফরিন বুলবুল সিকদারকে পুনরায় ঘটনাস্থলে নিয়ে আসলে দিলশাদ আফরিনের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি প্রদানে বাধ্য করে আসামিরা।
বাদী তার স্বামী বুলবুল সিকদারের কাছ থেকে জানতে পারে যে, তার স্বামী বুলবুল শিকদারকে জুলাই ফাউন্ডেশন এ কর্মরত আসামী সায়েম ও সাগর অফিসের একটি রুমে নিয়ে যায় এবং তাকে একটা চেয়ারে বসায় এবং বলে এটা আমাদের টর্চার সেল, শেখ হাসিনার আয়নাঘর এর মতো বড় আয়না ঘর।
তুই স্বীকার কর তুই ভূয়া জুলাই যোদ্ধা এবং তোকে কে পাঠিয়েছে। তখন বাদীর স্বামী বুলবুল শিকদার দিলশাদ আফরিনের নাম উল্লেখ করলে আসামীরা প্রায় ৩ ঘন্টা বুলবুল শিকদারকে শারীরিক নির্যাতন করে।
আসামী সাগর ও সায়েম হত্যার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভাবে মাথায় এলোপাথারীভাবে মারধর করে।
পরে সাগর ও ইফতেখারের সাথে আসামি প্রিন্স যোগ দেয়। পরদিন ২১ মার্চ ৬টায় একজন এডভোকেট হাজির হয়ে স্বীকারোক্তি দেয়ার জন্য বললে বাদী ও বাদীর স্বামী ভিকটিম বুলবুল শিকদার এবং সাক্ষীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তী নেয়।
আসামি এমন আচরণে বাদী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এবং বাদীর স্বামী আসামিদের গুরুত্বর আঘাতের কারণে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। বাদী ও তার স্বামী কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর মামলা দায়ের করেন।