নির্বাচন নিয়ে যারা শঙ্কা প্রকাশ করছে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়: সালাহউদ্দিন আহমদ
Published: 16th, August 2025 GMT
যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিয়ে নির্বাচন বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেছেন, ‘তারা বাংলাদেশের মানুষের পক্ষের শক্তি নয়। তারা হয়তো কোনো না কোনো কারণে নিজের কথাগুলো ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছে, যাতে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা যায় অথবা বানচাল করা যায় অথবা নির্বাচন অনুষ্ঠান না হোক, সেটা চায়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ।’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে যুবদল আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সুস্থতা কামনায় এই দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য সংকল্পবদ্ধ। যারা এর বিপক্ষে বক্তব্য দেবে, কুযুক্তি উত্থাপন করে গণতন্ত্রের যাত্রাপথকে কণ্টাকাকীর্ণ করতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ রুখে দাঁড়াবে। তাঁদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশের জনগণ ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যেকোনো বাধাকে অতিক্রম করতে সংকল্পবদ্ধ।
রাজনৈতিক দলগুলোকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মতো নির্বাচন বিষয়েও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আপনারা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে, একই রকম ঐক্য নিয়ে আসুন আগামী নির্বাচনের জন্য। আমরা যেন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারি, সেইভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকি। আলাপ-আলোচনা করি ও গণতান্ত্রিক উত্তরণকে সহজ করি।’
যে দেশে একজন খালেদা জিয়া আছেন, সেই দেশ কখনো পথ হারাবে না উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া একটি নাম, একটি ইতিহাস। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তিনি দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে বন্দিত্ব বরণ করেছেন। জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবরণের পর স্বৈরাচারী সামরিক সরকারের সময়ে দীর্ঘ ৯ বছরের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে তিনি আপসহীন দেশনেত্রী উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। স্বৈরাচারকে হটিয়েছেন, দেশে পুনর্বার গণতন্ত্র নির্মাণ করেছেন এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছেন। জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে প্রবর্তন করেছেন। এভাবে তিনি জীবনের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে করতে আজও দেশের মানুষের জন্য আলোর দিশারি হয়ে বেঁচে আছেন।’
আরও পড়ুনফ্যাসিবাদের জায়গায় তারেক রহমান গণতন্ত্রের সূচনা করবেন: নজরুল ইসলাম খান১৫ আগস্ট ২০২৫একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জাতি অপেক্ষমাণ উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গণতন্ত্রকে যদি আমরা বিনির্মাণ করতে চাই অত্যন্ত শক্তিশালী হিসেবে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই সাম্যের ভিত্তিতে, তাহলে এই গণতন্ত্রের জন্য জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই জাতীয় ঐক্যকে শক্তিতে পরিণত করতে হবে।’
যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল কবির, মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব সাজ্জাদুল মিরাজ, মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়নসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
আরও পড়ুনকেউ যেন বলতে না পারে, আমরা আওয়ামী লীগের মতো জোর করে নিয়ে গেছি: ভোট নিয়ে মির্জা ফখরুল১২ আগস্ট ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ ব গণত ন ত র ক গণতন ত র র ব এনপ র স অন ষ ঠ ন র জন য কর ছ ন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
জি এম কাদের ছাড়া অন্য কারও লাঙ্গল পাওয়ার সুযোগ নেই: শামীম হায়দার পাটোয়ারী
জি এম কাদের ছাড়া আইনত অন্য কারও জাতীয় পার্টির (জাপা) লাঙ্গল প্রতীক পাওয়ার সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাপার মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আইনি ব্যাখ্যায় দেখিয়েছেন, লাঙ্গল অন্য কারও নেওয়ার সুযোগ নেই।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। শামীম হায়দার বলেন, তাঁরা আশা করছেন, ইসি আইনের সঠিক ব্যাখ্যা করে ন্যায়বিচার করবে।
৯ আগস্ট রাজধানীর গুলশানের একটি মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির ‘দশম কাউন্সিল’ করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব মুজিবুল হক। ওই সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে দলের চেয়ারম্যান এবং রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব করা হয়। পরদিন বিষয়টি ইসিকে লিখিতভাবে জানানো হয়। এমন প্রেক্ষাপটে আজ ইসির সঙ্গে বৈঠক করে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশের প্রতিনিধিদল।
জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, জি এম কাদেরের বিরোধীদের সম্মেলন বৈধ নয় দাবি করে শামীম হায়দার পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, কিছু লোক সমাবেশ করলেই সেটা বৈধ কাউন্সিল হতে পারে না। এর আগেও আরেকটি গ্রুপ দশম সম্মেলন করেছিল। ওই সম্মেলনে থাকা তিনজন এবারও সম্মেলন করেছেন, তাঁরা দুবার দশম সম্মেলন করেছেন। জি এম কাদের ছাড়া অন্য কারও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ দলের গঠনতন্ত্র ও আইনে নেই। এরশাদের লাঙ্গল জি এম কাদেরের কাছেই আছে এবং থাকবে।
শামীম হায়দার বলেন, তাঁরা একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান। তাঁরা আশা করেন, নির্বাচন কমিশন তার নিরপেক্ষতা রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন করবে। সবার অংশগ্রহণে একটি সুন্দর ভোটের মাধ্যমে দেশে নতুন গণতন্ত্রের আলো ফুটবে। তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারকে পুরোপুরি নিরপেক্ষ মনে করেন না। তবে তাঁরা ইসিকে নিরপেক্ষ দেখতে চান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শামীম হায়দার বলেন, নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য যেসব শর্তের কথা আইনে আছে, তার কোনোটাতেই জাতীয় পার্টি পড়ে না। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার যে দাবি তোলা হচ্ছে, তা দুঃখজনক।
আরেক প্রশ্নের জবাবে শামীম হায়দার বলেন, চরমোনাই (ইসলামী আন্দোলন) বিগত সময়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী অংশ নিয়েছিল। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে অংশ নিয়ে জামায়াত নেতাদের অনেকে নির্বাচিত হয়ে এখনো আছেন।
আরও পড়ুনআনিসুল-হাওলাদাররা জাপাকে ভাঙার ষড়যন্ত্র করছেন, অভিযোগ কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজারের১৩ আগস্ট ২০২৫শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, এখানে জাতীয় পার্টিকে দোষ দেওয়ার কিছু নেই। জাতীয় পার্টি ভোটে অংশ নিয়েছিল, অন্যরাও অংশ নিয়েছিল। শুধু ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য কাউকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা যেতে পারে না। এটা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক। সব দল নিষিদ্ধ হয়ে গেলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে না। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া ভোটে সরকার গঠিত হলে, সেটা টেকসই হবে না। অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে।
আরও পড়ুননির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি চেয়ে আনিসুল-হাওলাদার কমিটির চিঠি১৩ আগস্ট ২০২৫