আজ কান চলচ্চিত্র উৎসবের জমকালো পর্দায় ভেসে উঠল বাংলাদেশের এক শান্ত অথচ সাহসী গল্প। আদনান আল রাজীব পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘আলী’ আজ প্রদর্শিত হলো বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র আসর কান উৎসব-এ, এবং এই সঙ্গে ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বলে অক্ষরে লেখা হয়ে গেল বাংলাদেশের নতুন এক অধ্যায়।
একটি কিশোর, একটি গান, একটি প্রতিবাদ
সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র আলী — উপকূলের এক নিষিদ্ধ গানে আশ্রয় নেওয়া কিশোর, যে নিজের কণ্ঠে বাঁচার, বদলানোর, এবং পালানোর গল্প বলে। এমন এক সমাজে, যেখানে নারীদের গান গাইতে দেওয়া হয় না, সেখানেই আলী গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চায়। এই সরল ইচ্ছার পেছনে লুকিয়ে থাকে ইতিহাসের গা ছমছমে স্তর, প্রশ্ন তোলে পরম্পরা ও প্রতিরোধের।
বাংলাদেশি হৃদয়, বিশ্বমঞ্চের কণ্ঠস্বর
‘আলী’ শুধু একটি সিনেমা নয়- এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও মানবিক অভিব্যক্তির এক চিত্রপট, যা আজ কান উৎসবের দর্শক-সমালোচকদের চোখে এক চমকজাগানো বাস্তবতার মুখ তুলে ধরেছে। সিনেমাটি প্রদর্শিত হয় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা বিভাগে- যেখানে মনোনয়ন পাওয়াটাই এক বিরল কৃতিত্ব। প্রদর্শনীর পরপরই দারুণ প্রশংসা পেয়েছে সিনেমাটি। অনেকে বলছেন,“আলী যেন আমাদের সেই অতলান্ত সত্তা, যা গানের সুরে খুঁজে পায় নিজেকে।”
প্রদর্শনীর পরপরই পরিচালক আদনান আল রাজীব বললেন, “আমি সবসময় বিশ্বাস করি, যখন আপনি সত্য বলেন, সেটি সবাই উপলব্ধি করতে পারে—ভাষা, দেশ, সংস্কৃতির গণ্ডি ছাড়িয়ে। আমি ভয় পাইনি, কারণ আমি জানি এটি আমার সত্য। আজ বিশ্ব সেটিকে শুনল, দেখল।”
তিনি আরও বলেন, “এটা শুধু আমার একক যাত্রা নয়। এটা আমাদের সবার গল্প-যারা স্বপ্ন দেখে, প্রতিবাদ করে, নিজের ভাষায় কথা বলতে শেখে।”
এক সিনেমা, শত প্রশ্ন, অনন্ত প্রতিধ্বনি
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন আলী ও তার মায়ের সম্পর্ক নিয়ে, গান ও প্রতিবাদের জটিলতা নিয়ে। সেই আলোচনা আজ কান উৎসবের করিডোর পেরিয়ে পৌঁছে গেছে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের মধ্যেও।
স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রতিযোগিতা বিভাগে এটি বাংলাদেশের প্রথম অংশগ্রহণ, যা ইতিমধ্যেই জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক গর্ব। ‘আলী’ হয়তো পুরস্কার জিতবে কি না, সেটা সময় বলবে। তবে আজকের এই মুহূর্ত—কান উৎসবের বিশাল পর্দায় ভেসে ওঠা আলীর চোখ, তার কণ্ঠে উচ্চারিত গান, এবং তার যন্ত্রণার ছায়া—এই সবই বলছে, সে-ই তো বাংলাদেশের এক খণ্ড চেতনা।
‘আলী’ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ছোট গল্পেও থাকে বিশাল সাহস। আজ কান উৎসবের সেই বিশাল মঞ্চে দাঁড়িয়ে, বাংলাদেশের এক কিশোর আমাদের মনে করিয়ে দিল—নিজের সত্য বলা মানেই নিজের মুক্তি খুঁজে পাওয়া।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ন চলচ চ ত র উৎসব ক ন উৎসব র চলচ চ ত র প রদর শ আম দ র আজ ক ন
এছাড়াও পড়ুন:
ডাইনির সাজে শাবনূর!
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। মাঝেমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের মাধ্যমে নিজের খবর জানান দেন তিনি। এবার সেই পর্দার প্রিয় নায়িকা হাজির হয়েছেন এক ভিন্ন সাজে—ডাইনির রূপে!
প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী হ্যালোইন উৎসব। পশ্চিমা বিশ্বে এটি এক জনপ্রিয় দিন, যেখানে মানুষ নানা ভুতুড়ে সাজে নিজেদের উপস্থাপন করে। যদিও অনেকেই মনে করেন এটি কেবল ভূতের সাজের উৎসব, আসলে মৃত আত্মাদের স্মরণেই হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী এ দিনটি উদযাপিত হয়।
আরো পড়ুন:
পর্দায় ‘মহল্লা’র ভালো-মন্দ
বাবা হওয়ার কোনো বয়স আছে? সত্তরে কেলসির চমক
সেই উৎসবের আমেজে এবার শামিল হয়েছেন শাবনূরও। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ছবিতে দেখা গেছে, ছেলে আইজানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সেজেছেন ভয়ংকর এক ডাইনির সাজে—চোখের কোণ বেয়ে নেমে আসছে লাল রক্তের রেখা, সঙ্গে এক ‘ভূতুড়ে’ চেহারার চরিত্র।
ছবির ক্যাপশনে শাবনূর লিখেছেন, “আমি সাধারণ মা নই, আমি একজন দুর্দান্ত মা—যিনি একজন ডাইনিও! হ্যালোইনের শুভেচ্ছা, বাচ্চারা!”
পোস্টের শেষে তিনি যোগ করেছেন, “এটা শুধু মজা করার জন্য।”
ভক্তরা কমেন্টে ভরিয়ে দিয়েছেন শুভেচ্ছা ও প্রশংসায়। কেউ লিখেছেন, “শাবনূর মানেই চমক,’ কেউ আবার জানিয়েছেন, ‘হ্যালোইনেও আপনি আমাদের শাবনূরই—ভালোবাসা রইল।”
ঢাকা/রাহাত/লিপি