আইনশৃঙ্খলার এই পরিস্থিতিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: আনিসুল
Published: 16th, August 2025 GMT
যেনতেন নয়, জাতীয় পার্টি দেশে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় জানিয়ে দলটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, “দেশে আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি এই অবস্থায় কোনভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। আর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে গণতন্ত্রও ফিরবে না।”
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, নির্বাহী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো.
আরো পড়ুন:
জিএম কাদেরকে কাজী ফিরোজ: দল এরশাদের, আপনি বের করে দেওয়ার কে?
জাপাকে তিন কাজের পরামর্শ দিলেন জেপি মহাসচিব শেখ শহীদ
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল। আমরাও নির্বাচন চাই কিন্তু নির্বাচনের পরিবেশ নেই। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। নির্বাচনের আগে যেমন রাজনৈতিক ঐক্যমত জরুরি তেমনি জরুরি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতি সাধন।”
“এখনো দেশে মব সন্ত্রাস চলছে। প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। সাংবাদিকরাও রেহাই পাচ্ছে না। এই অবস্থায় দেশে কোনভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।”
নির্বাচিত পার্লামেন্ট ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয় জানিয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “সরকার সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, আমরাও সংস্কারের পক্ষে, কারণ পল্লীবন্ধু এরশাদই এদেশের শ্রেষ্ঠ সংস্কারক।কিন্তু সংস্কার করতে হলে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা দরকার। এখন সেই সমঝোতা নেই। তাছাড়া নির্বাচিত পার্লামেন্ট ছাড়া সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা যায় না।”
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিচার দাবি করে ব্যারিস্টার আনিস বলেন, “আমরাও বিচারপতি খায়রুল হকের বিচার চাই। কারণ তিনি ওপেন কোর্টে দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বহাল রাখার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি তার রায় নিজে পরিবর্তন করেছেন। সেজন্য অবশ্যই তার বিচার হওয়া উচিত। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তার নামে হত্যা মামলা দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “অবশ্যই সরকারকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। কোনভাবে যেন একতরফা বিচার না হয়।”
জাতীয় পার্টিতে সংস্কার করা হচ্ছে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হচ্ছে জানিয়ে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, “৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর দেশের রাজনীতিতেও পরিবর্তন এসেছে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা জাতীয় পার্টিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছি। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে প্রায় দেড় হাজার মানুষ জীবন দিয়েছেন। তাদের জীবন আমরা বৃথা যেতে দেব না। আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব। যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। দেশের সব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব। প্রতিষ্ঠিত করব গণতন্ত্র। তবে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার আগে নিজের দলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব এসেছে।”
“এখন থেকে জাতীয় পার্টি গণতান্ত্রিক উপায়ে যৌথ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হবে। আমরা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বিতর্কিত ধারা বাদ দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের কমিটির পাশাপাশি আমরা নির্বাচন কমিশনের সেই গঠনতন্ত্র জমা দিয়েছি।”
দল ছেড়ে যাওয়া নেতাদের ফিরিয়ে এনে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করা হচ্ছে জানিয়ে দলটির এই শীর্ষনেতা বলেন, “যারা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন আমরা সবাইকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। সবাইকে নিয়ে একটি শক্তিশালী জাতীয় পার্টি গড়বে। সবাইকে নিয়েই আমরা পথ চলতে চাই।”
এ সময় দলের সিনিয়র নেতা জসিম উদ্দিন ভুইয়া, সরদার শাহ জাহান, হারুন আর রশিদ, নজরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম মিলন, ইয়াহিয়া চৌধুরী মো. ইয়াকুব হোসেন, শেখ আলমগীর হোসেন, নীগার সুলতানা রানী, মো. বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, নাসির উদ্দিন সরকার, গোলাম মোস্তফা, হাফেজ মাহমুদুর রহমান, সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, শারমিন পারভীন লিজা, মিজানুর রহমান দুলাল, তাসলিমা আকবর রুনা, শারমিন আকতার আবুল কালাম আজাদ, এম হাসেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম ম গণতন ত র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা এক মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সচিবালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকেই সচিবালয় এলাকায় মোতায়েন আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য। বিভিন্ন স্থানে বাড়তি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সেখানে তল্লাশি এবং পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে।
সচিবালয়ের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী সকাল ৯টার মধ্যেই দপ্তরে পৌঁছেছেন। অনেকে জানিয়েছেন, আজ একটু বাড়তি শঙ্কা নিয়ে কর্মস্থলে আসতে হয়েছে।
সচিবালয়ের একটি দপ্তরের উপ-সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, এমন পরিস্থিতিতে কিছুটা চাপ তো থাকেই। তবে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা চোখে পড়ার মতো। তাই, আতঙ্কের কিছু নেই বলেই মনে করি। দর্শনার্থী প্রবেশের বিষয়ে থাকতে পারে কড়াকড়ি।
সচিবালয়ের ভেতরে দায়িত্ব পালনরত পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, জনগণের নিরাপত্তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নাশকতা ঠেকাতে আমরা পূর্ণ সতর্ক অবস্থানে আছি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। রবিবার বিভিন্ন অপরাধে জড়িত দুই শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কর্মসূচি পালন করতে আসা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১০ নেতাকর্মীও আছেন।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপারেশনস) এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, রাজধানীতে কোনো ধরনের অস্থিরতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা আমরা হতে দেব না। নাগরিকদের সহযোগিতা অপরিহার্য। কেউ সন্দেহজনক কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাবেন।
সচিবালয়ের বাইরের রাস্তায় মোতায়েন রয়েছে র্যাব, এসএমপি ও স্পেশাল ব্র্যাঞ্চের সদস্যরা। গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে আছে মোবাইল টহল ও কুইক রেসপন্স টিম।
সচিবালয়ে আসা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কবির হোসেন বলেছেন, রায় যা-ই হোক, আমরা চাই, যেন অস্থিরতা না বাড়ে। অফিসের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় থাকুক, এইটাই সবার প্রত্যাশা।
রায়কে ঘিরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ঢাকা/এএএম/রফিক