গোপন বন্দীশালার কোন কক্ষে ছিলেন, শনাক্ত করলেন নাহিদ ও আসিফ
Published: 12th, February 2025 GMT
বর্তমান তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে গত জুলাই মাসে সাদাপোশাকের লোকজন তুলে নিয়েছিল। তুলে নেওয়ার পর তাঁদের টর্চার সেলে (নির্যাতনকেন্দ্র) রাখা হয়। আজ বুধবার সেই টর্চার সেল পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষগুলো শনাক্ত করেন তাঁরা।
প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি আজ বুধবার তাঁর ফেসবুকে দেওয়া পৃথক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বুধবার রাজধানীর তিনটি এলাকায় গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেছেন, যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত।
সুচিস্মিতা তিথি আজ তাঁর ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে একটি কক্ষের কয়েকটি ছবি দিয়েছেন। একটি ছবিতে নাহিদ ইসলাম রয়েছেন।
সুচিস্মিতা তিথি লিখেছেন, গত জুলাইয়ে সাদাপোশাকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিএফআইয়ের এই টর্চার সেলে (নির্যাতনকেন্দ্র) রাখা হয়েছিল নাহিদ ইসলামকে। আজ সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষটি শনাক্ত করেন নাহিদ। এই কক্ষের একপাশে টয়লেট (শৌচাগার) হিসেবে একটি বেসিনের মতো ছিল বলে জানান তিনি। ৫ আগস্টের পর এই সেলগুলোর মাঝের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়, দেয়াল রং করা হয়।
সুচিস্মিতা তিথি আজ তাঁর ফেসবুকে দেওয়া আরেকটি পোস্টে অপর একটি কক্ষের কয়েকটি ছবি দিয়েছেন। একটি ছবিতে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া রয়েছেন।
আরও পড়ুনবিগত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করে গেছে, গোপন বন্দীশালা পরিদর্শনের পর প্রধান উপদেষ্টা২২ মিনিট আগেসুচিস্মিতা তিথি লিখেছেন, গত জুলাইয়ে সাদাপোশাকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিএফআইয়ের এই টর্চারসেলে রাখা হয়েছিল আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। আজ সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষটি চিনতে পেরেছেন তিনি। দেয়ালের ওপরের অংশের খোপগুলোতে এগজোস্ট ফ্যান ছিল বলে জানান তিনি।
গোপন বন্দীশালা পরিদর্শনকালে নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ছাড়াও ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধী কোন বাহিনীর তা যেন দেখা না হয়: নাহিদ ইসলাম
অন্তর্বর্তী সরকার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও অন্যান্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, যে অপরাধী, তাঁকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। সে কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর যাঁরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানসহ গুমের ঘটনায় যুক্ত, তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। কোনো বাহিনীর কেউ যাতে পার পেয়ে না যায়। কারণ, তাঁরা দেখেছেন, গুমের ঘটনায় অনেক অভিযোগ এসেছে। তিনি নিজে অভিযোগ দিয়েছেন ডিজিএফআইয়ের যে অফিসাররা তাঁকে তুলে নিয়ে গেছেন, হেনস্থা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তা, র্যাবে যাঁরা ছিলেন, ডিজিএফআইয়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা গুমের ঘটনায় এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ঘটনায় নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছেন। রামপুরা, বাড্ডার ঘটনায় বিজিবিতে একজন সেনা কর্মকর্তাকে দেখা গেছে। তাঁদের কিন্তু এখনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
ফলে সরকার, ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, যে অপরাধী, তাঁকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। তিনি কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়। যাঁরা জনগণের ওপরে এই (জুলাই) হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, গুম করেছেন, নির্যাতন করেছেন এবং সরকারকে ফ্যাসিবাদী হতে সহায়তা করেছেন, ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা করেছেন, তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের কাছে কী প্রত্যাশা, তা উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এত মানুষ, এত ভাইবোনেরা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। সবাই ন্যায়বিচার পাবেন। আওয়ামী লীগ, পুলিশসহ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিচারের আওতায় আসবেন, তাঁদের শাস্তি হবে। এই ন্যায়বিচার একটা নির্দশন হয়ে থাকবে—শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, পৃথিবীর জন্য। যে কেউ যদি স্বৈরশাসন কায়েম করতে চায়, জনগণের ওপর আক্রমণ চালায়, জনগণকে হত্যা করে, তার পরিণতি আসলে কী হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রমে সন্তোষ্টি প্রকাশ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এটা (শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে মামলা) কিন্তু একটি মামলা। এ মামলার একটা রাজনৈতিক দিক যে শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনালেই অনেক মামলা রয়েছে এবং সাধারণ আদালতে আরও অনেক মামলা রয়েছে। গুমের মামলা রয়েছে। ফলে বিচারটাকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে। কারণ, সাধারণ আদালতে যেসব মামলা, সেগুলো সম্পর্কে ইতিবাচক কথা শুনতে পাচ্ছেন না। অনেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী, সেটা তাঁরা জানতে পারছেন না। ফলে সেই মামলাগুলো যাতে যথাযথ গুরুত্বসহকারে দেখা হয়, এই আবেদন তাঁদের থাকবে।