দুই বছর মেয়াদে আরণ্যকের নতুন নির্বাহী কমিটি
Published: 27th, April 2025 GMT
হারুন রশীদকে প্রধান সম্পাদক করে দেশের অন্যতম নাট্য সংগঠন আরণ্যক নাট্যদলের নতুন নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। আরণ্যকের নিজস্ব কার্যালয়ে শনিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় এই কমিটি গঠিত হয়। আগামী দুই বছর এই কমিটির নেতৃত্বে আরণ্যকের সব ধরনের কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হবে।
কমিটিতে শেখ জিয়াদুল হককে অর্থ সম্পাদক, মরু ভাস্করকে প্রযোজনা সম্পাদক, অপু মেহেদীকে প্রশিক্ষণ সম্পাদক এবং রুবলী চৌধুরীকে দপ্তর সম্পাদক মনোনীত করা হয়। এ ছাড়া সম্পাদক মণ্ডলীর সহযোগী হিসেবে রয়েছেন শামীমা শওকত লাভলী, হাসিম মাসুদ ও সুজাত শিমুল।
নাট্যদলটির জ্যেষ্ঠ সদস্য চঞ্চল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন আরণ্যক নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা মামুনুর রশীদ, সিনিয়র সদস্য আজিজুল হাকিম, ঠান্ডু রায়হান, পরিমল মজুমদার, দিলু মজুমদারসহ দলের সদস্যবৃন্দ।
আরণ্যকের প্রতিষ্ঠাতা মামুনুর রশীদ বলেন, ৫৩ বছর আগে যাত্রা শুরু হয়েছিল আরণ্যকের। যে স্বপ্ন ও লক্ষ্য নিয়ে আরণ্যক যাত্রা শুরু করেছিল, তার সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুক্ত হয়েছে আরও নতুন নতুন স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা। নতুন এ সম্পাদক মণ্ডলী সেই নতুন স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও সুন্দর আগামীর দিকে আরণ্যককে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর হারুন রশীদ বলেন, ‘শুরু থেকেই আরণ্যক নাট্যদল একটি নির্দিষ্ট আদর্শ লালন করে তাদের নিরন্তর নাট্যচর্চায় নিয়োজিত রয়েছে। দলের সব সদস্য ও কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আমি ও আমার কমিটি সেই আদর্শে বলীয়ান হয়ে দলের আগামী দিনের কর্মকাণ্ড সুচারুরূপে পালন করতে সচেষ্ট হব।’
সভাপতির বক্তব্যে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘নতুন এ কমিটির মাধ্যমে একদল নবীন ও অ্যানার্জিটিক সদস্যরা দলের দায়িত্ব নিল। আমি বিশ্বাস করি, তারা তাদের মেধা, শ্রম ও সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে আরণ্যক নাট্যদলের আদর্শে দলকে আরও বহুদূর নিয়ে যাবে।’
১৯৭২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে নাট্যচর্চায় যাত্রা শুরু করে আরণ্যক নাট্যদল। ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি শহীদ মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকটি দিয়ে প্রথম মঞ্চে আসে তারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।