‘আপনার কাছে কি ডন ব্র্যাডম্যানের অটোগ্রাফও আছে?’ প্রশ্নটা শুনে একটু যেন নস্টালজিকই হয়ে পড়েন ভদ্রলোক। ব্র্যাডম্যানের অটোগ্রাফ পাওয়ার গল্প বলতে বলতে তাঁর কণ্ঠে ফুটে ওঠে উচ্ছ্বাস।

ইংল্যান্ড থেকে তাঁর অটোগ্রাফ চেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ব্র্যাডম্যানের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। ব্র্যাডম্যান ডাকেই অটোগ্রাফ পাঠিয়ে দিয়েছেন। শুধু কি ব্র্যাডম্যান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্রিকেট খেলেছেন, এমন খুব কম ক্রিকেটারই নাকি আছেন, যাঁর অটোগ্রাফ নেই ডমিনিক উডের কাছে।

তা ক্রিকেটারদের ওই সংখ্যাটা কত? আড়াই থেকে তিন হাজার হবে বলে দাবি ডমিনিক উডের। সংখ্যাটা শুনে একটু চমকেই যেতে হয়। সংখ্যাটা আরও বাড়াতে উচ্ছ্বাস আর দর্শকহীন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এখন একটা মুখ পরিচিত হয়ে উঠেছেন গ্যালারিতে। মুখে হালকা দাড়ি, গায়ে হলুদ একটা টি–শার্ট আর মাথায় ক্যাপ নিয়ে তিনি চষে বেড়াচ্ছেন পুরো শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম।

কোনো কোনো অটোগ্রাফ কিনতে যা খরচ, তা দিয়ে বাংলাদেশে একটা বাড়িই কিনে ফেলা যাবে।ডমিনিক উড, ইংল্যান্ড থেকে আসা অটোগ্রাফ শিকারি

কখনো মাঠ, কখনো বিসিবির একাডেমিতে খুঁজে বেড়াচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত ক্রিকেটারকে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে দেখছেন অনুশীলন কিংবা ম্যাচ—সপ্তাহ তিনেক ঘুরে ঘুরে ‘অটোগ্রাফ’ নেওয়ার কাজটা করবেন বলেই নাকি ইংল্যান্ড থেকে পাড়ি দিয়েছেন হাজার মাইল। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সব জায়গায় ঘুরে ঘুরে ক্রিকেটারদের অটোগ্রাফ জোগাড় করাই ‘শখ’ পেশায় লেখক ডমিনিক উডের।

তা এই অটোগ্রাফ নেওয়ার ঝোঁকটা শুরু কবে থেকে? ‘ইংল্যান্ডে ছোটবেলায় মা–বাবাই মাঠে দৌড়ে অটোগ্রাফ নিতে শেখায়’ বলতে বলতে ডমিনিক হাসেন, ‘বড় হয়ে অনেকেই ছেড়ে দেয় প্রেমিকা বা অন্য কিছু পেয়ে; আমার বয়স ৪৮ হয়ে গেল, প্রেমিকাও পেয়েছি, কিন্তু শখটা ছাড়তে পারিনি।’

অটোগ্রাফ সংগ্রহের এই কাজে আর্থিক ব্যাপার তো আছেই, কখনো অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতাও হয়েছে। সংখ্যাটা কমই। তবু দু–একটা স্মৃতির কথা ভেবে ডমিনিকের একটু মন খারাপই হয়, ‘ডেমিয়েন মার্টিন আশা করি অবসরের পর ভালো হয়ে গেছে, খেলোয়াড়ি জীবনে…’ ডটের জায়গাগুলোতে লেখার অযোগ্য একটা শব্দ ব্যবহার করলেন তিনি।

অটোগ্রাফ সংগ্রাহক হিসেবে ডমিনিকদের কয়েকজনের একটা দল আছে। যখন যে যারটা পারেন, অটোগ্রাফ জোগাড় করে রাখেন। তাঁদের মধ্যে হয় ‘বিনিময়ও’। কোনো ক্রিকেটারকে পেয়ে গেলে তাই অন্তত তাঁর দশটা তো অটোগ্রাফ দিতেই হয়।

মিরপুর শেরেবাংলায় এক ক্রিকেটারের অটোগ্রাফ নিচ্ছেন ডমিনিক উড.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের  নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”

মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” 

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ