রাউজানে প্রকৌশলীকে কুপিয়ে হত্যা, অভিযুক্তরা পলাতক
Published: 2nd, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে’ এক প্রকৌশলীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের তীতা গাজীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মুহাম্মদ নুরুল আলম (৪০) আলম। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা। তবে চট্টগ্রাম নগরে বসবাস করতেন। অন্যদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন তীতা গাজীপাড়ার দিদারুল আলম ও নজরুল ইসলাম। তাঁরা নরুল আলমের সৎভাই।
গতকাল সন্ধ্যায় লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলাও হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত শেষে আজ বিকেলেই মরদেহটি পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এরপর মামলা করবে পরিবার, এমনটিই জানা গেছে।
পুলিশ, কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই দিদারুল আলম ও নজরুল ইসলামের সঙ্গে নুরুল আলমের জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। গতকাল ঈদের পরদিন চট্টগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়িতে যান নুরুল আলম। গতকাল দুপুরে এ বিষয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দিদারুল ও নজরুল মিলে নুরুল আলমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে সেখানেই মারা যান নুরুল আলম।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ভূইঁয়া জানান, জায়গাজমি বিরোধ থেকে ওই ব্যক্তিকে কয়েকজন মিলে হত্যা করেছে। পুলিশ গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাউকে পায়নি। তাঁরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। মামলা দিলে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।