ভারতের আসাম রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী সন্দেহে প্রায় দেড়শ জনকে আটক করেছে রাজ্য পুলিশ। শনিবার (২৪ মে) রাতে গুয়াহাটি ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আসাম ট্রিবিউন জানিয়েছে, অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী সন্দেহে রাতারাতি ১৫০ জনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই অভিযানের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের এ ধরনের আচরণকে ‘হয়রানি’ বলে অভিযোগ করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন কর্মকর্তা আসাম ট্রিবিউনকে বলেন, “আটক ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সন্ধ্যার মধ্যে আমরা একটা পরিষ্কার চিত্র দিতে পারব।” 

আরো পড়ুন:

মুকুল দেবের সংসার কেন ভেঙেছিল?

‘জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি এখন ভারত’

আটক ব্যক্তিদের বিরুবাড়ির পুলিশ রিজার্ভ ক্যাম্পে রাখা হয়। সেখানে আটককৃতদের পরিবারের সদস্যরা তাদের মুক্তির জন্য আবেদন করার সময় দিনভর আবেগঘন দৃশ্য দেখা যায়। বিপর্যস্ত পরিবারের সদস্যরা কাগজপত্রের স্তূপ নিয়ে জড়ো হয়ে উত্তর খুঁজছিলেন। অনেকেই ক্লান্তি ও হতাশায় ভেঙে পড়েন। 

সকাল থেকে অপেক্ষা করা এক নারী বলেন, “কোনো এফআইআর ছাড়াই, কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই তারা আমার ভাইকে তুলে নিয়ে গেছে।” তিনি আরো বলেন, “তারা আমাকে সকাল ৯টায় কাগজপত্র নিয়ে ফিরে আসতে বলে। আমি যখন ফিরে আসি, তখন দেখি আমার ভাইকে পুলিশ ভ্যানের ভেতরে হাতকড়া পরা অবস্থায়। যদি এটা কেবল যাচাইকরণের জন্য হয়, তাহলে হাতকড়া কেন?

তিনি স্পষ্টতই হতবাক হয়ে বলেন, “এটা বেআইনি ও অগ্রহণযোগ্য।”

আটক ব্যক্তিদের অনেকেই নিজেদের ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করেন- আসামে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছেন।

আটককৃতদের মধ্যে এক তরুণ বলেন, “আমাদের সব নথি যাচাই করা। তবুও, তারা আমাদের অবৈধ বলে।” ওই তরুণের পিতাও আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত, গ্রেপ্তার, নথিপত্র যাচাই ও ভারত থেকে বহিষ্কারের জন্য ৩০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়। এর পরপরই আসামসহ বিভিন্ন রাজ্যে এ ধরনের অভিযান শুরু হয়। 

জেলা কালেক্টর ও জেলা প্রশাসকদের যাচাইয়ের সময়কালে এই ধরনের ব্যক্তিদের আটক কেন্দ্রে রাখার জন্য বলা হয়েছে।

আসাম ট্রিবিউন জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিরুবাড়ি রিজার্ভের পুলিশ তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে মুখে কুলুপ এঁটেছিল, এমনকি বাইরের পরিবেশ ক্রমশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠা সত্ত্বেও।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। 

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। 

বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি। 

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক। 

পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। 

একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক। 

সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে ছিনতাইকারী সন্দেহে আটক ১ 
  • জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক