সিলেটে কথা-কাটাকাটির জেরে এলাকাবাসীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক ও যুবদল নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ
Published: 12th, April 2025 GMT
সিলেটে কথা–কাটাকাটির জেরে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। এতে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের দুই নেতা আহত হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সিলেট শহরের মাছিমপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহত দুজন হলেন সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আজিজ হোসেন ও যুবদল কর্মী রুম্মান খান। বর্তমানে তাঁরা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নগরের মেন্দিবাগ এলাকায় গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আজিজ হোসেনের সঙ্গে মাছিমপুর এলাকার যুবক আবুল কালাম ওরফে দিপুর কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে আজিজ হোসেন আহত হন। পরে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজিজ হোসেন আহত হওয়ার খবর পেয়ে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা আবুল কালামকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে জানা যায়, আবুল কালাম সিলেট সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত ২২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক নারী কাউন্সিলর শারমিন আক্তারের দেবর।
রাত ১১টার দিকে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেলে করে মাছিমপুর এলাকায় গিয়ে আবুল কালামের খোঁজ করেন এবং একপর্যায়ে তাঁর বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় এলাকাবাসী একত্র হয়ে তাঁদের ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ বাঁধে। নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল ফেলে চলে যান। তখন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ৩০টির বেশি মোটরসাইকেল আটকে রেখে ভাঙচুর করেন।
এ ঘটনায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে মেন্দিবাগ এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ অন্য নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আজ জ হ স ন এল ক ব স পর স থ ত ও য বদল খবর প য় এল ক য় কর ম র
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।
ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।