বিএনপির সমাবেশ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আজ থেকে। ছয় জেলায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে বিএনপির ৬৪ জেলায় আট দিনের কর্মসূচি। প্রথম দিন আজ বুধবার বিকালে খুলনা, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ ও পটুয়াখালীতে বিএনপির সমাবেশ হবে। আজকের সমাবেশে এতে যোগ দেবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এরই মধ্যে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কেউ সংশ্লিষ্ট জেলায় পৌঁছে গেছেন। 

বিএনপির দপ্তর জানিয়েছে, বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) লালমনিরহাটে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, খুলনার সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ, সিরাজগঞ্জে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, সুনামগঞ্জে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী এবং পটুয়াখালীতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে সমাবেশে বক্তব্য দেবেন।

দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখাসহ নানা দাবিতে সারাদেশে এ সমাবেশ করবে বিএনপি। ১২ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ দিনে এসব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে সমাবেশের পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে সমাবেশের দিনক্ষণ ও কেন্দ্রীয় নেতারা কে কোথায় বক্তব্য দেবেন, তার তালিকা প্রকাশ করেছে।

১৭ ফেব্রুয়ারি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (যশোর), স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান (টাঙ্গাইল), সেলিমা রহমান (মাদারীপুর), আবদুল আউয়াল মিন্টু (চাঁদপুর), শামসুজ্জামান দুদু (ঠাকুরগাঁও), আবদুস সালাম (বগুড়া), আরিফুল হক চৌধুরী (মৌলভীবাজার), জহির উদ্দিন স্বপন (ভোলা)।

১৮ ফেব্রুয়ারি
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ (কক্সবাজার), ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (পাবনা), শামসুজ্জামান দুদু (পঞ্চগড়), জয়নুল আবেদিন ফারুক (কুমিল্লা দক্ষিণ), আবুল খায়ের ভুঁইয়া (ঝিনাইদহ), জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী (মানিকগঞ্জ), যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী (হবিগঞ্জ), সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স (নেত্রকোনা)।

১৯ ফেব্রুয়ারি
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (নোয়াখালী), সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল (সিলেট), দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফজলুর রহমান (কিশোরগঞ্জ), মিজানুর রহমান মিনু (কুষ্টিয়া), ফরহাদ হালিম ডোনার (শরীয়তপুর), মজিবুর রহমান সারোয়ার (পিরোজপুর), রুহুল কবির রিজভী (রাজশাহী)।

২০ ফেব্রুয়ারি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ঢাকা), আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (লক্ষ্মীপুর), সেলিমা রহমান (বরিশাল দক্ষিণ), আবদুল আউয়াল মিন্টু (ময়মনসিংহ দক্ষিণ), আসাদুজ্জামান রিপন (ফরিদপুর), চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান (চুয়াডাঙ্গা), মিজানুর রহমান মিনু (নওগাঁ), আবদুস সালাম (কুড়িগ্রাম)।

২২ ফেব্রুয়ারি
জয়নাল আবেদীন (ঝালকাঠি), আহমেদ আজম খান (চট্টগ্রাম দক্ষিণ), সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল (ময়মনসিংহ উত্তর), হারুনুর রশীদ (জয়পুহাট), মাহবুব উদ্দিন খোকন (কুমিল্লা উত্তর), আসলাম চৌধুরী (বান্দরবান), আবুল খায়ের ভুঁইয়া (রংপুর), যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ (নরসিংদী)।

২৪ ফেব্রুয়ারি
স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন (মুন্সিগঞ্জ), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বরিশাল উত্তর), ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী (নড়াইল), আহমেদ আজম খান (নাটোর), হারুনুর রশীদ (গাইবান্ধা), হাবিব উন নবী খান সোহেল (রাঙ্গামাটি), আবদুস সালাম আজাদ (মাগুরা), সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স (সৈয়দপুর)।

২৫ ফেব্রুয়ারি
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস (নারায়ণগঞ্জ), গয়েশ্বর চন্দ্র রায় (গাজীপুর), ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (চট্টগ্রাম উত্তর), বরকত উল্লাহ বুলু (বাগেরহাট), নিতাই রায়ে চৌধুরী (সাতক্ষীরা), সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল (দিনাজপুর), আমান উল্লাহ আমান (মেহেরপুর), জয়নুল আবদিন ফারুক (নীলফামারী), মনিরুল হক চৌধুরী (খাগড়াছড়ি), আবদুস সালাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ আবদ স স ল ম ব এনপ র র রহম ন আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

‘রক্ত দিয়ে যে আনন্দ পাওয়া যায়, তা আর অন্য কিছুতেই নেই’

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর আনন্দিপুর গ্রামের মামুন মিয়া (২২) ছোটবেলা থেকে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। প্রায় প্রতি মাসেই তাঁর একাধিক ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে এক সময় রক্তের জোগাড় বেশ কষ্টসাধ্যই হয়ে ওঠে। মানুষ বিনা স্বার্থে রক্ত দিতে চাইতেন না। ২০১৬ সাল থেকে পরিবারটিকে রক্তের জন্য আর কাউকে অনুরোধ করতে হচ্ছে না। মামুনের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

সম্প্রতি মামুনের মা মাজেদা বেগম অতীতের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘পোলার রক্তের লাইগ্গা মাইনষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কেউ রক্ত দিতে চাইতো না। মানুষ টাকা ভিক্ষা চায়, আর আমি মানুষের কাছে আমার পোলার জন্য রক্ত ভিক্ষা করছি। শইল্যে রক্ত না ভরলে আমার পোলা মইরা যাইতো।’

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ব্যক্তি, জরুরি বা সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার, ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া কিংবা কিডনি আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রায়ই প্রয়োজন হয় রক্তের। আত্মীয়স্বজন বা চেনাজানা কারও কাছে প্রয়োজনমাফিক রক্ত না পেয়ে অনেকেই ছুটে যান স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠনের কাছে। খবর পেয়ে স্বেচ্ছাসেবীরা দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রক্তদাতাকে খুঁজে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর মানুষের জীবন বাঁচানোর মতো মহৎ এই কাজেই তাঁদের আনন্দ বলে জানান ময়মনসিংহের ‘ব্রহ্মপুত্র ব্লাড কল্যাণ সোসাইটি’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কয়েকজন কর্মী।

শুধু রক্তদান নয়, সমাজ পরিবর্তনে নানা কাজও করে চলেছে তরুণদের নিয়ে গঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট এটি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন পায়। তবে এর দু-এক বছর আগেই সংগঠনটির কার্যক্রম শুরু হয় বলে জানান সংগঠনটির মূল পরিকল্পনাকারী মমিনুর রহমান। তাঁর বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ এলাকায়।

সম্প্রতি মমিনুর রহমান বলেন, ‘শুধু রক্তের অভাবে একটি মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে না, এই চিন্তা থেকে কাজ শুরু করি। ময়মনসিংহে রক্তদান নিয়ে কাজ করে—এমন কোনো সংগঠন ছিল না। তখন স্থানীয়ভাবে মানুষকে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করে ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর ৩৯ জনকে নিয়ে প্রথম সভা করি। পরে সেখান থেকে রক্তদানের এই সংগঠন করার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। যেহেতু ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বসে ওই সভা হয়েছিল, তাই সংগঠনটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ব্রহ্মপুত্র ব্লাড কল্যাণ সোসাইটি’। ‘আর্তের মুখে হাসি ফোটানোই হয় যদি মানবতা, তবে তার শ্রেষ্ঠ সেবক হলো প্রতিটি রক্তদাতা’, এই স্লোগান সামনে রেখে শুরু হয় এর যাত্রা।

সংগঠনটি থেকে জানানো হয়েছে, রক্তদাতা তরুণেরা বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সংগঠনটির একটি কমিটি ও ফেসবুক পেজ আছে। এর মাধ্যমে কিংবা মুঠোফোনে খবর পেয়েই রক্ত দিতে ছুটে যান তরুণেরা। তরুণদের তৎপরতায় দিন দিন সংগঠনটির পরিসর বাড়ছে। বর্তমানে এই সংগঠনের প্রায় ৫০ হাজার সদস্য আছেন, যাঁরা নিজেরা রক্তদান করেন এবং রক্তদানে অন্য তরুণদের উৎসাহিত করেন। ২০ বারের বেশি রক্ত দিয়েছেন, এমন রক্তদাতা আছেন ৮০ জন, যার ৬০ জনই শিক্ষার্থী। শুধু ময়মনসিংহ শহরেই ইতিমধ্যে ৩৫ হাজার ব্যাগ রক্ত দিয়েছেন সংগঠনটির তরুণেরা। এর মধ্যে প্রায় ২৩ হাজার ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস ২০১৮ সাল থেকে ব্রহ্মপুত্র ব্লাড কল্যাণ সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত আছেন। এ পর্যন্ত তিনি ২৬ বার রক্ত দিয়েছেন। অন্যদের উৎসাহী করতে তিনি বলেন, ‘মুমূর্ষু অবস্থায় মানুষ রক্তের কারণে মারা যাবে, এটি কখনো হতে পারে না। তাই অসুস্থ জটিল রোগীর খবর পেলেই রক্ত দিতে যাই। রক্ত দিয়ে যে আনন্দ পাওয়া যায়, তা আর অন্য কিছুতেই নেই।’

সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি আবিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সুমন রাহাত। স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত আবিদুর রহমান বলেন, ‘যাঁদের রক্তের প্রয়োজন, তাঁরা আমাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করেন। অথবা রক্তের প্রয়োজন ফেসবুকে কারও স্ট্যাটাস দেখলেই আমরা নিজে থেকে যোগাযোগ করে রক্তের ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। আমরা রক্তদানের মাধ্যমে অন্যের জীবন বাঁচিয়ে আনন্দিত হই। আমরা মানুষ বাঁচানোর এই আনন্দ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। গ্রামে, পাড়ায় মহল্লায় রক্তের জন্য মানুষ যেন না মরে, এটিই আমাদের লক্ষ্য।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বর্ষার শুরুতেই সপ্তাহব্যাপী বৃষ্টির বার্তা
  • টানা সাত দিন সারাদেশে বৃষ্টি ঝরবে
  • ‘ভয়ে’ সরকারি তালিকায় নাম না তোলা ইমরান চলে গেলেন নীরবে
  • ‘রক্ত দিয়ে যে আনন্দ পাওয়া যায়, তা আর অন্য কিছুতেই নেই’
  • কয়েকদিনের তীব্র তাপপ্রবাহের পর ময়মনসিংহে স্বস্তির বৃষ্টি
  • ময়মনসিংহে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা নিহত
  • নান্দাইলে বাস-ইজিবাইক স্ট্যান্ড দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৬
  • তাপপ্রবাহ আরও দুয়েক দিন, এর পর বৃষ্টি
  • গামছা পরে ঘুমিয়ে থাকার কারণ জানালেন সমু চৌধুরী
  • দিনাজপুর সীমান্তে গভীর রাতে আলো নিভিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ