দাবানলে এখনও দাউ দাউ করে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস। ভয়াবহ দাবানলে এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ আছেন আরও অন্তত ১৩ জন। 

এদিকে পাঁচদিনের ভয়াবহ তাণ্ডবের পর দাবানল ব্রিটেন উডদস এবং সান ফার্নান্দো ভ্যালির দিকে নতুন করে মোড় নিয়েছে। পালিসেডস, ইটন, কেনেথ, লিডিয়া, হার্স্ট এবং আর্চারের অনেক এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এর মধ্যে প্যালিসেইডসে দাবানল আরও এক হাজার একর এলাকায় ছড়িয়েছে।

আজ সোমবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস দাবানলে ২৪ জনের মধ্যে ১৬ জন ইটন ফায়ার জোন, আর ৮ জন প্যালেসাইড এলাকায় মারা যান। নিখোঁজ আছেন আরও অন্তত ১৩ জন। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ১২ হাজারের বেশি অবকাঠামো। এ ছাড়া ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। 

গত মঙ্গলবার থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের বিভিন্ন জায়গায় ছয়টি আলাদা দাবানল জ্বলে ওঠে। আজ সোমবার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সেখানে ১১০ কিলোমিটার গতিতে ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে। এতে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় প্যালিসেডস দাবানলটি আরও ১ হাজার একর জায়গাজুড়ে ছড়িয়েছে। এতে নতুন করে পুড়েছে আরও বাড়িঘর। তীব্রতা বাড়ার আগে প্যালিসেডস এবং ইটন দাবানলের বেশ কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণে এনেছিলেন দমকলকর্মীরা। কিন্তু ঝোড়ো বাতাসের কারণে হঠাৎ করে আগুন আবারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে শুরু করে।

স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা টড হপকিন্স এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, প্যালিসেডস দাবানলের ১১ শতাংশ তারা আটকাতে পেরেছেন। এই দাবানলে পুড়েছে ২২ হাজার একর জায়গা। তবে ভয়ের বিষয় হলো, দাবানলটি ৪০৫ ফ্রি ওয়ে নামের একটি মহাসড়কের কাছে পৌঁছে গেছে।

দাবানলের কারণে লস অ্যাঞ্জেলেসের ১ লাখ ৫৩ হাজার বাসিন্দাকে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ৫৭ হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হতে পারে বলে সতর্কতা দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি ১ লাখ ৬৬ হাজার বাসিন্দাকে আগাম সতর্কতা দিয়ে বলা হয়েছে, যে কোনো সময় সরে যাওয়ার নির্দেশনা আসতে পারে। 

লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৪০টি উদ্ধারকারী দল ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে তল্লাশি চালানো শুরু করেছে। তাদের সঙ্গে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কুকুরও রয়েছে। উদ্ধারকারী দলের সদস্য ও কুকুর মরদেহের খোঁজ করবে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নেতানিয়াহু অঞ্চলজুড়ে আগুন লাগাতে চাইছেন: ইরানের প্রেসিডেন্টকে এরদোয়ান

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পুরো মধ্যপ্রাচ্যে আগুন লাগাতে চাইছেন বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, নেতানিয়াহু ইরানে হামলা চালিয়ে পারমাণবিক আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন। গতকাল শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে এক ফোনালাপে এরদোয়ান এ কথাগুলো বলেছেন।

এরদোয়ানের দপ্তরের দেওয়া এক বিবৃতি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানি প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান বলেছেন, গাজায় হওয়া জাতিগত হত্যার ঘটনা থেকে বিশ্বের দৃষ্টি সরাতে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

ইরানি প্রেসিডেন্ট ছাড়াও সৌদি আরব, পাকিস্তান, জর্ডান ও মিসরের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও কথা বলেছেন এরদোয়ান। ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি।

শনিবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান সতর্ক করে বলেন, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলই এখন এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তুরস্ক সরকারের যোগাযোগবিষয়ক দপ্তরের বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

দপ্তরের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, এরদোয়ান মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন। সিসিকে এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েলের হামলা গভীরভাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করেছে। আইনের তোয়াক্কা না করার যে মনোভাব নেতানিয়াহুর মধ্যে দেখা গেছে তা বিশ্বের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকির।

এরদোয়ান আরও সতর্ক করেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ