মৌসুম শেষে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের অ্যাস্টন ভিলা ছেড়ে যাওয়া একদমই নিশ্চিত। ভিলা পার্কের সর্বশেষ ম্যাচে চোখের পানিতে ভক্ত-সমর্থকদের একরকম বিদায়ও জানিয়ে দিয়েছেন মার্তিনেজ। মার্তিনেজের ক্লাব ছাড়ার খবর সামনে আসার পর সবার কৌতূহল ছিল তাঁর ভবিষ্যৎ গন্তব্য নিয়ে।

শুরুতে অনিশ্চিত গন্তব্যের কথা শোনা গেলেও এখন সামনে এসেছে ইউরোপের দুটি বড় ক্লাবের নাম। ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মার্তিনেজকে পেতে চায় বার্সেলোনা ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। দুটি ক্লাবই সাম্প্রতিক সময়ে গোলরক্ষক নিয়ে জটিল সময় পার করেছে। যে কারণে আপাতত মার্তিনেজকে কিনে নিজেদের গোলরক্ষক সমস্যার সমাধান করতে চায় দল দুটি।  

বার্সেলোনা সম্প্রতি লা লিগা শিরোপা নিশ্চিত করেছে, যেখানে পোলিশ গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তবে সেজনির ওপর এককভাবে ভরসা করে থাকার সুযোগ নেই। সেজনির বয়স ৩৫ বছর। নিয়মিত গোলরক্ষক টের স্টেগেন ছিটকে যাওয়ার পর তিনি বার্সায় যোগ দেন মূলত অবসর ভেঙে।

আরও পড়ুনপিএসজিকে কাঁপিয়ে দিল অ্যাস্টন ভিলা, চোখের জলে বিদায় মার্তিনেজদের১৫ এপ্রিল ২০২৫

সেজনির সঙ্গে অবশ্য বার্সার চুক্তি বাড়ানোর কথা শোনা যাচ্ছে। তবে মৌসুমের লম্বা সময়ের দিকে তাকালে বার্সার বিকল্প গোলরক্ষকের প্রয়োজনীয়তাও আছে। আর সেই বিকল্প হিসেবেই কাতালান ক্লাবটি চায় সেজনিকে।

দর্শকদের প্রতি করতালি দেওয়ার সময় কেঁদে ফেলেন মার্তিনেজ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স জন র

এছাড়াও পড়ুন:

কুড়িগ্রামে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, ভাঙনে দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ

কুড়িগ্রামে গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজানের ঢলে তিস্তা, জিঞ্জিরাম, দুধকুমার ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব অঞ্চলের তীরবর্তী এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় কাউন, ধান, বাদাম, পেঁয়াজসহ সবজি ক্ষেত ডুবে যাচ্ছে। জিঞ্জিরাম নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় একটি কাঠের সাঁকো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষজন। 

আজ সোমবার সকালে সরেজমিনে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা পাড়ের দলদলিয়া, থেতরাই, বেগমগঞ্জ, মোল্লারহাট, সরিষাবাড়ী, বিদ্যানন্দ এলাকাগুলোতে দেখা যায়, টানা ভারি বৃষ্টির কারণে পানি বেড়ে যাওয়াতে এসব এলাকার আবাদি ফসল ডুবে গেছে। কৃষকেরা তাড়াহুড়ো করে আধা-পাকা ধান কেটে নিচ্ছেন।

কেউ কেউ অপরিপক্ব পেঁয়াজ ও বাদাম ক্ষেত থেকে তুলে নিচ্ছেন। বেশিরভাগ কৃষক অন্যান্য আবাদি ফসল তুলতে না পারায়, তিস্তার পানিতে এসব ডুবে গিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন অনেক কৃষক।

রাজারহাটের তিস্তাপাড়ের কৃষক মো. ফয়জার আলী সমকালকে বলেন, ‘আর ১৪টা দিন গেলে বাদাম গুল্যা ঘরত তুলবের পালুং (পেলাম) হয়। সর্বনাশা তিস্তার পানি হঠাৎ আসি সোগ (সব) ভাসি (ডুবে) গেইল।’ 

আরেক কৃষক হবিবর রহমান বলেন, ‘আমি ৫ বিঘা জমিত এবার কাউন আবাদ করছি। কাউনগুল্যা কোমলায় (অপরিপক্ব) আছে। তিস্তার পানির কারণে সোগ ডুবি গেছে। মোর মেল্যা (অনেক) টেকা ক্ষতি হইল।’

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ার সঙ্গে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লার হাটের দেড়শত বসতভিটা, আবাদি ফসল ও বিদ্যুতের খুঁটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় তিনশত বসতভিটা। ভাঙনের হাত থেকে সম্পদ রক্ষার জন্য বাসিন্দারা অপরিপক্ব গাছ কেটে ফেলছেন, ঘর-বাড়ি সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। ভিটে-মাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে বেগমগঞ্জ এলাকার কয়েকটি পরিবার। 


উলিপুরের ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বাসিন্দা আছিয়া বেগম বলেন, ‘হামার ১৫ বিঘা জমি সোগ ভাঙি গেছে। আবাদি ফসল, ভিটে-মাটি ভাঙছে। আত্মীয়র বাসায় উঠছি।’


আরেক বাসিন্দা সাজু মিয়া বলেন, ‘আমার তিনটা ঘর, সুপারির বাগান সব ভেঙে নদীতে গেছে। এবারি আমার প্রথম ভাঙন হয়। আমার কোনো প্রস্তুতি ছিল না। বাকি ফলের গাছগুলো কেটে নিচ্ছি।’


এদিকে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী ৫ দিন জেলার প্রধান ৪ নদ-নদী তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের পানি বাড়তে পারে। পানি বাড়ার কারণে এসব অঞ্চলের নীচু চরাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 


পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, আগামী ৫ দিন রংপুর ও ভারতের মেঘালয় ও আসামে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় কুড়িগ্রামের এই চার নদ-নদীতে পানিবৃদ্ধি পেতে পারে। তবে পানি বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে জেলায় আগামী এক সপ্তাহে বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাবনা নেই বলেও তিনি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ