নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক এক নেতার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়নে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোশকপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। যুবলীগের ওই নেতার নাম শাকিল মাহমুদ। তিনি আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় যুবদলকর্মী নাজুমল হাসান ও তাঁর ভাই মাহেদুল ইসলামের সঙ্গে শাকিলের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে নাজমুল ও মাহেদুল শাকিলের বাড়ির লোকজনের মারধরে গুরুতর আহত হন। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর নাজমুলের অনুসারী ও সঙ্গীরা শাকিলের বাড়ি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেন।

জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা শাকিল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ইরাকপ্রবাসী। তিন মাস আগে ছুটিতে দেশে এসেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ঢাকায় থাকেন। চাঁদার জন্য কিছু ব্যক্তি তাঁকে হয়রানি করে আসছিলেন। এর জেরে গতকাল সন্ধ্যায়ও তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তবে তাঁর গায়ে লাগেনি। এরপর তাঁর স্বজনেরা প্রতিরোধ করায় তাঁর বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন যুবদল কর্মী পরিচয় দেওয়া নাজমুল হক। তিনি ও তাঁর ভাই মাহেদুল ইসলাম বর্তমানে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শাকিলের বাড়ির সামনে দিয়ে তিনি ও তাঁর ভাই বাজারে যাচ্ছিলেন। এ সময় তুচ্ছ ঘটনায় তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে শাকিলের কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে তাঁকে ও তাঁর ভাইকে মারধর করা হয়েছে। এরপর কারা শাকিলের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে, তিনি জানেন না।

বেগমগঞ্জের আলাইয়ারপুর ইউনিয়নে যুবদলের কোনো কমিটি নেই। আলাইয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মীরজুমলা মিঠু প্রথম আলোকে বলেন, নাজমুল যুবদলের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। তাঁর ওপর হামলা চালানোর জেরে তাঁর অনুসারীরা শাকিলের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন।

উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মহিউদ্দিন রাজু প্রথম আলোকে বলেন, আলাইয়াপুরে গন্ডগোলের কথা তিনি শুনেছেন। তবে কী ঘটেছে, দলীয় কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় জানতে পারেননি। পরে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানাবেন।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে তিনি নিজেই পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গেছেন। আগুনে শাকিলদের বসতঘর পুরোটা পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক প র ইউন য বল গ য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

২৬ টুকরো লাশ উদ্ধার: প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ২ 

ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছ থেকে দুটো ড্রামের ভেতর থেকে ব্যবসায়ী আশরাফুলের মরদেহের ২৬ টুকরো উদ্ধারের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন, আশরাফুলের বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার।

কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে জরেজুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার ডিবি পুলিশ। আর শামীমাকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তাঁর কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে বলে র‍্যাব জানিয়েছে।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে ডিএমপি গণমাধ্যম শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি)  মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান। 

শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে মিন্টু রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন ডিবি প্রধান। 

অন্যদিকে, খুদে বার্তায় শুক্রবার রাতে র‌্যাব সদরদপ্তর থেকে  জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পরকীয়ার কারণে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

শুক্রবার নিহত আশরাফুল হকের বোন আনজিরা বেগম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় জরেজুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

নিহত আশরাফুল হক (৪৩) দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর। 

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, আশরাফুল ও মালায়েশিয়াপ্রবাসী জরেজুল বাল্যবন্ধু। তাদের বাড়ি রংপুরের একই গ্রামে। তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘বিগো লাইভে’ কুমিল্লার এক প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা আক্তারের সঙ্গে জরেজুলের পরিচয় হয়। শামীমা দুই সন্তান নিয়ে কুমিল্লায় বসবাস করেন। একপর্যায়ে জরেজুল ও শামীমা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। জরেজুল মাঝেমধ্যেই মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসতেন এবং শামীমার সঙ্গে সময় কাটাতেন। এই সম্পর্কের কথা জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে জানিয়েছিলেন। একসময় জরেজুলের কাছ থেকে আশরাফুল শামীমার ফোন নম্বর নেন। তিনিও শামীমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের মধ্যে দুজনের মধ্যেও সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর জরেজুল মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। এরপর ঢাকার দক্ষিণ দনিয়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। ওই বাসায় তিনি শামীমাকে নিয়ে ওঠেন। শামীমা তার দুই সন্তানকে কুমিল্লায় রেখে আসেন। গত মঙ্গলবার জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় আসেন। একপর্যায়ে জরেজুল বুঝতে পারেন, শামীমার সঙ্গে আশরাফুল সম্পর্কে জড়িয়েছেন। 

এ ঘটনার জেরে আশরাফুলকে হত্যা করা হয় এবং লাশ গুমের জন্য ২৬ টুকরো করে দুটি নীল রঙের ড্রামের ভেতর ভরে হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে ফেলে দেওয়া হয় বলে ডিবি পুলিশ জানায়। নিহতের ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

ঢাকা/এমআর/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঝিনাইদহে ৩২ বছর পর ছেলে পেলেন পিতৃপরিচয়, মা পেলেন স্ত্রীর স্বীকৃতি
  • ২৬ টুকরো লাশ উদ্ধার: প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ২