গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবারের নির্যাতনের প্রতীক বিভিন্ন ভবনে ব্যাপক হামলা হয়েছে। তবে তখন বড় ধরনের কোনো হামলা হয়নি বায়তুল আমান ভবনে। ছয় মাস পর কেন ভেঙে ফেলা হলো এই ভবন– এ নিয়ে ভাবছেন অনেকেই। বলা হচ্ছে, ভবনটির পাশে ওসমান পরিবারের নির্যাতনের কেন্দ্র রাইফেল ক্লাব রেখে কেন হামলা হলো আমান ভবনে? গুঞ্জন ছড়িয়েছে– শামীম ওসমান দেশের বাইরে থেকে তাঁর অনুগতদের দিয়ে এ ভবন ভাঙচুর করিয়েছেন। এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছেন তিনি।
সরকার পতনের আগেই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি এ কে এম সেলিম ওসমান, আওয়ামী লীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি এ কে এম শামীম ওসমান, সাবেক এমপি নাসিম ওসমানের (প্রয়াত) ছেলে আজমেরী ওসমান এবং শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান প্রাণ বাঁচাতে সপরিবারে নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যান। এ ছাড়া পালিয়ে যায় তাদের দোসর গত ১৬ বছর ধরে এলাকায় নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ডাকাতিসহ নানা অপকর্মে জড়িতরা।

সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জামতলায় শামীম ওসমানের বাড়ি, উত্তর চাষাঢ়ায় তাঁর পৈতৃক বাড়ি হিরা মহল, চাষাঢ়া মোড়ে বায়তুল আমান, চাষাঢ়া মোড়ে রাইফেল ক্লাবে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তবে শামীম ওসমানের দাদা খানসাহেব ওসমান আলীর ‘বায়তুল আমান’ অক্ষতই ছিল। বায়তুল আমানে লোকজন হামলা চালাতে গেলে সে সময় বাড়ির বাসিন্দারা জানান, শামীম ওসমান পরিবারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই। এ ভবনের দেয়াল সে সময়ে ভাঙা হলেও বাড়ির বাসিন্দারা পরে দেয়াল মেরামত করেন ও বারান্দার অংশে রং করেন। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলার পর ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় চাষাঢ়ায় বায়তুল আমানে হামলা চালানো হয়। ভেকু নিয়ে বাড়ির অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। সেখান থেকে হামলাকারীদের একটি অংশ উত্তর চাষাঢ়ায় গেলেও হিরা মহল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়নি।
এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল বলেন, ‘বায়তুল আমান গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর থেকেই আমরা শুনছি, এটি পাতানো খেলা। শামীম ওসমান দেশের বাইরে থেকে প্রচারণা চালাতে এই বাড়ি ভাঙিয়েছেন। অন্য দলের মধ্যেও যে তাঁর লোক আছে। বায়তুল আমান ভাঙলে তাঁর ক্ষতি কম। কারণ এটি তাঁর মালিকানাধীন বাড়ি নয়। তাঁর চাচার বাড়ি। বাড়ি ভাঙলেও এখান দিয়ে যেহেতু রাস্তা বড় করার সরকারি পরিকল্পনা রয়েছে, তাই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তিন গুণ ক্ষতিপূরণ পাওয়ারও সম্ভাবনা আছে। সব মিলিয়ে একটি বিশাল প্রচারণা পেয়ে গেছেন শামীম ওসমান। তাঁর এ ধরনের স্টান্টবাজি নতুন নয়।’ 

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোড সম্প্রসারণ করার জন্য সরকারিভাবে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল চাষাঢ়ার মোড়ে বায়তুল আমান ভবন এবং রাইফেল ক্লাব ভবন ভেঙে ফেলার বিষয়ে। বায়তুল আমানে শামীম ওসমানের সৎভাই ননী সারোয়ার ও মনি সারোয়ারের পরিবার বাস করত।
নারায়ণগঞ্জ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন বলেন, ওসমান পরিবার বিভিন্ন সময়ে প্রচার করেছে, বায়তুল আমান আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত। এসব দাবি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। ওসমান পরিবারের প্রতি নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের ক্ষোভ থেকেই বায়তুল আমানে হামলা হয়েছে। শামীম ওসমান কলকাঠি নেড়ে বায়তুল আমান গুঁড়িয়ে দিয়েছেন– এমন বক্তব্যও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। 
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির উপদেষ্টা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেন, ‘এখন বিভিন্ন খেলায় জড়িত নানা চক্র। রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য বায়তুল আমান ও রাইফেল ক্লাব অপসারণের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের, এটির বাস্তবায়ন সরকারিভাবেই এগোচ্ছিল।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নিরব রায়হান বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী কমিটির পক্ষ থেকে কেউ এই ভবন ভাঙেনি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ম ম ওসম ন র ন র য়ণগঞ জ ভবন ভ ঙ ওসম ন প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে তিন হাজার নারী-পুরুষ পেলেন বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ

আড়াইহাজার উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে তিন হাজার নারী-পুরুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে।

ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে শুক্রবার সকাল ৭টায় শুরু হয় এ মেডিকেল ক্যাম্প। কর্মসূচির আয়োজন করে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ফতেপুর ইউনিয়ন শাখা।

এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন বয়সের মানুষ সকাল থেকেই সারিবদ্ধভাবে চিকিৎসা নিতে আসেন। চোখ, চর্ম, শিশু, নারী ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রোগ অনুযায়ী দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় ওষুধ। আয়োজকদের দাবি, সাড়ে তিন হাজারের মতো মানুষ সেবা নিয়েছেন এই কর্মসূচি থেকে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক ইলিয়াছ মোল্লা। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ডা. আলী আশরাফ খান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আড়াইহাজার উপজেলা দক্ষিণের আমীর মাওলানা হাদিউল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের এইচআরডি সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল মালেক, উপজেলা বাইতুলমাল সম্পাদক ও তদারককারী প্রফেসর আজিজুল হক প্রমুখ।

কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ফতেপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ও উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মো. রাসেল মাহমুদ। 

স্থানীয়ভাবে আয়োজনটি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ইতিবাচক সাড়া দেখা গেছে। অনেকেই বলেন, এমন উদ্যোগে গ্রামের সাধারণ মানুষ বিনা খরচে চিকিৎসা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রূপগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
  • তারুণ্যের চোখে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার
  • বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন না’গঞ্জ জেলা আঞ্চলিক কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত
  • নির্বাচন আসলেই ধর্মকে ব্যবহারের চেষ্টা দেখা যায় : সালাহউদ্দিন আহমেদ
  • ফতুল্লায় গভীর রাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল, আটক ৫
  • নারীর মর্যাদা সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে সিদ্ধিরগঞ্জে মহিলাদলের উঠান বৈঠক
  • সাংবাদিক শাওনের মায়ের মৃত্যুতে বন্দর পেশাদার সাংবাদিক ফোরামের শোক
  • আজাদের নির্দেশে বিশনন্দী ইউনিয়নে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ
  • সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যকরী কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত 
  • আড়াইহাজারে তিন হাজার নারী-পুরুষ পেলেন বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ