টর্চের আলো নেতার চোখে পড়ায় পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম
Published: 4th, April 2025 GMT
কুমিল্লায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার নেতৃত্বে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসা পুলিশ কনস্টেবলের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। আহত সাদ্দাম হোসেন ফেনীর দাগনভূঞা থানায় কর্মরত। হামলার ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে লাকসাম উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়নের মনপাল গ্রামে।
পুলিশ জানায়, টর্চের আলো ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এমরান হোসেনের চোখে পড়লে উত্তেজিত হয়ে দলবল নিয়ে পুলিশ কনস্টেবলের বাড়িতে হামলা করে। কনস্টেবল সাদ্দামকে কুপিয়ে ও তার পরিবারের সদস্যদের পিটিয়ে আহত করেছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয়রা জানান, কিছু দিন আগে ওই গ্রামে একটি ব্যানার টানান ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এমরান হোসেন। দুই দিন আগে শিশুরা খেলার সময় ঢিল মারলে সেটি ছিঁড়ে যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর এমরান ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে গালাগাল করে। এ সময় রাস্তা দিয়ে টর্চের আলোয় ঘরে ফিরছিলেন ছুটিতে আসা পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন। টর্চের আলো দূর থেকে এমরানের চোখে পড়লে উত্তেজিত হয়ে দলবল নিয়ে কনস্টেবল সাদ্দামের বাড়িতে হামলা চালায়।
আহত পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমার টর্চের আলো দূর থেকে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এমরানের চোখে পড়ে। এতে উত্তেজিত হয়ে দলবল নিয়ে আমার ওপর হামলা করে এবং আমার বাড়ির লোকজনকে পিটিয়ে আহত করে।’
স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এমরান হোসেন পলাতক থাকায় ঘটনার বিষয়ে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাসুদ রানা বেলাল জানান, পুলিশ কনস্টেবলের ওপর হামলার বিষয়টি দলের হাইকমান্ডের নজরে এসেছে। তাই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এমরান হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা জানান, হামলায় কনস্টেবল সাদ্দামসহ পরিবারের ৩জন আহত হয়েছেন। পরে আহত অবস্থায় সাদ্দামকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামলায় জড়িত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এমরানকে আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ এমর ন হ স ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।