কার্লো আনচেলত্তির অধীনে কেমন ফুটবল খেলবে ব্রাজিল? ইতালিয়ান এই কোচ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রশ্নটি উঠেছে। আনচেলত্তি নিজেই তার উত্তর দিয়েছেন স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে। রিয়াল মাদ্রিদের খেলার ধাঁচে তিনি খেলাতে চান ব্রাজিলকে।

তবে একটা কিন্তু আছে। সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে মাদ্রিদের ক্লাবটি যেমন ফুটবল খেলেছে তেমন নয়, তার আগের মৌসুমে যেমন খেলেছে ব্রাজিলকে সেভাবেই খেলাতে চান আনচেলত্তি।

আরও পড়ুনদুর্বৃত্তদের হুমকির এক বছর পর শৈশবের ক্লাবে ফিরলেন দি মারিয়া৪৬ মিনিট আগে

দ্বিতীয় মেয়াদে চার বছর রিয়াল কোচের দায়িত্ব পালন করে এ মৌসুম শেষে ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন আনচেলত্তি। সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে তাঁর অধীনে বড় কোনো ট্রফি জিততে পারেনি রিয়াল। উয়েফা সুপার কাপ ও ফিফা ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ জিতেছে। চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে এবং লা লিগায় হয়েছে দ্বিতীয়। হেরেছে কোপা দেল রে এবং স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনাল।

ওরা বিশ্বের সেরা জাতীয় দল। আমি বলছি সে জন্য নয়, ওদের জার্সিতে পাঁচটি তারকা আছে। এখন আমার সামনে ষষ্ঠটি (বিশ্বকাপ) জেতানোর চ্যালেঞ্জ। ইতালি? এ মুহূর্তে আমার স্প্যালেত্তি তাঁদের কোচিং করাচ্ছেন এবং তিনি গ্রেট কোচ। তারা (ইতালি) আমাকে ডাকেনি, যেটা ব্রাজিল বহু আগেই করেছে।ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি

কিন্তু তার আগের মৌসুমে (২০২৩–২৪) লা লিগা, চ্যাম্পিয়নস লিগ ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতেছে রিয়াল। আনচেলত্তি সে মৌসুমের রিয়ালের মতো খেলাতে চান ব্রাজিলকে, ‘আমার ব্রাজিল রিয়াল মাদ্রিদের মতো খেলবে। কিন্তু এ বছরের রিয়াল মাদ্রিদের মতো নয়, গত বছরের রিয়াল মাদ্রিদের মতো। আমি এটাই চাই। আমি জানি ব্যাপারটা নির্ভর করে খেলোয়াড়দের ওপর। মাঠে তাদের স্বস্তিতে থাকতে দিতে হবে। দলের শুধু একটি পরিচিতি থাকবে সেটা আমার অপছন্দ, আর তা স্মার্টও নয়।’

আরও পড়ুনআর্জেন্টিনার ১০ নম্বর জার্সি উঠেছিল যে গোলকিপারের গায়ে১ ঘণ্টা আগে

৬৫ বছর বয়সী আনচেলত্তি ইতিহাসেরই সেরা কোচদের একজন। সর্বোচ্চ পাঁচবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের ইতিহাস গড়া এই কোচ কখনো তাঁর জন্মভূমি ইতালির জাতীয় ফুটবল দলের দায়িত্ব নেননি। সেটি কেন এবং ব্রাজিলের দায়িত্ব কেন নিলেন, এ প্রশ্নের উত্তরে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘এটা সহজ। ওরা বিশ্বের সেরা জাতীয় দল। আমি বলছি সে জন্য নয়, ওদের জার্সিতে পাঁচটি তারকা আছে। এখন আমার সামনে ষষ্ঠটি (বিশ্বকাপ) জেতানোর চ্যালেঞ্জ। ইতালি? এ মুহূর্তে আমার স্প্যালেত্তি তাঁদের কোচিং করাচ্ছেন এবং তিনি গ্রেট কোচ। তারা (ইতালি) আমাকে ডাকেনি, যেটা ব্রাজিল বহু আগেই করেছে।’

মার্কা জানিয়েছে, চারজন নিরাপত্তারক্ষীসহ আনচেলত্তির যাতায়াতের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়িও দিয়েছে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। গত সোমবার ব্রাজিলের কোচ হিসেবে তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেয় সিবিএফ। সাও পাওলোর করিন্থিয়ান্স অনুশীল সেন্টারে আগামী সোমবার প্রথমবারের মতো ব্রাজিল দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে অনুশীলনে নামবেন আনচেলত্তি।

আনচেলত্তির প্রথম পরীক্ষা বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আগামী ৫ জুন ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচ। ১০ জুন পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে। দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পয়েন্ট তালিকার চারে ব্রাজিল। এই মহাদেশ থেকে শীর্ষ ছয় দল সরাসরি খেলবে ২০২৬ বিশ্বকাপে। সপ্তম দলকে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফ বাধা টপকে খেলতে হবে বিশ্বকাপে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র য় ল ম দ র দ র মত ব র জ লক ব শ বক প আম র স ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ