মেসির সবচেয়ে পছন্দের গোল কোনটি জানলে অবাক হবেন
Published: 23rd, May 2025 GMT
ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত করেছেন ৮৬০ গোল। নান্দনিক এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে করা গোলের সংখ্যাও কম নয়। এর মধ্যে একটি গোল বেছে নেওয়া শুধু চ্যালেঞ্জিংই নয়, অস্বস্তিরও বটে। নিজের করা এত এত গোল থেকে প্রিয় গোল বেছে নেওয়া নিশ্চয়ই সহজ ব্যাপার নয়। কিন্তু সেই কঠিন কাজটাই শেষ পর্যন্ত করলেন লিওনেল মেসি। বেছে নিলেন নিজের করা সবচেয়ে প্রিয় গোলটি।
নিজের পছন্দের গোল বেছে নিতে গিয়ে বেশ চমক দিয়েছেন মেসি। হেডে খুব কমই গোল করেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। সব মিলিয়ে হেডে তিনি এখন পর্যন্ত করেছেন মাত্র ২৮ গোল। বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর হেডে গোলের সংখ্যা ১৫৪টি।
এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে হেড মেসিকে অতটা টানে না এবং এভাবে গোল করায় তিনি অতটা শক্তিশালিও নন। তবে নিজের দুবর্লতার প্রতি মানুষের নাকি বাড়তি মায়া থাকে। সেই মায়ার টানেই কি না মেসি নিজের পছন্দের গোল হিসেবে বেছে নিলেন হেডে করা একটি গোলকে।
আরও পড়ুনমেসি বেছে নেবেন নিজের প্রিয় গোল, আপনার পছন্দের কোনটি১৪ মে ২০২৫২০০৯ সালে নিজের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পথে ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে গোলটি করেছিলেন মেসি। সেদিন ম্যাচের ৭০ মিনিটে ডান প্রান্তে বক্সের কাছাকাছি জায়গা থেকে ক্রস করেন জাভি হার্নান্দেজ। অরক্ষিত মেসি লাফিয়ে উঠে হেড দিয়ে বল জালে জড়ান। সেই গোলে ২–০ তে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা এবং পরে চ্যাম্পিয়নস লিগও জিতে নেয়।
সাধারণ চোখে এই গোল আহামরি কিছু নয়। ২০১৫ সালের কোপা দেল রে ফাইনালে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে তিনজনকে কাটিয়ে করা গোল, ২০১৮ সালের কোপা দেল রে সেমিফাইনালে হেতাফের বিপক্ষে ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে মনে করিয়ে দিয়ে করা গোল কিংবা ২০১০-১১ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে দুর্দান্ত গোলের সামনে এই গোল অনেকের কাছে বিশেষ মনে নাও হতে পারে।
মেসি অবশ্য এই গোলকে নিজের প্রিয় গোল হিসেবে বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে, ‘আমার অনেক গোল আছে যেগুলো সম্ভবত এই গোলের চেয়ে অনেক সুন্দর এবং অনেক বেশি মূল্যবান। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে করা এই হেডারটিই আমার সব সময়ের পছন্দের।’
মেসি এই গোলটি বেছে নিয়েছেন ইন্টার মায়ামি ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে ‘গোল ইন লাইফ’ নামের দাতব্য কাজের জন্য। এই গোলটিকে এখন চিত্রকর্মে রূপ দেওয়া হবে এবং এরপরই সেই চিত্রকর্মকে দাতব্য কাজের জন্য নিলামে তোলা হবে।
আরও পড়ুনবিশ্রামের ফাঁকে ফাঁকে খেলাটাই এখন মেসির নিয়তি০৯ অক্টোবর ২০২৪গোলের সেই চিত্রকর্মে মেসি এবং শিল্পী রেফিক আনাদোলের স্বাক্ষরও থাকবে, যা আগামী ১১ জুন নিলাম প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টির মাধ্যমে নিউইয়র্কে উন্মোচন করা হবে। নিলাম শেষ হবে আগামী ১১ জুলাই।
এই নিলাম নিয়ে মেসি বলেছেন, ‘আমি জানি রেফিকের কাজ কতটা বিশেষ। আমরা মায়ামিতে দেখা করছিলাম এবং এখন সে কীভাবে এই গোলটিকে, খেলার মুহূর্তটিকে একটি অনন্য শিল্পকর্মে রূপ দিতে পারে সে আবিস্কার করা রোমাঞ্চকর ব্যাপার হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পছন দ র ফ ইন ল এই গ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের
বিশ্বের সবচেয়ে জটিল কিছু সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। একই সঙ্গে তিনি ‘স্বৈরাচারের (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন’ দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান। খবর বিবিসির।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের প্রথম দিনে উইন্ডসর ক্যাসলে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন রাজা।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, এ সম্পর্ককে ‘বিশেষ’ শব্দ দিয়ে যথাযথভাবে বোঝানো যায় না।
উইন্ডসর ক্যাসলে ১৬০ জন অতিথির জন্য আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ এই নৈশভোজে রাজার বক্তৃতায় দুই দেশের গভীর বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।
ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় এ সফর চলবে আজ বৃহস্পতিবারও। এদিন নানা অনুষ্ঠানে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে অংশ নেবেন ব্রিটিশ রানি ক্যামিলা ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস।
রাজকীয় অ্যাপায়ন শেষে ট্রাম্পের আজকের কর্মসূচি রাজনৈতিক আলোচনায় রূপ নেবে। আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার সরকারি বাড়ি চেকার্সে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও হবে।
বুধবারের (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় ভোজ ছিল আড়ম্বর ও রাজনীতির সমন্বয়ে সাজানো এক বিশেষ আয়োজন। ভোজে রাজা, রানি ও রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের উপস্থিতিতে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয় উইন্ডসরে।
উইন্ডসর ক্যাসলের মনোরম প্রাঙ্গণে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মেলানিয়া রাজকীয় ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামেন। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো সেনাদলের অভিবাদন গ্রহণ করেন তারা।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।
যুক্তরাষ্ট্রের অতিথিকে স্বাগত জানাতে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলসও উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রেসিডেন্ট ও মেলানিয়ার সঙ্গে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ এক বৈঠকও করেন।
ভোজসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রিন্স উইলিয়ামের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তিনি হবেন ‘অসাধারণ সফল নেতা’। প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিনকে তিনি আখ্যা দেন ‘উজ্জ্বল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও সুন্দরী’ হিসেবে।
ট্রাম্পের ঐতিহাসিক এ দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর প্রমাণ করেছে রাজা ও তাঁর মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। সফরে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মুহূর্তও দেখা গেছে।
এরপর রাজপ্রাসাদে ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানান রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা। ট্রাম্প যখন রাজার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ছয়টি কামান থেকে একযোগে ৪১ বার তোপধ্বনি করা হয়। একই সময়ে টাওয়ার অব লন্ডন থেকে একই রকম তোপধ্বনি হয়।
ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানানোর এ আয়োজনে অংশ নেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ১ হাজার ৩০০ সদস্য। ছিল শতাধিক ঘোড়া।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।
বিবিসি বলছে, রাজকীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা থাকবে।
যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফর হলো একধরনের নরম শক্তির কূটনীতি, যা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য রাজকীয় আকর্ষণ ব্যবহার করে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কেউ নেই।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর্থিক সেবা, প্রযুক্তি এবং জ্বালানি খাতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় গড়ে তুলে যুক্তরাজ্যকে আমেরিকান বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে চাইছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর শুরু হওয়ার সাথে সাথে, মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের একটি বড় প্রযুক্তি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে মাইক্রোসফট থেকে ২২ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং পারমাণবিক শক্তিতে সহযোগিতা দেখা যাবে।
ট্রাম্পের সফরের আগে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট যুক্তরাজ্যের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প-স্টারমারের বৈঠক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক চুক্তির ঘোষণাও আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ