ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত করেছেন ৮৬০ গোল। নান্দনিক এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে করা গোলের সংখ্যাও কম নয়। এর মধ্যে একটি গোল বেছে নেওয়া শুধু চ্যালেঞ্জিংই নয়, অস্বস্তিরও বটে। নিজের করা এত এত গোল থেকে প্রিয় গোল বেছে নেওয়া নিশ্চয়ই সহজ ব্যাপার নয়। কিন্তু সেই কঠিন কাজটাই শেষ পর্যন্ত করলেন লিওনেল মেসি। বেছে নিলেন নিজের করা সবচেয়ে প্রিয় গোলটি।

নিজের পছন্দের গোল বেছে নিতে গিয়ে বেশ চমক দিয়েছেন মেসি। হেডে খুব কমই গোল করেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। সব মিলিয়ে হেডে তিনি এখন পর্যন্ত করেছেন মাত্র ২৮ গোল। বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর হেডে গোলের সংখ্যা ১৫৪টি।

এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে হেড মেসিকে অতটা টানে না এবং এভাবে গোল করায় তিনি অতটা শক্তিশালিও নন। তবে নিজের দুবর্লতার প্রতি মানুষের নাকি বাড়তি মায়া থাকে। সেই মায়ার টানেই কি না মেসি নিজের পছন্দের গোল হিসেবে বেছে নিলেন হেডে করা একটি গোলকে।

আরও পড়ুনমেসি বেছে নেবেন নিজের প্রিয় গোল, আপনার পছন্দের কোনটি১৪ মে ২০২৫

২০০৯ সালে নিজের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পথে ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে গোলটি করেছিলেন মেসি। সেদিন ম্যাচের ৭০ মিনিটে ডান প্রান্তে বক্সের কাছাকাছি জায়গা থেকে ক্রস করেন জাভি হার্নান্দেজ। অরক্ষিত মেসি লাফিয়ে উঠে হেড দিয়ে বল জালে জড়ান। সেই গোলে ২–০ তে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা এবং পরে চ্যাম্পিয়নস লিগও জিতে নেয়।

সাধারণ চোখে এই গোল আহামরি কিছু নয়। ২০১৫ সালের কোপা দেল রে ফাইনালে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে তিনজনকে কাটিয়ে করা গোল, ২০১৮ সালের কোপা দেল রে সেমিফাইনালে হেতাফের বিপক্ষে ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে মনে করিয়ে দিয়ে করা গোল কিংবা ২০১০-১১ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে দুর্দান্ত গোলের সামনে এই গোল অনেকের কাছে বিশেষ মনে নাও হতে পারে।

মেসি অবশ্য এই গোলকে নিজের প্রিয় গোল হিসেবে বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে,  ‘আমার অনেক গোল আছে যেগুলো সম্ভবত এই গোলের চেয়ে অনেক সুন্দর এবং অনেক বেশি মূল্যবান। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে করা এই হেডারটিই আমার সব সময়ের পছন্দের।’

মেসি এই গোলটি বেছে নিয়েছেন ইন্টার মায়ামি ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে ‘গোল ইন লাইফ’ নামের দাতব্য কাজের জন্য। এই গোলটিকে এখন চিত্রকর্মে রূপ দেওয়া হবে এবং এরপরই সেই চিত্রকর্মকে দাতব্য কাজের জন্য নিলামে তোলা হবে।

আরও পড়ুনবিশ্রামের ফাঁকে ফাঁকে খেলাটাই এখন মেসির নিয়তি০৯ অক্টোবর ২০২৪

গোলের সেই চিত্রকর্মে মেসি এবং শিল্পী রেফিক আনাদোলের স্বাক্ষরও থাকবে, যা আগামী ১১ জুন নিলাম প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টির মাধ্যমে নিউইয়র্কে উন্মোচন করা হবে। নিলাম শেষ হবে আগামী ১১ জুলাই।

এই নিলাম নিয়ে মেসি বলেছেন, ‘আমি জানি রেফিকের কাজ কতটা বিশেষ। আমরা মায়ামিতে দেখা করছিলাম এবং এখন সে কীভাবে এই গোলটিকে, খেলার মুহূর্তটিকে একটি অনন্য শিল্পকর্মে  রূপ দিতে পারে সে আবিস্কার করা রোমাঞ্চকর ব্যাপার হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পছন দ র ফ ইন ল এই গ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রোনালদোর অদম্য ক্ষুধা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতালেন আল-নাসরকে

চলতি বছরের শুরুতে ৪০ পেরিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তার পা যেন বয়সকে পাত্তাই দেয় না। ফুটবল মাঠে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর উপস্থিতি মানেই উত্তেজনা, প্রত্যাশা আর গোলের গন্ধ। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। এক প্রীতি ম্যাচে ফরাসি ক্লাব তুলুজের বিপক্ষে দারুণ এক গোল করে দলকে জয় এনে দিলেন পর্তুগিজ তারকা।

অস্ট্রিয়ার আন্টার্সবার্গ-অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত এই গ্রীষ্মকালীন ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়েছিল সৌদি ক্লাব আল-নাসর। ম্যাচের ২৫তম মিনিটে ইয়ান বোহোর গোলে এগিয়ে যায় তুলুজ। কিন্তু খেলা তখনও শেষ হয়নি। কারণ, মাঠে ছিলেন রোনালদো।

৮ মিনিট পরই পাল্টা জবাব দেন আল-নাসরের ফরোয়ার্ড ওয়েসলি। প্রতিপক্ষের রক্ষণের ফাঁক গলে তার পাস পেয়ে বল জালে জড়ান রোনালদো, দারুণ এক ওয়ান টাচ ফিনিশে। সমতায় ফেরার পর আল-নাসরের খেলায় আসে নতুন ছন্দ।

আরো পড়ুন:

মেসির জাদুতে জয়ে ফিরল ইন্টার মায়ামি, ডি পলের অভিষেকে উচ্ছ্বাস

মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়সূচি ঘোষণা

দ্বিতীয়ার্ধে একাধিকবার সুযোগ তৈরি করেন রোনালদো। একটি সুযোগ তো প্রায় নিশ্চিত গোল হয়ে যেত, যদি না জোয়াও ফেলিক্সের সঙ্গে বোঝাপড়ায় সামান্য ভুল হতো। বাঁ দিক থেকে আসা ক্রসটিতে দুজনই একসঙ্গে পা লাগাতে গিয়ে গোলটা মিস করেন।

তবে ম্যাচে তার প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। একাধিকবার দূরপাল্লার শটে তুলুজ গোলরক্ষককে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন। শুধু গোলই নয়, তার দৌড়, পাস, আর শারীরিক ভাষা বুঝিয়ে দিচ্ছিল; তিনি থামার মতো কেউ নন।

৭৬তম মিনিটে মোহাম্মদ মারান দুর্দান্ত এক হেডে আল-নাসরের জয় নিশ্চিত করেন। নাওয়াফ বুশালের দুর্দান্ত ক্রসে ভেসে ওঠা হেডটি সোজা গোললাইনের ভেতর গিয়ে জড়ায়।

ম্যাচ শেষে রোনালদো ফেসবুকে নিজের ‘সিউ’ উদযাপনের ছবি পোস্ট করে লেখেন, “এই ক্ষুধা কখনোই শেষ হবে না। আমরা কেবল শুরু করেছি।” তার এই বার্তা যেন একধরনের হুঙ্কার, এক নতুন লড়াইয়ের ইঙ্গিত।

আল-নাসরে যোগ দেওয়ার পর বড় কোনো শিরোপা জেতা না গেলেও রোনালদো থেমে থাকেননি। গত মৌসুমে সব মিলিয়ে ৩৫টি গোল করেছেন ক্লাবটির হয়ে। এবার নতুন চুক্তি অনুযায়ী ২০২৭ সাল পর্যন্ত আল-নাসরে থাকছেন। লক্ষ্য এবার আরও বড়; ট্রফি জয় এবং ক্যারিয়ারে ১০০০ গোলের ঐতিহাসিক মাইলফলক স্পর্শ করা।

আল-নাসরের পরবর্তী প্রীতি ম্যাচ আগামী ১০ আগস্ট, স্পেনের পাওয়ার হর্স স্টেডিয়ামে লা লিগার ক্লাব আলমেরিয়ার বিপক্ষে। আর মৌসুমের প্রথম বড় লড়াই শুরু ১৯ আগস্ট, সৌদি সুপার কাপের সেমিফাইনালে আল-ইত্তিহাদের বিপক্ষে। সেই লড়াইয়ের আগে রোনালদোর এই বার্তা একটাই— তাকে এখনো অনেক কিছু জিততে হবে!

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ