একজন প্রেসিডেন্টের স্বামীকে যখন হত্যা মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে হয়, তখন কী কী ঘটে? সদ্য প্রকাশিত রোমাঞ্চকর উপন্যাস ‘দ্য ফার্স্ট জেন্টেলম্যান’–এ সে গল্পই উঠে এসেছে।

উপন্যাসটির দুই লেখক সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং সর্বোচ্চ বিক্রির তালিকায় থাকা একাধিক বইয়ের লেখক জেমস প্যাটারসন।

ক্লিনটন ও প্যাটারসন দুজন উপন্যাসটি নিয়ে বিবিসির সঙ্গে আড্ডায় মেতেছিলেন, কথা বলেছেন বাস্তব রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও কল্পনার মিশেলে লেখা উপন্যাসটির নানা বিষয় নিয়ে।

তবে ‘দ্য ফার্স্ট জেন্টেলম্যান’ কেবল একটি আদালতকেন্দ্রিক নাটকীয় উপন্যাস নয়, বরং এটি সম্ভবত ইতিহাসের প্রথম রোমাঞ্চকর উপন্যাস, যার মূল কাহিনির কেন্দ্রে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ও ব্যয়ের ওপর একটি বৃহৎ রাজনৈতিক বিতর্ক।

‘দ্য ফার্স্ট জেন্টেলম্যান’ এমন একটি উপন্যাস, যা কেবল বিল ক্লিনটন ও জেমস প্যাটারসনের মতো অভিজ্ঞ ও প্রভাবশালী জুটিই লিখতে পারেন।

এর আগে ২০১৮ সালে এই জুটির লেখা ‘দ্য প্রেসিডেন্ট ইজ মিসিং’ (বিশ্বজুড়ে বইটির ৩০ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে) এবং ২০২১ সালে প্রকাশিত ‘দ্য প্রেসিডেন্টস ডটার’ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল।

এই দুজনের নতুন উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ম্যাডেলিন রাইট এবং তাঁর স্বামী কোল রাইট, যিনি একসময় পেশাদার আমেরিকান ফুটবলের তারকা খেলোয়াড় ছিলেন।

খেলোয়াড়ি জীবনের পুরোনো দাগ বয়ে বেড়ানো কোল হোয়াইট হাউসে নিজের ভূমিকা খুঁজে ফিরছেন। একই সঙ্গে তিনি ২০ বছরের বেশি পুরোনো এক হত্যার মামলায় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে লড়ছেন। এক চিয়ারলিডার হত্যা মামলায় কোল রাইটের নাম জড়িয়ে গেছে।

এটি একধরনের পুলিশি তদন্ত ও আদালত নাটকীতার মিশ্রণ; যেখানে সাংবাদিক, গোয়েন্দা ও রাজনৈতিক নেতারা চিয়ারলিডারকে হত্যা নিয়ে নানা কথা বলছেন। সত্য খুঁজে বের করতে নেমে পড়েছেন গোয়েন্দারা। ফার্স্ট জেন্টেলম্যান নির্দোষ প্রমাণিত হবেন নাকি তাঁকে ও তাঁর স্ত্রী প্রেসিডেন্ট রাইটের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেওয়া হবে—এ নিয়েই কাহিনির টানাপোড়েন।

মজার বিষয় হলো, ‘ফার্স্ট জেন্টেলম্যান’ চরিত্রটি এমন একটি কল্পনা, যা বাস্তবেও ঘটতে পারত, যদি ২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন জয়ী হতেন, তাহলে বিল ক্লিনটন হতেন আমেরিকার প্রথম ‘ফার্স্ট জেন্টেলম্যান’।

এমন নয় যে রিপাবলিকানরা যখন আমাকে অভিশংসনের চেষ্টা করেছিল, শুধু তখনই হোয়াইট হাউসে আমার কঠিন সময় গেছে। বরং হোয়াইট হাউসে এমন সময়ও এসেছে যে নানা বিতর্কিত ঘটনার কারণে আমাদের কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। সে সময়ে আমার মনে হতো, যাঁরা আমাকে নিয়ে খবর প্রকাশ করছেন, তাঁদের চোখে আমি যেন মানুষ নই, বরং ছিলাম একটা গল্পের রূপরেখা।’বিল ক্লিনটন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং লেখক

বিল ক্লিনটন বলেন, হোয়াইট হাউসে থাকাকালে কখনো কখনো তাঁর মনে হতো, যাঁরা তাঁকে নিয়ে খবর প্রকাশ করছেন, তাঁদের কাছে তিনি কোনো মানুষ নন, ছিলেন কেবল একটি গল্পের রূপরেখা।

১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বিল ক্লিনটন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে সেই অভিজ্ঞতা আজও তাঁর লেখনীতে জীবন্ত হয়ে ওঠে।

ক্লিনটন বলেন, ‘এমন নয় যে রিপাবলিকানরা যখন আমাকে অভিশংসনের চেষ্টা করেছিল, শুধু তখনই হোয়াইট হাউসে আমার কঠিন সময় গেছে। বরং হোয়াইট হাউসে এমন সময়ও এসেছে যে নানা বিতর্কিত ঘটনার কারণে আমাদের কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। সে সময়ে আমার মনে হতো, যাঁরা আমাকে নিয়ে খবর প্রকাশ করছেন, তাঁদের চোখে আমি যেন মানুষ নই, বরং ছিলাম একটা গল্পের রূপরেখা; আমি আমরা এসব অভিজ্ঞতা উপন্যাসে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’

তবে ‘দ্য ফার্স্ট জেন্টেলম্যান’ কেবল একটি আদালতকেন্দ্রিক নাটকীয় উপন্যাস নয়; বরং এটি সম্ভবত ইতিহাসের প্রথম রোমাঞ্চকর উপন্যাস, যার মূল কাহিনির কেন্দ্রে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ও ব্যয়ের ওপর একটি বৃহৎ রাজনৈতিক বিতর্ক।

এমন আরও অনেক কিছু পাওয়া যাবে এই উপন্যাসে। তবে শেষ পর্যন্ত, এই উপন্যাসকে তার জটিল ও অবাক করা সমাপ্তির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় একটি দায়িত্ববোধ।

উপন্যাসের প্রেসিডেন্ট কি নিজের স্বামী এবং দেশের প্রতি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন?

বিল ক্লিনটনের মন্তব্যে তার আভাস মিলেছে। ক্লিনটন বলেছেন, ‘একটি বিষয় আমি খুব ভালো করে জানি, যখন হোয়াইট হাউসে আপনার বিরোধীরা আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তখনো আপনাকে সামনে আসতে হবে এবং নিজের কাজ করে যেত হবে।’

সংকটময় সময় কীভাবে নিজেকে সামলাবেন-বিশ্বনেতারা এই উপন্যাস থেকে সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ পেতে পারেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ব ল ক ল নটন র জন ত ক উপন য স প রক শ আম র ক ব তর ক

এছাড়াও পড়ুন:

নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।

আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ