বাংলাদেশকে আবারও একমাত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বিএনপির এই নেতা বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসনে দলীয় নিয়োগের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হচ্ছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংগ্রামের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। যেখানে আইনের শাসন থাকবে এবং ভয়-ভীতির বাইরে মানুষ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারবে।

আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের অমর কীর্তিগাথা স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দ, ঢাকা কলেজ এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

রিজভী বলেন, যে আত্মত্যাগের বিনিময়ে নতুন প্রজন্ম রক্ত দিয়েছে, সেই রক্তের দাম রাখতে হবে। পাঁচ বছরের শিশু থেকে শুরু করে অসংখ্য শিক্ষার্থী জুলাই–আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের মিছিলে প্রাণ দিয়েছে। যে সময় সন্তানেরা বাবা-মায়ের কোলে থাকার কথা, হাতে বই আর টিফিন নিয়ে থাকার কথা, সেই সময়ে তারা বুক চিতিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে। তাই প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব।

তবে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে এখনো মিথ্যা মামলা, চাঁদাবাজির অভিযোগ ও দমননীতি চলছে; সরকারি দপ্তর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ এবং চাকরির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক আনুগত্যকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।

দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং ন্যায়বিচারের অভাব নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন রিজভী। তিনি বলেন, দেশের অসহায় মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, আর রাস্তায় রাহাজানি-সন্ত্রাস যেন নিত্যদিনের চিত্র হয়ে উঠেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি তাঁর কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বলেছেন—রোকন না হলে চাকরি থাকবে না। রিজভী প্রশ্ন তোলেন—এ জন্য কি তাহলে মুগ্ধ, আবু সাঈদরা শেখ হাসিনার পুলিশের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল?

২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮ সালের রাতের নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের ‘ডামি নির্বাচন’ গণতন্ত্রকে কলঙ্কিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন রিজভী।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা বছরের পর বছর গণতন্ত্রের আন্দোলনকে দমন করতে গণমাধ্যম, বুদ্ধিজীবী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করেছেন। আন্দোলনকারীদের ‘জঙ্গি’ ও ‘অগ্নিসন্ত্রাসী’ বলে চিত্রিত করা হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী ও গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর। অথচ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁকে (শেখ হাসিনা) বলা হয়েছে ‘ফাইটার অব ডেমোক্রেসি’, ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’। অন্যদিকে শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবার ও ঘনিষ্ঠরা দেশের ব্যাংক খালি করে বিদেশে অর্থ পাচার করেছে।

আরও পড়ুননির্বাচন নিয়ে যারা শঙ্কা প্রকাশ করছে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়: সালাহউদ্দিন আহমদ২ ঘণ্টা আগে

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। এ ছাড়া বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী, ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের এজিএস অধ্যাপক সৈয়দ মাজহারুল হক সোহাগসহ গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের স্বজনেরা আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দের পক্ষ থেকে গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের স্বজনদের উপহার বিতরণ করা হয়।

আরও পড়ুনধর্মের নামে আরেকটা ফ্যাসিস্ট কড়া নাড়বে দরজায়, এটা হতে পারে না: রিজভী১৭ জুলাই ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণতন ত র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

বৈরী আবহাওয়ায়ও উৎসবের আমেজ, এক ঘণ্টায় ১২৭ প্রতিমা বিসর্জন

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে সকাল থেকে বৃষ্টি, উত্তাল সাগর, গর্জন তোলা ঢেউ—এসব উপেক্ষা করেই কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আজ বৃহস্পতিবার প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশে। বিকেল চারটার দিকে লাবণী পয়েন্টের বিজয়া মঞ্চসংলগ্ন এক বর্গকিলোমিটারজুড়ে প্রতিমা ঘিরে ভক্তদের আনন্দ-উল্লাস, সিঁদুরখেলা ও শেষ মুহূর্তের প্রার্থনা চলছিল। লাখো পর্যটকও যোগ দিয়েছিলেন এ উৎসবে।

বিকেল পাঁচটায় মন্ত্রপাঠের পর শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। মাত্র এক ঘণ্টায় একে একে ১২৭ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এ সময় ভক্তদের চোখে জল, আবার সাগরতটে ঢাকঢোল বাজিয়ে আনন্দ-উল্লাসও ছিল চোখে পড়ার মতো। দুপুরে প্রতিমা নিয়ে শহরের বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। লাবণী সৈকতে পৌঁছালে কানায় কানায় ভরে যায় সৈকত।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শঙ্কর পাল জানান, এ বছর জেলার ৩২১টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে সৈকতে ১২৭ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বাকি প্রতিমা চকরিয়ার মাতামুহুরী নদী, কুতুবদিয়া ও টেকনাফ সৈকতে বিসর্জন দেওয়া হয়।

বৈরী আবহাওয়া ও বিপুল মানুষের ভিড় সামলাতে সকাল থেকে সেনাবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি, পুলিশ, পর্যটন পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী মোতায়েন ছিল। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতও মাঠে সক্রিয় ছিল। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারিতে পুরো অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।

প্রতিমা বিসর্জন উৎসব নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল। আজ দুপুরে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে তল্লাশি চালান সেনা সদস্যরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মনোযোগ জুলাই সনদে, আছে নির্বাচনী ঐক্যের চিন্তাও
  • সক্ষমতাহীন ও নামসর্বস্ব সংস্থাগুলো বাদ দিন
  • বৈরী আবহাওয়ায়ও উৎসবের আমেজ, এক ঘণ্টায় ১২৭ প্রতিমা বিসর্জন
  • অনীষাদের পূজার আনন্দ বাড়িয়ে দিলেন প্রধান উপদেষ্টার সহকারী
  • এমন মানুষও আছে, যারা বলছে ৫ বছর থাকুন, ১০ বছর থাকুন, ৫০ বছর থাকুন
  • চার দিন পর স্বাভাবিক যান চলাচল, জনজীবনে স্বস্তি
  • পূজামণ্ডপের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জানতে ও ব্যবস্থা নিতে ‘শারদীয় সুরক্ষা অ্যাপ’ চালু এনটিএমসির
  • দুর্গাপূজা যাতে শান্তিপূর্ণ না হতে পারে, সে জন্যই খাগড়াছড়ির ঘটনা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • স্বৈরতন্ত্র উত্থানের দায় আসলে কাদের
  • পিআরের নামে জামায়াত ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে: কায়সার কামাল