সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে স্থানীয় উৎপাদনে চাহিদা পূরণ সম্ভব
Published: 1st, June 2025 GMT
সমকাল: আপনারা কেন বাইসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিতে এলেন? আকিজ বাইসাইকেলের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ জয়নুল আবেদীন: বাইসাইকেল শিল্প একটি সম্ভাবনাময় খাত। দেশের পাশাপাশি বহির্বিশ্বেও এর বড় একটি বাজার রয়েছে। দেশের মোট চাহিদার অর্ধেকেরই বেশি এখনও আমদানিনির্ভর। ফলে আমরা দেখেছি, এখানে যদি গ্রাহকের চাহিদামতো পণ্য উৎপাদন করা যায়, তাহলে এ খাতে ভালো করা সম্ভব। আমরা মান নিশ্চিত করে দেশের গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী দামে বাইসাইকেল দিচ্ছি। বাইসাইকেলের কাঁচামাল এবং মেশিনারিজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। যার মধ্যে নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইতালি, জাপান, তাইওয়ান, চীন, ভারত অন্যতম। এ জন্য খুব দ্রুত আমরা গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছি। ২০২৩ সালের মে মাসে যাত্রা শুরু করে আমরা দ্রুত স্থানীয় বাজারের প্রায় ১০ শতাংশ দখলে নিতে পেরেছি। আমরা আশা করছি, যে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি, সেটি ধরে রেখে দ্রুত এগোতে পারব।
সমকাল: স্থানীয় বাজারের বড় অংশ এখনও আমদানিনির্ভর। এই নির্ভরতা কমাতে আপনাদের পরিকল্পনা কী?
সৈয়দ জয়নুল আবেদীন: দেখুন, আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইতোমধ্যে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। দ্রুতই বাজারে এর প্রভাব পড়বে বলে বিশ্বাস করি। আমরা ন্যূনতম ৬ হাজার ৯০০ টাকায় বাইসাইকেল দিচ্ছি। আবার ৪৫ হাজার টাকাতেও আমাদের বাইসাইকেল রয়েছে। ফলে দেশের সব শ্রেণির গ্রাহকের জন্যই আমাদের বাইক রয়েছে। আমরা ইলেকট্রিক, স্পোর্টস, রেসিং, ফ্যাট, ফোলডিং ইত্যাদি ক্যাটেগরিতে বাইসাইকেল উৎপাদন এবং বাজারজাত করছি। আশা করছি এর প্রভাব বাজারে পড়বে।
সমকাল: বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা?
সৈয়দ জয়নুল আবেদীন: বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়াতেও আমরা কাজ করছি। বাইসাইকেল পরিবেশবান্ধব এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক একটি যান। ফলে উন্নত বিশ্বে দিন দিন কিন্তু বাইসাইকেলের কদর বাড়ছে। আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে, আমরা স্বল্প দূরত্বেও রিকশা কিংবা অন্য যানবাহন ছাড়া চলতে পারি না। এ ধরনের অভ্যাস বদলে বাইসাইকেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাইসাইকেলের এই গুরুত্ব তুলে ধরছি। আমরা সব সময় তারুণ্যের চঞ্চলতা ও সুস্থ বিনোদনকে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গত বছর আমরা ‘আকিজ বাইসাইকেল স্পোর্টস ফেস্ট ২০২৪’ আয়োজন করি। এ ধরনের কার্যক্রম আমরা অব্যাহত রাখব।
সমকাল: দেশীয় বাইসাইকেলের বাজার বাড়াতে সরকারের কাছে আপনাদের কোনো দাবিদাওয়া আছে কি?
সৈয়দ জয়নুল আবেদীন: সাইকেল শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে কিছু নীতি সহায়তা প্রয়োজন। উৎপাদনকারী কারখানার অনেক কাঁচামাল আমাদের আমদানি করতে হয়। এই কাঁচামালের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমানোর দাবি জানাই। রপ্তানি পর্যায়ে ইনসেনটিভও বাড়ানো প্রয়োজন। এ ছাড়া আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক সুবিধা এবং দ্রুততম সময়ে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সও নিশ্চিত করতে হবে।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: হাসান জাকির
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কালীগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, নিহত ১
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের জামাল ইউনিয়নের নাকোবাড়িয়া ও তালিয়ান গ্রামে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে মোহাব্বত আলী (৬০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পাঁচজন। রোববার ভোর থেকে বেলা ১২টা পর্ষন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত মোহাব্বত আলী বিএনপির কর্মী এবং নাকোবাড়িয়া গ্রামের হবিবার রহমানের ছেলে। সংঘর্ষে আহতদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ইউনুস আলী নামের একজনকে মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকাতে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে অবস্থান করলেও পরিস্থিতি এখনও শান্ত হয়নি। সংঘর্ষে আহত অন্যরা হলেন- নাকোবাড়িয়া গ্রামের ইউনুস আলী, রেজাউল ইসলাম, তোফাজ্জেল হোসেন, ছোট তালিয়ান গ্রামের রেফাজুল ইসলাম। আহতরা সবাই বিএনপি কর্মী বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নাকোবাড়িয়া ও তালিয়ান গ্রামে বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সর্বশেষ একটি পক্ষ শনিবার সকালে লাঠিসোঁটা অস্ত্র নিয়ে তালিয়ান ও নাকোবাড়িয়া এলাকায় মহড়া দেয়, যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এর জের ধরে রোববার ভোর থেকে এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর হামলা চালায়। এরপর দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ালে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সংঘর্ষে আহত পাঁচজনের মধ্যে মুমূর্ষ অবস্থায় মোহাব্বত আলীকে ঢাকাতে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। তাঁর মরদেহ কালীগঞ্জে ফেরত আনা হচ্ছে।
এদিকে আহতদের মধ্যে ইউনুস আলী নামে আরেকজনকে মুমুর্ষ অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যরা কালীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ টিম এলাকায় টহল দিচ্ছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ও হামিদুল ইসলাম হামিদের সমর্থক নেতাকর্মীরা দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে ওই সংঘর্ষে জড়ায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ টিম এখনও ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে রাখা আছে। তারা এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।