বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে যোগ হলো এক নতুন অধ্যায়। বাংলাদেশ এবার আন্তর্জাতিক আসরে খেলবে সমুদ্রের খেলা—সার্ফিং। আগামী ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের নায়োগায় অনুষ্ঠিতব্য ২০তম এশিয়ান গেমসে প্রথমবারের মতো লাল-সবুজের পতাকা হাতে লড়বেন বাংলাদেশের তরুণ সার্ফাররা।

এ স্বপ্নযাত্রার সূচনা ভারতের তামিলনাড়ু থেকে। সেখানে ৩ থেকে ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় ‘চতুর্থ এশিয়ান সার্ফিং চ্যাম্পিয়নশিপ’। এতে ১৮ দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। বাংলাদেশ থেকে অংশ নেন পাঁচ সার্ফার—মোহাম্মদ মান্নান, হাসান, মোহাম্মদ ইউনুস, মাহিমা আক্তার মিলি ও ফাতেমা আকতার। প্রতিযোগিতায় নবম স্থান অর্জন করে তারা নিশ্চিত করেন এশিয়ান গেমসের টিকিট।

তরুণদের চোখে স্বপ্ন 
দেশে ফিরেই বিশ্রাম ভুলে সার্ফাররা নেমে পড়েছেন ঢেউয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে। কক্সবাজারে কোচ রাশেদ আলম প্রতিদিনই তাদের দক্ষতা ঝালিয়ে নিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, “চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো করায় সুযোগ এসেছে। এখন লক্ষ্য আরো বড়—এশিয়ান গেমসে পদক।”

নারী সার্ফার ফাতেমা আকতার বলেন, “আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা নতুন পথ খুলে দিয়েছে। আমাদের কক্সবাজারের ঢেউ একরকম আর তামিলনাড়ুর ঢেউ ছিল ভিন্ন। তবু, আমরা বিশ্বাস করি, একদিন আমরা জিতব।”

মাহিমা আক্তার মিলি যোগ করেন, প্রথমবার অংশ নিয়েই অনেক শিক্ষা হলো। এখন সামনে এগোনো ছাড়া আর কিছু ভাবছি না।

সীমাবদ্ধতা পেরোনোর গল্প
বাংলাদেশ সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী বলেছেন, “সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা না থাকলেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সাফল্যের পথ আরো সহজ হবে।”

অ্যাসোসিয়েশনের টিম লিডার সাইফুল্লাহ সিফাত যোগ করেন, অনেক চ্যালেঞ্জের পর এশিয়ান গেমসে জায়গা পাওয়া গেছে। এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো বড় প্রতিযোগিতার স্বপ্ন দেখি।

সামনে নতুন ইতিহাস
২০২৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর জাপানের নায়োগায় বসছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞ। বাংলাদেশের সার্ফারদের জন্য এটি শুধু প্রথম অংশগ্রহণ নয়, বরং জাতীয় ক্রীড়াঙ্গনে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত। হয়ত একদিন সার্ফিং হয়ে উঠবে বাংলাদেশের মূলধারার খেলা।

ঢাকা/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে কাউকে হজে নেওয়া যাবে না: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, কেবল শারীরিকভাবে সুস্থ ব্যক্তিদেরকেই হজের জন্য নিবন্ধন করাতে হবে। শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে কাউকে হজে নেওয়া যাবে না।

বৃহস্প‌তিবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরাহ ফেয়ার ২০২৫-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হজ গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের সঙ্গে হজ এজেন্সির যোগসূত্র তৈরির লক্ষ্যে এ হজ ও ওমরাহ মেলার আয়োজন করেছে হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।

আরো পড়ুন:

ছবি ও ভিডিও বিকৃতি নিয়ে সোচ্চার মেহজাবীন

অস্ট্রেলিয়ায় ‘ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে’ বাংলাদেশ

অসুস্থ ও শারীরিক সক্ষমতা নেই, এরকম ব্যক্তিদেরকে হজে নেওয়া হলে সরকারকে বিব্রত হতে হয়, জা‌নি‌য়ে উপ‌দেষ্টা ব‌লেন, শারী‌রিকভাবে অক্ষম হা‌জি‌দের জন‌্য নানারূপ বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এজন্য শারীরিকভাবে অক্ষম ও দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরকে হজের জন্য ফিটনেস সার্টিফিকেট না দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

তিনি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ও শারীরিক সক্ষমতাবিহীন ব্যক্তিদেরকে হজে না নেওয়ার জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ করেছেন।

আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, “২০২৫ সালে আমরা একটি সুন্দর হজ উপহার দিতে পেরেছি। ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের হজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।“ ২০২৬ সালের হজ আরো ভালো হবে ব‌লে আশা ব‌্যক্ত ক‌রেছেন তি‌নি।

হজ ও ওমরাহ মেলার গুরুত্ব তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজ ও ওমরাহ ফেয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে হজ এজেন্সির সঙ্গে হজ গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি পাবে। হজ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাদের সামর্থ্য অনুসারে হজ প্যাকেজ বাছাই করতে পারবেন।” তিনি হাবের এ মেলা আয়োজনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

হাবের সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিরোধ নেই, জা‌নি‌য়ে আ ফম খা‌লিদ হো‌সেন ব‌লেছেন, “আমরা পারস্পরিক সম্মান, মর্যাদা ও ভ্রাতৃত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতেও আমরা হজযাত্রীদের স্বার্থে একসাথে কাজ করব।” তিনি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে হাবকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

হজ এজেন্সির উদ্দেশে ড. খালিদ বলেন, “অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের ব্যাগে মাদকদ্রব্যসহ সৌদি আরবে অননুমোদিত দ্রব্যাদি নিয়ে যায়। অনেকে দেশে ফেরার সময় হাজিদের মাধ্যমে অবৈধভাবে সোনা নিয়ে আসেন। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।” তিনি এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ জানান।

উপদেষ্টা বলেন, “হজযাত্রী নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দালালদের দৌরাত্ম্য আছে। এদের কারণে হজের খরচ বেড়ে যায়, আবার হজযাত্রীদের প্রতারিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে থাকে।” 

হজ গমনেচ্ছুক ব্যক্তিদেরকে এজেন্সি মালিক কিংবা তার বৈধ প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে হজে যাওয়ার অনুরোধ করেন উপদেষ্টা। এছাড়া, তিনি হজ এজেন্সির সঙ্গে হজযাত্রীদেরকে চুক্তি সম্পাদন এবং হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

এর আগে ধর্ম উপদেষ্টা হজ ও ওমরাহ ফেয়ার ২০২৫ উপলক্ষে প্রকাশিত হাবের মুখপত্র ‘হজ্জ বার্তা’র মোড়ক উন্মোচন করেন।

তিন দিনব্যাপী এ মেলায় মোট ১৫৪ টি স্টল আছে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, হজ এজেন্সি এবং হজ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাংকগুলো এ মেলায় হজ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রম ও তথ্য সেবা প্রদর্শন করছে। এছাড়া, হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের সুযোগও আছে মেলার স্টলগুলোতে। ১৬ আগস্ট বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ মেলা শেষ হবে।

হাবের সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ারের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ধর্ম সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক, ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান ইব্রাহিম আবদুল্লাহ আল-আহমারী ও হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমদ মজুমদার বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা মেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিস্তিনের হয়ে প্রথমবারের মতো মিস ইউনিভার্সে যাচ্ছেন ‎নাদিন আইয়ুব, চেনেন এই মডেলকে?
  • কুবির নতুন ক্যাম্পাস চালু হচ্ছে আগামী জুনে
  • ভিডিও ভাইরাল: ২১ বছর ধরে কারাবন্দী বারগুতিকে হুমকি দিয়ে এলেন বেন–গভির
  • ফুটবল দলবিহীন শেষ দেশ মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের ঐতিহাসিক অভিষেক
  • সেপ্টেম্বরে আর্জেন্টিনার দুই ম্যাচ, অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আর
  • ইউরোপের কোন লিগ কবে শুরু, কারা কোথায় এলেন–গেলেন
  • শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে কাউকে হজে নেওয়া যাবে না: ধর্ম উপদেষ্টা
  • দাখিল ও আলিম পর্যায়ে চালু হচ্ছে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ