স্ত্রী লামিয়ার পরকীয়া প্রেমিক খুলনার বড়বাজারের ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাহাকে গালাগাল করেছিলেন স্বামী আলামিন শেখ ওরফে ইমন। এর প্রতিশোধ নিতে ২০ ফেব্রুয়ারি ইমনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন বিশ্বজিৎ সাহা। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. কুতুব উদ্দিন আজ মঙ্গলবার বিকেলে মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। 

ইমন মোবাইল ফোন কোম্পানির সেলসম্যান।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, ২০ ফেব্রুয়ারি ইমনকে মোটরসাইকেল চালানো অবস্থায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রাজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং প্রযুক্তির সহযোগিতায় মামলার রহস্য উদঘাটন করে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় বিশ্বজিৎ সাহাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি নগরীর পূর্ব বানিয়াখামার লোহার গেট এলাকার বাসিন্দা। 

পুলিশ আরও জানায়, বিশ্বজিৎ সাহার সঙ্গে লামিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। ইমন ঘটনাটি জেনে ফেলে এবং বিশ্বজিৎ সাহাকে ফোন করে গালাগাল করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইমনকে বিশ্বজিৎ সাহা হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আগের কর্মচারী নাইম ও মুন্সীকে ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করেন বিশ্বজিৎ সাহা। ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে বিশ্বজিৎ, নাইম ও মুন্সী ট্রাকস্ট্যান্ড কাঁচা বাজারের সামনে যান। মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় ইমনকে বিশ্বজিৎ চিনিয়ে দেন। মোটরসাইকেল চালানো অবস্থায় ইমনকে নাইম ও মুন্সী পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে ইমনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নাইম ও মুন্সীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে পাকিস্তানের জার্সি ঢাকতে বলার ঘটনায় ক্ষমা চাইল ল্যাঙ্কাশায়ার

ইংল্যান্ড–ভারত টেস্ট সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে পাকিস্তানের জার্সি পরে খেলা দেখতে বসেছিলেন এক দর্শক। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা জার্সিটি ঢাকতে বলার পর সেই দর্শক তা না করায় তাঁকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব। ওল্ড ট্রাফোর্ড ল্যাঙ্কাশায়ারের ঘরের মাঠ।

সংক্ষিপ্ত সংস্করণে পাকিস্তানের সবুজ রংয়ের জার্সি পরে মাঠে গিয়েছিলেন ফারুক নজর নামের সেই দর্শক। ঘটনাটি তিনি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার পর এ নিয়ে আলোচনার ঝড় শুরু হয়।

আরও পড়ুনওল্ড ট্রাফোর্ডে পাকিস্তানি জার্সি পরা নিয়ে বিতর্ক, তদন্তে ল্যাঙ্কাশায়ার২৮ জুলাই ২০২৫

ভিডিওতে দেখা যায়, এক নিরাপত্তারক্ষী নজরকে জার্সিটি ঢাকতে বলছেন। সেই নিরাপত্তারক্ষী ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে কাজ করেন বলে পরিচয় দেন। ফারুককে তিনি বলেন, জার্সিটি ঢাকতে বলার জন্য ‘কর্তৃপক্ষ’ তাঁকে পাঠিয়েছেন। তবে তাঁর কথায় ফারুক রাজি হননি। এরপর পুলিশ কর্মকর্তাদের সহায়তায় ফারুরকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে দেওয়া হয়।

ল্যাঙ্কাশায়ারের বিবৃতি অনুযায়ী, ‘(স্টেডিয়ামের নিরাপত্তার কাজে) দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সঙ্গে অগ্রহণযোগ্য ব্যবহার করায় স্টুয়ার্ড ও পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে স্টেডিয়াম থেকে চলে যেতে বলেন।’ গত রোববার টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে এই ঘটনা ঘটে।

ল্যাঙ্কাশায়ার এর আগে জানিয়েছিল, এই ঘটনার তদন্ত করা হবে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত শেষে ক্ষমা চেয়ে ক্লাবটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়া, তা পর্যালোচনা করা হবে।’

ল্যাঙ্কাশায়ারের ব্যাখ্যায় বলা হয়, টেস্টের চতুর্থ দিনে অর্থাৎ শনিবার ভারত ও পাকিস্তান সমর্থকদের মধ্যে অন্য একটি ঘটনা ফারুক নজরের বিষয়টি ওভাবে সামলানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। ক্লাবটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রথমে একটি বিষয় আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, স্রেফ পাকিস্তানের জার্সি পরে আসায় কাউকে বের করে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল না। শনিবার একটি ঘটনার কারণে বিষয়টি সামলানো হয় ওভাবে। একদল সমর্থক পাকিস্তানের পতাকা ওড়ান, তাতে কাছাকাছি থাকা ভারতের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সম্মানের সঙ্গে পতাকা সরিয়ে রাখার কথা বলে ঘটনাটা আর বাড়তে দেননি। তাঁরাও (সমর্থক) কোনো প্রকার সন্দেহ ছাড়াই সেটা (পতাকা নামিয়ে ফেলা) করেছেন।’

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস (ডব্লুসিএল) টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের সঙ্গে দুটি ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। এর মধ্যে একটি সেমিফাইনাল এবং আফ্রিদি–হাফিজদের বিপক্ষে সেই ম্যাচ খেলায় টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয় যুবরাজ–হরভজনদের।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রোববার আমাদের (নিরাপত্তা) দল সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়। আমাদের কাছে নিরাপত্তাই আগে। কোনো উত্তেজনা যেন তৈরি না হয় এবং তাঁর (ফারুক নজর) নিজের স্বার্থে গ্যালারিতে আমাদের (নিরাপত্তা) কর্মী ভদ্রভাবে জার্সিটি ঢেকে রাখার কথা বলেন। কয়েকবার অনুরোধের পরও তিনি বার বার অসম্মতি জানান।’

আরও পড়ুনওল্ড ট্রাফোর্ডে পাকিস্তানি জার্সি নিয়ে বিতর্ক: খাজার প্রশ্ন, জার্সি ঢাকতে বলাটা কি বৈধ২৯ জুলাই ২০২৫

ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক সম্পর্কে কয়েক বছর ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত মে মাসে দুই দেশের সামরিক সংঘাতের পর সেই উত্তেজনা আরও তীব্র হয়। এই টানাপোড়েনের ছায়া পড়েছে দুই দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কেও।

২০১৩ সালের পর আর কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেনি ভারত-পাকিস্তান। টেস্ট ক্রিকেটে মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা আরও পুরোনো, ২০০৭ সালে। এমনকি বৈশ্বিক ও মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার সময় একে অন্যের দেশে গিয়ে খেলাতেও তৈরি হয়েছে জটিলতা। ফলে সম্প্রতি দুই দলের ম্যাচ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজন করতে হচ্ছে ‘হাইব্রিড মডেলের’ অংশ হিসেবে।

ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে টেস্টটি ড্র হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ