টানা তৃতীয় দিন বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর, আগুন
Published: 9th, February 2025 GMT
দেশের আরও কয়েকটি জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘরবাড়ি ও দলীয় অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। মধ্যরাতে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এসব ঘটনা গতকাল শনিবার তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা পৌর শহরের চৌরাস্তায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল সকালে এক্সক্যাভেটর দিয়ে ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
সিলেটের ওসমানীনগরের বুরুঙ্গা গ্রামে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল মতিন চৌধুরী লুকুর বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার মধ্যরাতে দুষ্কৃতকারীরা বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন স্বজন। ওই সময় বাড়ির কেয়ারটেকার ও পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে ছিলেন। খবর পেয়ে ওসমানীনগর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুনে ঘরের টিনের ক্ষতি ছাড়াও বিভিন্ন আসবাব ও কাপড় পুড়ে যায়। ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ওসমানীনগর ফায়ার সার্ভিসের দলনেতা সুব্রত সরকার পঙ্কজ।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গভীর রাতে এক্সক্যাভেটর দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ভেঙে দেওয়া হয়েছে মনিরামপুর এলাকায় অবস্থিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও প্রতিকৃতি। এ ছাড়া শক্তিপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার সড়কের নামফলকসহ উপজেলা সদরের কয়েকটি সড়কের নামফলক ভেঙে ফেলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাত ১২টার পর এসব ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা হাতুড়ি ও রড দিয়ে শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। এক পর্যায়ে এক্সক্যাভেটর নিয়ে একটি একতলা এবং আরেকটি টিনশেড ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় জাতীয় পার্টির অফিসে লুটপাট চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। গত শুক্রবার রাতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ভবনে থাকা কার্যালয়টিতে লুটের ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা অফিসের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে আসবাব, কম্পিউটার ও এসি খুলে নিয়ে যায়। এ ছাড়া কালো রং দিয়ে অফিসের সাইনবোর্ড মুছে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ভাণ্ডারিয়া গেলে নিয়মিত ওই অফিসে বসতেন এবং দলীয় সভা-সমাবেশ করতেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫