২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে নির্বাচনে জেতার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিষ্কার বলে দেন, ব্রিকস মুদ্রা নিয়ে আসা হলে এই জোটভুক্ত দেশগুলোর পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। অর্থাৎ মার্কিন মুদ্রা ডলারের শক্তি হ্রাসের চেষ্টা তিনি বরদাশত করবেন না। তাঁর সেই হুমকি কাজে দিচ্ছে।

ব্রিকসের অন্যতম সদস্য ভারত জানিয়ে দিয়েছে, ব্রিকস মুদ্রা চালু বা ডলারের শক্তি খর্ব করার কোনো উদ্যোগের সঙ্গে তারা থাকছে না। ভারতের সংসদে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে ব্রিকসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে জোটের প্রতি নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। বলেছেন, বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে এই জোট কাজ করে যাবে। খবর ইকোনমিক টাইমসের

লোকসভায় ব্রিকস মুদ্রা ও ট্রাম্পের হুমকিসংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নের জবাবে এস জয়শঙ্কর আরও বলেন, গত দুই দশকে ব্রিকসের পরিসর ও সদস্যসংখ্যা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই জোটের কার্যক্রম সম্পর্কে আরও ওয়াকিবহাল হোক, ব্রিকস তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।

লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এস জয়শঙ্কর পরিষ্কার বলেছেন, ডলারের শক্তি খর্ব করার কোনো উদ্যোগের সঙ্গে ভারত জড়িত থাকবে না। এটা ভারতের অর্থনৈতিক বা কৌশলগত লক্ষ্য নয়—দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় বিষয়টি মার্কিন কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদী। ফলে ব্রিকস জোট সম্পর্কে তিনি সব সময়ই সমালোচনামুখর। গত মাসেই তিনি বলেছেন, ব্রিকস মরে গেছে।

বিশেষ করে ব্রিকসের অভিন্ন মুদ্রার বিষয়ে ট্রাম্প যুদ্ধংদেহী। একাধিকবার বলেছেন, ব্রিকস মুদ্রা চালু করা হলে এই দেশগুলোর পণ্যে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। অর্থাৎ ডলারের আধিপত্য ক্ষুণ্ন হয়—এমন কোনো কাজ তিনি সহ্য করবেন না। তাঁর ভাষ্য, এই শতভাগ শুল্কের হুমকি দেওয়ার পর থেকেই ব্রিকস মরে গেছে।

ব্রিকসের বেশ কয়েকটি সদস্যদেশ বিশ্ববাণিজ্যে ডলারের আধিপত্য খর্ব করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে চীন তার মুদ্রা ইউয়ানকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অন্যতম প্রধান মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার মতো দেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আগের চেয়ে বেশি ইউয়ান ব্যবহার করছে। ভারতও বিশ্ব বাণিজ্যে রুপির ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

ডলারের আধিপত্য কমাতে ব্রিকসের সদস্যদের মধ্যে নতুন একটি ব্রিকস মুদ্রা তৈরিও কথাবার্তা হয়েছে। যদিও সেই আলোচনা খুব বেশি এগোয়নি। এরই মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকিতে সেই চেষ্টা একরকম বন্ধই হয়ে গেছে।

ব্রিকস জোটের প্রাথমিক সদস্যদেশ দেশগুলো হলো চীন, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। পরে ২০২৩ সালে ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও ইথিওপিয়া ব্রিকসে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দেয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ছ ন সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ