‘বীক্ষণ’ মুক্ত মঞ্চ ভেঙ্গে দেয়ার প্রতিবাদে সোনারগাঁয়ে মানববন্ধন
Published: 4th, May 2025 GMT
ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ঐতিহাসিক ‘বীক্ষণ’ মুক্ত মঞ্চ ভেঙ্গে দেয়ার প্রতিবাদে এবং একই স্থানে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে মঞ্চটি দ্রুত পুনঃনির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সুবর্ণগ্রাম সংস্কৃতি অঙ্গন। রবিবার সকালে সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
সুবর্ণগ্রাম সংস্কৃতি অঙ্গনের সভাপতি কবি শাহেদ কায়েসের সভাপতিত্বে, লেখক ও উদীচী’র সোনারগাঁ শাখার সভাপতি শংকর প্রকাশের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের উপদেষ্টা কবি রহমান মুজিব, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সোনারগাঁ শাখার সম্পাদক, লেখক ও সাংবাদিক মিজানুর রহমান, সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের সাধারণ সম্পাদক, লেখক ও সাংবাদিক রবিউল হুসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক লেখক মোফাখখার সাগর, কবি ও সাংবাদিক এরশাদ হুসাইন অন্য, শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী শামীমা নাসরিন শাম্মী।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সংস্কৃতিকর্মী আব্দুস সাত্তার, আব্দুল করিম, শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী লতা মাহমুদ, খাদিজা আক্তার, তানিয়া আক্তার, পল্লবী সরকার, শিক্ষার্থী আনন্দ দাস প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘৪৫ বছরের পুরোনো ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ঐতিহাসিক ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন। আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। আমরা মনে করি এটি শুধু একটি স্থাপনা ধ্বংস নয়, বরং মুক্তচিন্তা, সৃজনশীলতা এবং শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার ওপর একটি চরম আঘাত। ১৯৯৩ সাল হতে প্রতি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে বীক্ষণ আসরে বিভিন্ন সময়ে ইতিহাসবিদ-লেখক বদরুদ্দীন উমর, কবি শামসুর রাহমান, কবি আল মাহমুদ, কবি শহিদ কাদরী, কবি ও গবেষক আব্দুল মান্নান সৈয়দ, কবি হেলাল হাফিজ, কবি আবু করিম, কবি নির্মলেন্দু গুণ, কবি আল মুজাহিদী, ছড়াকার আবু সালেহ, কবি মাহবুব সাদিক, কবি আসাদ চৌধুরী, কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজীসহ আরও অসংখ্য কবি-সাহিত্যিকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল। আমরা এই মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে ঐতিহ্যবাহী ‘বীক্ষণ মঞ্চের’ পুনর্র্নিমাণের দাবি জানাচ্ছি।’
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ স ন রগ
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন (২৩) ও তাঁর মা তাহমিনা বেগম (৫২) হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পৃথক তিনটি স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
আজ সোমবার বেলা একটার দিকে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে গিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন তাঁরা। এরপর বেলা তিনটার দিকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
নিহতের সহপাঠী নূর মোহাম্মদ সোহান বলেন, ‘আমাদের সহপাঠী ও তাঁর মায়ের হত্যাকারী একজন ধর্ষক। আমাদের বোনের ওপর সে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও তার মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি। ঘটনার শুরু থেকেই পুলিশের গাফিলতি আমরা লক্ষ করেছি।’
আরেক সহপাঠী মুনিয়া আফরোজ বলেন, ‘আমাদের বান্ধবীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, যা লাশ উদ্ধারের সাত দিন পর জানা গেল। পুলিশ তদন্তে অবহেলা করেছে। আমাদের দাবি, এক সপ্তাহের মধ্যে এই জোড়া খুনের পেছনে আরও বড় কোনো শক্তি আছে কি না, তা সুষ্ঠু তদন্ত করে উন্মোচন করতে হবে। মামলা বিশেষ আদালতে হস্তান্তর করতে হবে। ধর্ষকের সুষ্ঠু বিচার ও ফাঁসি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
সাইফুল ইসলাম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের সহপাঠী সুমাইয়া ও তাঁর মায়ের হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড কে, তা বের করতে হবে পুলিশকে। এর পেছনে সুমাইয়ার পরিবারের কেউ জড়িত আছে কি না, সেটিও তদন্ত করতে হবে।’
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, প্রথমে পুলিশ বলেছিল, সুমাইয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় এবং তা দেখে ফেলার কারণে তাঁর মাকে হত্যা করা হয়। পরে জানা যায়, কবিরাজ মোবারক হোসেন সুমাইয়াকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছেন। এ ছাড়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশে গড়িমসি হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। দ্রুত প্রতিবেদন প্রকাশ ও মামলাটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে হত্যাকারীর ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘স্মারকলিপিটি পেয়েছি। রাষ্ট্রের কাজ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিষয়টি আমরা দেখব।’
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান জানান, ‘আমরা তদন্ত করছি। আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে কুমিল্লা নগরের কালিয়াজুরি এলাকার ভাড়া বাসা থেকে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে নিহত তাহমিনা বেগম সুজানগর এলাকার প্রয়াত নুরুল ইসলামের স্ত্রী। তাঁর মেয়ে সুমাইয়া আফরিন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ঘটনার সময় তাঁরা বাসায় একা ছিলেন। ৭ সেপ্টেম্বর রাতে তাহমিনা বেগমের দুই ছেলে বাসায় ফিরে হত্যার বিষয়টি টের পান। পরদিন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন তাহমিনা বেগমের বড় ছেলে মো. তাজুল ইসলাম। সেদিনই পুলিশ কবিরাজ মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করে। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং ওই দিন রাতেই তাঁকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হন।