জুলাই স্মরণে জাবিতে অনুষ্ঠিত হলো ‘লাল সন্ধ্যা’
Published: 16th, January 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) রেড জুলাইয়ের ও জাস্টিস ফর জুলাই-এর আয়োজনে জুলাই স্মরণে “লাল সন্ধ্যা” শীর্ষক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ‘জুলাই স্মরণে লাল সন্ধ্যা’ শিরোনামে রেড জুলাই এবং জাস্টিস ফর জুলাইয়ের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ‘কল ফ্রম প্যারাডাইজ, জাহাঙ্গীরনগর টু ঢাকা’ শীর্ষক একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া সংগীত পরিবেশনে অংশ নেয় ইকরা শিল্পীগোষ্ঠী এবং ‘পাপেট বিপ্লব ও পরবর্তী বাস্তবতা’ শীর্ষক নাটক প্রদর্শন করেছে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার-টি.
এ সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু জুলাই আন্দোলন নয়, বরং বাংলাদেশের সব গণআন্দোলনের অগ্রসৈনিক। যুগের পর যুগ যা আমরা করতে পারিনি, আমাদের ছোট ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের ছাত্রআন্দোলনের মাধ্যমে তা করে দেখিয়েছে। এ ধরনের মহৎ আন্দোলন পৃথিবীতে বিরল।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শহীদ ও আহতদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো আপোস করার সুযোগ নেই। যাদের হাতে এই আন্দোলনের রক্ত, যারা অসংখ্য নিরপরাধ মানুষকে গুম, খুন, নির্যাতন করেছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সেই দোসরদের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তাদের বিচারের আওতায় আনতে আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই জেনারেশনের পরবর্তী যেকোনো জেনারেশনেও আওয়ামী লীগকে কেউ ক্ষমা করবে না।”
অনুষ্ঠানে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এর মাটি, ইট আর শিক্ষার্থীদের হৃদয় রক্তের মতোই লাল। প্রতিটি দশকে আমরা রক্ত দিয়ে নতুন দশকের আয়ু কিনেছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আজকের এই অনুষ্ঠান আমাদের ঐক্যের শক্তি স্মরণ করিয়ে দেয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমরা পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে জাকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করেছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোকে আমরা আহ্বান জানাই, তারা যেন জাকসু নির্বাচনকে সুষ্ঠু, সুন্দর এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে। এ প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা আমাদের দায়িত্ব। জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষা আজ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে আরো শক্তিশালী করার পথে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। তবে, এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, যেগুলো মোকাবিলা করতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অপরিহার্য।”
শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন এই আয়োজন সফল করার জন্য রেড জুলাই, জাস্টিস ফর জুলাইসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, পিআইবি-এর পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
ঢাকা/আহসান/ইমন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে। এপ্রিল–জুন প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৫৪ পয়সা। গত বছরের একই সময় যা ছিল ১ টাকা ২৫ পয়সা।
এ ছাড়া বছরের প্রথম ছয় মাসেও ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে। বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ৫৬ পয়সা। আগের বছর যা ছিল ২ টাকা ৬২ পয়সা, অর্থাৎ বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মূলত ব্যাংকের বিনিয়োগ ও সুদ আয় বৃদ্ধির কারণে ইপিএস বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক ঘোষণায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি নিট নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ২৪ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৩০ টাকা ৯৯ পয়সা। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আমানত সংগ্রহ ও ব্যাংকঋণ বৃদ্ধির কারণে নগদ প্রবাহ বেড়েছে। তবে আগের বছরের তুলনায় ঋণ বিতরণে কিছুটা ধীরগতি দেখা গেছে।
অন্যদিকে ৩০ জুন ২০২৫ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদের মূল্য (এনএভি) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ টাকা ৬০ পয়সা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর যা ছিল ৩৯ টাকা ৩৮ পয়সা। নিট মুনাফা ও সরকারি সিকিউরিটিজের পুনর্মূল্যায়নের ফলে এ বৃদ্ধি হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
২০২৪ সালের জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও ১২ দশমিক ৫ শতাংশ স্টক। ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংক সমন্বিতভাবে আগের বছরের তুলনায় ৭৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। ফলে তাদের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা (এনপিএটি) হয়েছে ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা, ২০২৩ সালে যা ছিল ৮২৮ কোটি টাকা। একক ভিত্তিতে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের ৭৩০ কোটি টাকার তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৬ শতাংশ।