চলতি বছর পবিত্র হজপালনে সৌদি আরবে গিয়ে আরো দুই বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে হজপালনে গিয়ে এখন পর্যন্ত ১৯ বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও নারী দুইজন। এর মধ্যে মক্কায় মারা গেছেন ১১ জন, মদিনায় সাতজন ও আরাফায় একজন।

গতকাল শনিবার (৭ জুন) হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার মো.

মজিব উল্যা (৬৭)। এর দুইদিন আগে অথাৎ ৫ জুন মারা যান ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার মনোয়ারা বেগম মুনিয়া (৫৩)।

রবিবার (৮ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের মৃত্যু সংবাদে এসব তথ্য জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল বাংলাদেশি হাজিরা

লাখো হজযাত্রীর অংশগ্রহণে হজের আনুষ্ঠানিকতা চলছে

পোর্টাল সূত্রে জানা যায়, এ বছর হজে গিয়ে গত ২৯ এপ্রিল প্রথম মারা যান রাজবাড়ীর পাংশার মো. খলিলুর রহমান (৭০)। এরপর গত ২ মে মারা যান কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মো. ফরিদুজ্জামান (৫৭), গত ৫ মে মারা যান পঞ্চগড় সদরের আল হামিদা বানু (৫৮), গত ৭ মে মারা যান ঢাকার মোহাম্মদপুরের মো. শাহজাহান কবির (৬০) এবং গত ৯ মে মারা যান জামালপুরের বকশিগঞ্জের হাফেজ উদ্দিন (৭৩)।

এ ছাড়া, গত ১০ মে মারা যান নীলফামারী সদরের বয়েজ উদ্দিন (৭২), গত ১৪ মে মারা যান চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মো. অহিদুর রহমান (৭২), গত ১৭ মে মারা যান গাজীপুর সদরের মো. জয়নাল হোসেন (৬১) এবং গত ১৯ মে মারা যান চাঁদপুরের মতলবের আ. হান্নান মোল্লা (৬৩) ও গত ২৪ মে রংপুরের পীরগঞ্জের মো. সাহেব উদ্দিন। গত ২৫ মে মারা গেছেন চাঁদপুরের কচুয়ার বশির হোসাইন (৭৪) এবং গত ২৭ মে মারা যান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের শাহাদাত হোসেন। 

গত ২৯ মে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৫৩), একই দিন মাদারীপুর সদরের মোজলেম হাওলাদার (৬৩), গাজীপুরের টঙ্গীর পূর্ব থানার আবুল কালাম আজাদ (৬২), গত ১ জুন মারা যান গাজীপুরের পূবাইলের মো. মফিজ উদ্দিন দেওয়ান (৬০) ও নীলফামারীর সৈয়দপুরের মো. জাহিদুল ইসলাম (৫৯)।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন।

হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল গত ২৯ এপ্রিল আর হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ছিল গত ৩১ মে। সরকারি হজযাত্রীর কোটা ৫ হাজার ২০০ জন, বেসরকারি হজযাত্রীর কোটা ৮১ হাজার ৯০০ জন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ১০ জুন এবং হজযাত্রীদের শেষ ফিরতি ফ্লাইট ১০ জুলাই।

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হজ হজয ত র দ র ফ ল ইট সদর র

এছাড়াও পড়ুন:

চামড়া কিনে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

চট্টগ্রামে চামড়া কিনে হতাশ মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। বিক্রি করতে না পেরে চামড়া রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন তারা। রবিবার (৮ জুন) দিনভর সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পরিত্যক্ত চামড়া রাস্তা থেকে ট্রাকে তুলে ফেলে দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

মৌসুমি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার অনেকে গ্রাম থেকে চামড়া কিনে লাভের আশায় শহরে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু আড়তদাররা চামড়া কেনেননি। বাধ্য হয়ে চামড়া রাস্তায় ফেলে দিতে হয়েছে।

সোলায়মান নামের এক মৌসুমি ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘চামড়ার ব্যবসায় প্রায় ২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। ঈদের দিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দড়ে চামড়া কিনি। সন্ধ্যায় সব চামড়া শহরে নিয়ে আসার পর কোনো আড়ত মালিক চামড়া কিনতে রাজি হননি। শেষে ১০০ টাকা দরে চামড়া বিক্রি করতে রাজি ছিলাম, তাও নেয়নি। বাধ্য হয়ে সব চামড়া রাস্তায় ফেলে দেই।’’

একই ধরনের কথা বলেছেন মিরসরাইয়ের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘২০০টি চামড়া নিয়ে শহরে এসেছিলাম। কিন্তু, বিক্রি করতে পারিনি। সব চামড়া রাস্তায় ফেলে চলে এসেছি। চামড়া কেনার টাকা, ভাড়া সবটাই লোকসান হয়েছে।’’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, ‘‘রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ও ডাস্টবিন থেকে শত শত চামড়া ট্রাকে করে নিয়ে ফেলে দিয়েছি। অনেক রাস্তায় এখনো চামড়া পড়ে আছে।’’

বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতা মাহবুবুল আলম বলেন, ‘‘মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের বারবার সতর্ক করা হয়েছিল। সরকার শুধু লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে, কাঁচা চামড়ার নয়। কিন্তু, অনেকে বিষয়টি না বুঝে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’’

চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মুসলিম উদ্দিন বলেন, ‘‘সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৫৫ থেকে ৬০ টাকা (সর্বনিম্ন ১ হাজার ১৫০ টাকা) নির্ধারণ করেছে। কিন্তু, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেন, সেটি লবণযুক্ত করতে অনেক খরচ হয়।’’

এ বছর তিন লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ইতোমধ্যে ৮০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে।’’

ঢাকা/রেজাউল/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ