আইপিও আবেদনে বিনিয়োগের শর্ত তুলে নেওয়ার সুপারিশ
Published: 27th, March 2025 GMT
শেয়ারবাজারে নতুন আসা কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে আবেদনের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি মার্কেটে ৫০ হাজার টাকা ন্যূনতম বিনিয়োগের শর্ত তুলে নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি আইপিও আবেদনে উচ্চ সম্পদশালীদের জন্য কোটা সংরক্ষণেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গঠিত টাস্কফোর্স এই প্রস্তাব করেছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গঠিত পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গত সোমবার বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কাছে তাদের আইপিও–সংক্রান্ত সুপারিশ জমা দিয়েছে। সেখানে আইপিওর আবেদনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। সেই সঙ্গে বহুজাতিক, সরকারি ও বড় মূলধনি ভালো কোম্পানি বাজারে আনতে সরাসরি তালিকাভুক্তি বা ডিরেক্ট লিস্টিং সুবিধা চালুরও সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।
টাস্কফোর্সের সুপারিশে বলা হয়েছে, হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করে এমন বহুজাতিক, সরকারি ও বড় কোম্পানির ক্ষেত্রে সরাসরি তালিকাভুক্তি সুবিধা চালু করা যেতে পারে। তাতে বাজারে ভালো কোম্পানি আসার পথ সহজ হবে। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেটি কমিয়ে ১০ শতাংশ করারও সুপারিশ করা হয়। বর্তমানে সরাসরি তালিকাভুক্তির সুবিধাটি সরকারি নির্দেশনার আলোকে দেওয়া হয়। টাস্কফোর্স সুপারিশ করেছে সরকারি নির্দেশনার বদলে এই সুবিধা বড় কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে সর্বজনীন করার।
আইপিওর ক্ষেত্রে উচ্চ সম্পদশালীদের জন্য ১৫ শতাংশ কোটা সুবিধা চালুরও সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স। তারা বলছে, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিরা আইপিওতে দুই লাখ টাকার বেশি আবেদন করতে পারবেন। তাঁদের জন্য ১৫ শতাংশ কোটা থাকবে। আর ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দুই লাখ টাকার কম আবেদন করতে পারবেন। ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এ ছাড়া স্টার্টআপ বা প্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানির জন্য আলাদা বিধান চালুরও সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।
বর্তমানে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ভিত্তিমূল্য নির্ধারিত হওয়ার পর তার চেয়ে ১০ শতাংশ কমে আইপিও শেয়ারের মূল্য নির্ধারণের বিষয়টিও বাতিলের সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স। এই বিধান বাতিলের যুক্তি হিসেবে তারা বলছে, এ বিধান থাকার ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ও গুণমান বিবেচনা না করেই আইপিওর জন্য আবেদন করেন। কারণ, তাঁরা ধরে নেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যেহেতু ১০ শতাংশ বেশি দামে শেয়ার কিনেছেন, তাই কম দামে আইপিওতে আবেদন করে লাভবান হওয়া যাবে। নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির বাধ্যবাধকতাও তুলে নেওয়ার সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স। তারা বলছে, দ্বৈত তালিকাভুক্তির বিষয়টি বাধ্যবাধকতামূলক না করে ঐচ্ছিক রাখার।
গত ৭ অক্টোবর শেয়ারবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার সংস্কারের সুপারিশের জন্য পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোংয়ের জ্যেষ্ঠ অংশীদার এ এফ এম নেসারউদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিএসই বিভাগের অধ্যাপক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স প র শ কর ছ দ র জন য প রস ত ব সরক র আইপ ও
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ বিএসইসির
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। শুভেচ্ছা বিনিময়কালে পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুর ১২টায় ঢাকার আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এ জন্য দেশের পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উভয় পক্ষের এ বৈঠকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু সুপারিশ অন্তুর্ভুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। এ বৈঠকে বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আজকে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে আমরা পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরব। বিশেষ করে প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কিছু সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আমরা বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাছে দাবি জানাবো। আলোচনার মাধ্যমেই যে কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে।”
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি আ ন ম আতাউল্লাহ নাঈম রাইজিংবিডিকে বলেন, “ঈদের আগেই এ বৈঠকের বিষয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিএসইসি। আমরা বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করব। আলোচনার মাধ্যমে পুঁজিবাজারের সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে।”
তবে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “আমরা বিএসইসির এ আমন্ত্রণকে প্রত্যাখ্যান করেছি। একই সঙ্গে আমরা বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করা হবে। এ জন্য আজকে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।”
ঢাকা/এনটি/ইভা