যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে বাজেটে শুল্ক প্রত্যাহার, কতটা প্রভাব পড়বে
Published: 6th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের খড়্গ থেকে বাঁচতে বাজেটে এবার ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে যেসব পণ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার হয়েছে, সেগুলো সব দেশ থেকে আমদানিতেও একই সুবিধা মিলবে। গত এপ্রিলে আরোপ করা ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ককে কেন্দ্র করে ১১০টি পণ্যে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব পণ্যের আমদানি খুব বাড়বে বলে মনে করেন না ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা।
গত সোমবার বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমদানি পণ্যের শুল্ক-করের হার পর্যায়ক্রমে হ্রাস করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস, ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।’
অবশ্য বাজেটে মোটাদাগে ৯৭টি পণ্যের কাস্টমস শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর বাইরে ১৩টি পণ্যে নির্দিষ্ট আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে মূল্য সংযোজন কর আরোপ করা হয়েছে। তাতে সব মিলিয়ে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার হওয়া পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১০টি। এগুলোর মধ্যে আবার সব কটি পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ হাজার ৫১৫টি এইচএসকোডের (পণ্যের শ্রেণিবিভাজন) পণ্য আমদানি হয়েছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়েছে রডের প্রধান কাঁচামাল স্ক্র্যাপ বা পুরোনো লোহার টুকরো। এই কাঁচামালটি আমদানিতে এত দিন আমদানি শুল্ক ছিল টনপ্রতি দেড় হাজার টাকা। এবারের বাজেটে সেই শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এনবিআরের হিসাবে, গত বছর বিশ্বের ৫০টি দেশ থেকে ২১৪ কোটি ডলারের পুরোনো লোহার টুকরো আমদানি হয়। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় প্রায় ৭৮ কোটি ডলারের, যা মোট আমদানির ৩৬ শতাংশ। বাংলাদেশে মূলত আবুল খায়ের গ্রুপ, বিএসআরএম গ্রুপ, জিপিএইচ ইস্পাত, কেএসআরএম গ্রুপসহ হাতে গোনা কয়েকটি বড় শিল্প গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্র থেকে লোহার টুকরো আমদানি করে।
বাজেটে শুল্ক কমানোর পদক্ষেপে দেশটি থেকে আমদানি বাড়বে কি না, জানতে চাইলে দুজন আমদানিকারক প্রথম আলোকে জানান, বাজেটে আমদানি শুল্ক কমানো হলেও মূল্য সংযোজন কর বাড়ানো হয়েছে। ফলে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। যেখানে সস্তা এবং মান ভালো, সেখান থেকেই আমদানি বেশি হয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া দ্বিতীয় শীর্ষ পণ্য হলো সয়াবিনবীজ। এটি আমদানিতে কোনো শুল্ক নেই। গত বছর ৯৪ কোটি ডলারের সয়াবিনবীজ আমদানি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় ব্রাজিল থেকে। গত বছর দেশটি থেকে আমদানি হয় ৫৬ কোটি ডলারের সয়াবিনবীজ, যা মোট আমদানির ৬০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় ৩২ কোটি ডলারের, যা মোট আমদানির ৩৪ শতাংশ।
সয়াবিনবীজ থেকে সয়াবিন তেল ও সয়ামিল তৈরি হয়। সয়াবিনবীজ আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক শূন্য। অর্থাৎ কাঁচামাল ও প্রস্তুত পণ্য আমদানিতে কোনো ব্যবধান নেই। ফলে দেশীয় ফিড মিলগুলো দেশীয় কারখানা থেকে না কিনে সরাসরি আমদানি করে। এতে এই শিল্পের কর্মচাঞ্চল্য কমছে। এ জন্য বাজেটে সয়ামিল আমদানিতে অন্তত ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সিডস ক্রাশিং মিলস। বাজেটের খসড়ায় তা রাখাও হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে তা বাদ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব সিডস ক্রাশিং মিলসের আহ্বায়ক ও মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, কাঁচামাল ও প্রস্তুত পণ্যে একই শুল্ক থাকলে কোনো শিল্প টেকসই হতে পারে না। প্রস্তুত পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হলে সয়াবিন বীজ আমদানি বাড়ত। বিশেষ করে ভালো মানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই বেশি আসত। এতে দুটি কাজ হতো—এক.
এই দুটি পণ্য ছাড়াও উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ, গ্যাস টারবাইন, অগ্নিনিরাপত্তা যন্ত্র, বিশেষ ক্যাটাগরির সুতা, সিনথেটিক স্ট্যাপল ফাইবার ইত্যাদির আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব পণ্যের আমদানি শুল্ক ছিল ১ শতাংশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব পণ্য আমদানি হলেও তা খুবই কম। ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব পণ্য আমদানিতে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে জানান এ খাতের একজন ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ীরা জানান, দূরত্বের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে খরচ বেশি। এ কারণে কম দূরত্বের দেশ ভারত ও চীন থেকে পণ্য আমদানি বেশি হয়। এরপরও পণ্যের মান ও সহজলভ্যতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক পণ্য আমদানি করা হয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত বছর বাংলাদেশ ২৯১ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বিশ্বের ৬০টি দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতেও ‘রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ’ বা ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপ করেন। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ার কারণে তারা ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করে। যদিও পরে তিন মাসের জন্য তা স্থগিত ঘোষণা করেছে দেশটি। তবে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখা হয়। পাল্টা শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বাজেটে ১১০টি পণ্যে আমদানি শুল্ক কমানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির প্রভাব সীমিত
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাম্পের শুল্ককে কেন্দ্র করে ১১০টি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করা হলেও সব দেশই একই সুবিধা পাবে। এতে শুল্ক আহরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই সুবিধা মার্কিন রপ্তানিকারকদের মতো অন্য দেশের রপ্তানিকারকেরাও পাচ্ছে। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতায় বড় ধরনের পরিবর্তন হবে না। অর্থাৎ দেশটি থেকে আমদানি খুব বেশি বাড়বে না। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শুল্ক উদারীকরণের যে চাহিদা রয়েছে, তা মেটানো যাবে। তবে দর–কষাকষির আগে শুল্ক প্রত্যাহার করায় শুল্ক উদারীকরণের তাৎপর্য কমে যাবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র থ ক য ক তর ষ ট র র শ ল ক কম প রস ত ত আমদ ন র ট আমদ ন গত বছর ন ক রক দ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে বাজেটে শুল্ক প্রত্যাহার, কতটা প্রভাব পড়বে
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের খড়্গ থেকে বাঁচতে বাজেটে এবার ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে যেসব পণ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার হয়েছে, সেগুলো সব দেশ থেকে আমদানিতেও একই সুবিধা মিলবে। গত এপ্রিলে আরোপ করা ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ককে কেন্দ্র করে ১১০টি পণ্যে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব পণ্যের আমদানি খুব বাড়বে বলে মনে করেন না ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা।
গত সোমবার বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমদানি পণ্যের শুল্ক-করের হার পর্যায়ক্রমে হ্রাস করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস, ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।’
অবশ্য বাজেটে মোটাদাগে ৯৭টি পণ্যের কাস্টমস শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর বাইরে ১৩টি পণ্যে নির্দিষ্ট আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে মূল্য সংযোজন কর আরোপ করা হয়েছে। তাতে সব মিলিয়ে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার হওয়া পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১০টি। এগুলোর মধ্যে আবার সব কটি পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ হাজার ৫১৫টি এইচএসকোডের (পণ্যের শ্রেণিবিভাজন) পণ্য আমদানি হয়েছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়েছে রডের প্রধান কাঁচামাল স্ক্র্যাপ বা পুরোনো লোহার টুকরো। এই কাঁচামালটি আমদানিতে এত দিন আমদানি শুল্ক ছিল টনপ্রতি দেড় হাজার টাকা। এবারের বাজেটে সেই শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এনবিআরের হিসাবে, গত বছর বিশ্বের ৫০টি দেশ থেকে ২১৪ কোটি ডলারের পুরোনো লোহার টুকরো আমদানি হয়। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় প্রায় ৭৮ কোটি ডলারের, যা মোট আমদানির ৩৬ শতাংশ। বাংলাদেশে মূলত আবুল খায়ের গ্রুপ, বিএসআরএম গ্রুপ, জিপিএইচ ইস্পাত, কেএসআরএম গ্রুপসহ হাতে গোনা কয়েকটি বড় শিল্প গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্র থেকে লোহার টুকরো আমদানি করে।
বাজেটে শুল্ক কমানোর পদক্ষেপে দেশটি থেকে আমদানি বাড়বে কি না, জানতে চাইলে দুজন আমদানিকারক প্রথম আলোকে জানান, বাজেটে আমদানি শুল্ক কমানো হলেও মূল্য সংযোজন কর বাড়ানো হয়েছে। ফলে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। যেখানে সস্তা এবং মান ভালো, সেখান থেকেই আমদানি বেশি হয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া দ্বিতীয় শীর্ষ পণ্য হলো সয়াবিনবীজ। এটি আমদানিতে কোনো শুল্ক নেই। গত বছর ৯৪ কোটি ডলারের সয়াবিনবীজ আমদানি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় ব্রাজিল থেকে। গত বছর দেশটি থেকে আমদানি হয় ৫৬ কোটি ডলারের সয়াবিনবীজ, যা মোট আমদানির ৬০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় ৩২ কোটি ডলারের, যা মোট আমদানির ৩৪ শতাংশ।
সয়াবিনবীজ থেকে সয়াবিন তেল ও সয়ামিল তৈরি হয়। সয়াবিনবীজ আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক শূন্য। অর্থাৎ কাঁচামাল ও প্রস্তুত পণ্য আমদানিতে কোনো ব্যবধান নেই। ফলে দেশীয় ফিড মিলগুলো দেশীয় কারখানা থেকে না কিনে সরাসরি আমদানি করে। এতে এই শিল্পের কর্মচাঞ্চল্য কমছে। এ জন্য বাজেটে সয়ামিল আমদানিতে অন্তত ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সিডস ক্রাশিং মিলস। বাজেটের খসড়ায় তা রাখাও হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে তা বাদ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব সিডস ক্রাশিং মিলসের আহ্বায়ক ও মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, কাঁচামাল ও প্রস্তুত পণ্যে একই শুল্ক থাকলে কোনো শিল্প টেকসই হতে পারে না। প্রস্তুত পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হলে সয়াবিন বীজ আমদানি বাড়ত। বিশেষ করে ভালো মানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই বেশি আসত। এতে দুটি কাজ হতো—এক. সয়ামিল ও সয়াবিনে আমদানিনির্ভরতা কমত। দুই. যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যঘাটতি কমত।
এই দুটি পণ্য ছাড়াও উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ, গ্যাস টারবাইন, অগ্নিনিরাপত্তা যন্ত্র, বিশেষ ক্যাটাগরির সুতা, সিনথেটিক স্ট্যাপল ফাইবার ইত্যাদির আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব পণ্যের আমদানি শুল্ক ছিল ১ শতাংশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব পণ্য আমদানি হলেও তা খুবই কম। ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব পণ্য আমদানিতে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে জানান এ খাতের একজন ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ীরা জানান, দূরত্বের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে খরচ বেশি। এ কারণে কম দূরত্বের দেশ ভারত ও চীন থেকে পণ্য আমদানি বেশি হয়। এরপরও পণ্যের মান ও সহজলভ্যতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক পণ্য আমদানি করা হয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত বছর বাংলাদেশ ২৯১ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বিশ্বের ৬০টি দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতেও ‘রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ’ বা ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপ করেন। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ার কারণে তারা ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করে। যদিও পরে তিন মাসের জন্য তা স্থগিত ঘোষণা করেছে দেশটি। তবে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখা হয়। পাল্টা শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বাজেটে ১১০টি পণ্যে আমদানি শুল্ক কমানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির প্রভাব সীমিত
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাম্পের শুল্ককে কেন্দ্র করে ১১০টি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করা হলেও সব দেশই একই সুবিধা পাবে। এতে শুল্ক আহরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই সুবিধা মার্কিন রপ্তানিকারকদের মতো অন্য দেশের রপ্তানিকারকেরাও পাচ্ছে। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতায় বড় ধরনের পরিবর্তন হবে না। অর্থাৎ দেশটি থেকে আমদানি খুব বেশি বাড়বে না। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শুল্ক উদারীকরণের যে চাহিদা রয়েছে, তা মেটানো যাবে। তবে দর–কষাকষির আগে শুল্ক প্রত্যাহার করায় শুল্ক উদারীকরণের তাৎপর্য কমে যাবে।