নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞাসহ শাস্তির বিধানে বেশ কিছু সংশোধনী আসছে।

সোমবার (১৭ মার্চ) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, “শিশু ধর্ষণ মামলার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের বিধান রাখা হচ্ছে। এর সঙ্গে মামলার জট এড়াতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সম্মতি নিয়ে প্রতারণামূলক ধর্ষণ এবং সম্মতি ব্যতিরেকে ধর্ষণের অপরাধ আলাদা করা হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

কিশোরের বিরুদ্ধে ৫ বছরের শিশুকে ‌‌‌‘ধর্ষণচেষ্টার’ অভিযোগ

আছিয়া স্মরণে মাগুরায় বিএনপির দোয়া ও ইফতার

ধর্ষণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনার বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “শুধুমাত্র পুরুষ কর্তৃক নয় বরং যেকোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণকে শাস্তিযোগ্য করা হচ্ছে।”

“সেই সাথে ধর্ষণের সংজ্ঞায় বলাৎকারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শুধুমাত্র পেনিট্রেশন না, যদি অন্য কোনো বস্তু ব্যবহার করা হয় বা পায়ুপথে বা যেকোনভাবে ধর্ষণ করা হয়, সেটাও ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।”

এছাড়া ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করাসহ, ধর্ষণের উদ্দেশ্যে কেউ যদি আঘাতপ্রাপ্ত হন, সেটার জন্যও কঠোর শাস্তির বিধান রাখার কথা জানান তিনি।

খসড়া আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলা তদন্তের সময় ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন এবং মামলার বিচার কাজ শেষ হওয়ার সময় ১৮০ দিন থেকে কমিয়ে ৯০ দিন করা হচ্ছে।

উপদেষ্টা বলেন, “বিচারক যদি মনে করেন, তবে ডিএনএ প্রতিবেদন ছাড়াই মেডিকেল সার্টিফিকেট ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে মামলার বিচারকাজ ও তদন্ত কাজ চালাতে পারবেন-এমন বিধান রেখে আইন সংশোধন করা হচ্ছে।”

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের বন, জলবায়ু ও পরিবেশবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”

বন, জলবায়ু ও পরিবেশবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সংবাদ ব্রিফিংয়ে কথা বলেন

সভায় আইনের সংশোধনীর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার আইনটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পেতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড জ ট ল আইন উপদ ষ ট উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ