বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, আগামী বছরের এপ্রিলে নির্বাচন আয়োজনের চিন্তা অপ্রয়োজনীয় কালক্ষেপণ। তাঁর মতে, ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন করে সংস্কার ও বিচারকাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সিপিবির এই নেতা।

রুহিন হোসেন বলেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন করে সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান করা সম্ভব। যাঁরা নির্বাচন এপ্রিলে করার কথা বলছেন, তাঁদের সঙ্গে আমরা একমত নই। এই কালক্ষেপণের মধ্য দিয়ে আধিপত্য বা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি করিডর ও বন্দর নিয়ে নিজেদের অনেক ইচ্ছা বাস্তবায়ন করে নিয়ে যেতে পারে, যা আমাদের দেশের জন্য ক্ষতিকর।’

এপ্রিল নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত নয় জানিয়ে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ফেব্রুয়ারির পর পবিত্র শবে বরাত, রোজা, বিভিন্ন পরীক্ষা ও আবহাওয়ার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে দেখা যায়, এপ্রিল নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময় নয়, বরং নির্বাচন আরও পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

রুহিন হোসেন বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, আপনাদের এখতিয়ার যতটুকু, ওই কাজটুকুই করেন, তাহলে সংকট হবে না। এখতিয়ার–বহির্ভূতভাবে যদি কিছু করতে চান, তাহলে জনগণের প্রশ্ন আসবে আপনি কী দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করছেন নাকি বিদেশি কোনো গ্রুপের, কোনো শক্তির বা অপশক্তির ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করছেন।’

নির্বাচনকালীন সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি তুলে রুহিন হোসেন আরও বলেন, সরকার যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ দিতে ব্যর্থ হয়, তবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা দলগুলো প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধভাবে কথা বলবে, যাতে একটি ভালো নির্বাচন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা উচিত কি না, এ বিষয়ে প্রশ্নে রুহিন হোসেন বলেন, ‘নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে আমরা নই। কিন্তু এত বড় হত্যাযজ্ঞের পরও আজ পর্যন্ত তাদের কোনো অনুশোচনা দেখছি না। সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কথা বলার নৈতিক অধিকার তারা হারিয়েছে। দ্রুত নির্বাচন না হলে পতিত শক্তি হয়তো আবার সামনে আসার সুযোগ পাবে। বিষয়টা জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত, জনগণই এ বিষয়ে রায় দেবেন।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবিন নেতা এস এ রশীদ, খুলনা মহানগর সিপিবির সভাপতি এইচ এম শাহাদাত, সাধারণ সম্পাদক নিত্যানন্দ ঢালী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র হ ন হ স ন বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

বরগুনায় ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

দেশের চার ভাগের এক ভাগ ডেঙ্গু রোগী বরগুনায়। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছেন ৭ জন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫শ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে জেলায়। ১৫৮ জন ভর্তি রয়েছেন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে। 

এ পরিসংখ্যানই বলে দেয় বরগুনা জেলা এখন ডেঙ্গু হটস্পট। তারপরও জেলাটিকে ‘ডেঙ্গু হটস্পট’ ঘোষণা না করা এবং জরুরি ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাস্তায় নেমেছে বরগুনার সাধারণ মানুষ।  

মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল ৯টায় প্রেসক্লাব চত্বরে সর্বস্তরের সাধারণ জনগণের ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারী কর্মীরা। পরে সকাল ১১টায় একই স্থানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপি।

বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ উজ জামান মামুন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা এবং সাবেক সহ-সভাপতি এ জেড এম সালেহ ফারুক। 

বরগুনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী নাসরিন আক্তার শিমু বলেন, ‘‘বরগুনার জেনারেল হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা এবং প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে বরগুনায় তাদের সহকর্মী স্থানীয় উদ্যোক্তা মোনালিসা জেরিন এবং কিশোরী উপমাসহ ১০ জনেরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হয়েছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণ করেছে ডেঙ্গু। যে কোনো সময় এ পরিস্থিতি আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেতে পারে। যা সামাল দেওয়া রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব হবে না।’’

বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লার কন্যা উপমা এবং সাবেক সংসদ সদস্য জাফরুল হাসান ফরহাদের কন্যা মোনালিসা জেরিনসহ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকজনের অকালমৃত্যুর পরে রাস্তায় নেমেছে সাধারণ মানুষ। 

বরগুনা প্রেসক্লাবের মধ্যস্থতায় স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে জরুরি ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে বরগুনার জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার এবং নার্স নিয়োগের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরাম নামে এসব সভা সমাবেশের আয়োজন করে বরগুনা প্রেসক্লাব ও স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। এসব কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত কয়েকদিনে জেলা প্রশাসন, পৌর পরিষদ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করে বরগুনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরামের নেতৃবৃন্দ।

বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাড. সোহেল হাফিজ বলেন, ‘‘বাংলাদেশে যেখানে সাড়ে ৪ হাজার রোগী সেখানে শুধু বরগুনা জেলায় দেড় হাজার ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বরগুনার সিভিল সার্জনসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকগণ কিছুতেই ছুটিতে যেতে পারেন না। মাত্র ১০ জন ডাক্তার নিয়ে এমন জরুরি পরিস্থিতি সামলানো হাস্যকর। তাই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যেই বরগুনা প্রেসক্লাবের মধ্যস্থতায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরাম গঠন করা হয়েছে। করণীয় নির্ধারণে জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্য বিভাগ এবং পৌর প্রশাসনের সাথে একাধিক আলোচনা সভা করা হয়েছে। এতেও পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। নজিরবিহীন ডাক্তার ও নার্স সংকটের কারণে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাচ্ছে না।’’

বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘‘ডেঙ্গু মশার ভয়াবহ উপদ্রব এবং বরগুনার চিকিৎসা সেবার অচল অবস্থার কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বরগুনায়। এভাবে একটি জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চলতে পারে না।’’

কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ উজ জামান মামুন বলেন, ‘‘বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বরগুনা পৌরসভা, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সকলেরই দায়িত্বহীনতা রয়েছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সচিব কেন বরগুনায় আসলেন না? স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কেন আসলেন না তার জবাব দিতে হবে জনগণের কাছে।’’

ব্যর্থতার দায় নিয়ে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।

ইমরান//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
  • সহসাই রাজনীতির কালো মেঘ কেটে যাবে: ডা. জাহিদ  
  • ‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানবে না জনগণ’
  • ঐক্য-অনৈক্যের বিভ্রান্তিতে লন্ডন বৈঠকের তাৎপর্য
  • আ.লীগকে সমর্থন দেওয়া ব্যক্তি ও দলের বিচার করতে হবে: আখতার হোসেন
  • প্রতিষ্ঠা করতে হবে জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা: আখতার হোসেন
  • জনগণের স্বার্থেই শীত মৌসুমে নির্বাচন হওয়া উচিত
  • চারটি রোডম্যাপ: বিএনপির কাছে জনগণের প্রত্যাশা
  • বরগুনায় ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি