হামজা চৌধুরীকে লাল-সবুজের জার্সিতে খেলতে দেখে আগ্রহ জন্মে শমিত সোমের। ইচ্ছে পোষনের পর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) তোড়জোড় শুরু হয়। সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে শমিত এখন বাংলাদেশের ফুটবলার। সব ঠিক থাকলে ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে অভিষেক হবে তার। 

কানাডা প্রবাসী ২৭ বছর বয়সী সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার শমিত ওই ম্যাচ খেলতে বুধবার বাংলাদেশে পৌঁছেছেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন তিনি। সেখান থেকে সিলেটের ওসমানী ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর হয়ে বেলা ১২টার দিকে শ্রীমঙ্গলে পৌঁছান।  

শমিত ঢাকায় নামার পর তাকে বাফুফের কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। এছাড়া তাকে নিতে বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন তার বাবা কাকা মুক্তিযোদ্ধা মাহন লাল সোম ও পিসি পান্না দত্ত। 

সেখানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ও বিশ্রান নিয়ে বাংলাদেশ দলের সিঙ্গাপুর ম্যাচের ক্যাম্পে যোগ দেবেন শমিত। বাংলাদেশ আজ ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে। ওই  ম্যাচে তার খেলার সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার প্রসঙ্গে এই মিডফিল্ডার বলেন, আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে আমি উচ্ছ্বসিত। সহযোগিতার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

ভারতের বিপক্ষে অভিষেকের আগে হামজা চৌধুরী দেশে আসার সময় তার স্ত্রী-সন্তান ও তার মা এসেছিলেন। ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছিলেন তারা। তবে শমিত এবার একাই এসেছেন। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, অক্টোবরে পুনরায় পরিবার দিয়ে দেশে আসতে পারেন তিনি।   

শমিতের ফুফু পান্না দত্ত ও চাচী রুপা দত্ত জানান, শমিতের বাবা ড.

মানষ লাল সোম কানাডার আলবার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা (পার্টটাইম) করেন। পাশাপাশি একজন গবেষক তিনি। তার মা নন্দিতা সোমও কর্মজীবী। তারা অক্টোবরের দিকে দেশে আসতে পারেন। আপাতত শমিত একাই এসেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ