বাজেটে পানি–স্যানিটেশনে কম বরাদ্দে ঝুঁকিতে নাগরিক অধিকার: হোসেন জিল্লুর
Published: 17th, June 2025 GMT
অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াস) খাতে বাজেটে বরাদ্দ কমে যাওয়ায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে। এমনকি নাগরিকদের নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন পাওয়ার অধিকারও ব্যাহত হতে পারে।
আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন হোসেন জিল্লুর।
পিপিআরসি, ওয়াটারএইড, ইউনিসেফ, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম, ফানসা, বাউইন, এফএসএম নেটওয়ার্কসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা এবং সংস্থাগুলোর নেটওয়ার্ক অব ওয়াস নেটওয়ার্কস যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিপিআরসির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ওয়াশ খাতে ১০ হাজার ৯০১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা গত অর্থ বছর থেকে ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ কমেছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত এ খাতে বরাদ্দ ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এরপর থেকেই উল্টোটা হচ্ছে।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাজেট বরাদ্দের এই নিম্নমুখী প্রবণতা এসডিজি ৬ এবং সরকারের জাতীয় অগ্রাধিকার লক্ষ্যমাত্রা (এনপিটি) ১৭-১৮ অর্জনে বড় বাধা সৃষ্টি করবে। যার ফলে দেশের সব নাগরিকের জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের সুযোগ নিশ্চিত করা কঠিন হবে।
ওয়াস বাজেট বরাদ্দে অসমতা ও বৈষম্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ বলে মনে করেন হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, শহরে ও গ্রামীণ পর্যায়ে বরাদ্দের মধ্যে ব্যবধান কিছুটা কমলেও, এটি এখনো বেশ বড়, যা সম্পদের সুষম বণ্টন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কিছু দুর্গম এলাকা যেমন হাওর ও উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু চরের মতো অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দুর্গম এলাকাগুলো নীতিনির্ধারকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি, যা দুঃখজনক।
ওয়াটারএইডের প্রোগ্রামস অ্যান্ড পলিসি পরিচালক পার্থ হেফাজ সেখ বলেন, বাংলাদেশে খোলা স্থানে মলত্যাগের হার কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ২০২২ সালের খানা আয়–ব্যয় অনুযায়ী ৯২ দশমিক ৩২ পরিবারে উন্নত শৌচাগার সুবিধা রয়েছে। তবু পানির গুণগত মান, স্যানিটেশন অবকাঠামো এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট দুর্বলতাগুলো ওয়াস খাতের উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। স্যাম্পল ভাইটাল রেজিস্ট্রেশন স্ট্যাটিস্টিকস (এসভিআরএস) ২০২৩ অনুসারে, দেশের ৭১ শতাংশ মানুষের নিরাপদ পানীয় জলের সুবিধা রয়েছে।
আজ সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পর থেকে ওয়াস বাজেট ক্রমাগত কমেছে। যেমন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দ ২২ দশমিক ৪ কমে ১১৬ দশমিক ১৭ বিলিয়ন টাকা হয়েছে। প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা আরও কমে ১০৯ দশমিক ১ বিলিয়ন টাকায় দাঁড়িয়েছে। সংস্থাভিত্তিক বরাদ্দের দিকে তাকালে দেখা যায়, ওয়াসার (৪টি পুরোনো শহরের ৪টি ওয়াসা রয়েছে) মধ্যে ঢাকা ওয়াসাই সবচেয়ে বেশি (৩১৪০৭৭ লাখ টাকা) বরাদ্দ পাচ্ছে, অন্যদিকে সারা দেশে ওয়াস পরিষেবা প্রদানের দায়িত্বে থাকা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) বরাদ্দ কমেছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম পার্বত্য জেলাগুলোও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কম প্রকল্প সহায়তা পাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশের পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি লিড ফাইয়াজউদ্দিন আহমদ, পিপিআরসির মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ স ন জ ল ল র রহম ন বর দ দ র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে মুক্তি পাকেতার
স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেডের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতাকে। প্রায় দুই বছর ধরে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএ) তদন্তের পর একটি স্বাধীন কমিশন তাঁকে এই অভিযোগ থেকে মুক্তি দিল। গত রাতে এফএ ও ওয়েস্ট হাম বিষয়টি জানিয়েছে।
২০২৩ সালের আগস্টে তদন্ত শুরু করে এফএ। পাকেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় গত বছরের মে মাসে। ‘বাজির বাজারকে প্রভাবিত করতে অনৈতিক উদ্দেশে’ কার্ড দেখার অভিযোগ গঠন করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। দোষী প্রমাণিত হলে আজীবন নিষিদ্ধও হতে পারতেন ২৭ বছর বয়সী পাকেতা।
আরও পড়ুনআট বছর বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় নেইমার, হলো আরেক রেকর্ড১৫ ঘণ্টা আগে২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর লেস্টার সিটি, ২০২৩ সালের ১২ মার্চ অ্যাস্টন ভিলা, ২১ মে লিডস ইউনাইটেড ও ১২ আগস্ট বোর্নমাউথের বিপক্ষে ওয়েস্ট হামের ম্যাচ ঘিরে চারটি অভিযোগ গঠন করা হয় পাকেতার বিরুদ্ধে। স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কমিশন এ বিষয়ে শুনানির পর চারটি অভিযোগ ‘প্রমাণ করা সম্ভব নয়’ বলে মনে করে।
তদন্তে অসহযোগিতা ও অভিযোগ অস্বীকার করায় পাকেতার বিরুদ্ধে আরও দুটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। নিয়ন্ত্রক কমিশন মনে করে অভিযোগগুলো প্রমাণসাপেক্ষ এবং নিয়ম লঙ্ঘন করার জন্য যত দ্রুত সম্ভব উপযুক্ত দণ্ড দেওয়া হবে। এফএ চাইলে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে। সেই সুযোগ আছে।
গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ওয়েস্ট হামের হয়ে ৩৬ ম্যাচে ৫ গোল করেন পাকেতা। ব্রাজিলের হয়ে গত বছর ১৩ ম্যাচে করেন ২ গোল।
আরও পড়ুনমেসি গোল করিয়েছেন কতগুলো, তাঁর পাস থেকে সবচেয়ে বেশি গোল কার২০ ঘণ্টা আগেনির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে পাকেতা বলেন, ‘তদন্ত শুরুর প্রথম দিন থেকে আমি এসব মারাত্মক অভিযোগের মুখোমুখি হয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছি। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না। তবে এটুকু বলতে চাই, সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ এবং দুই বছর পর হাসিমুখে মাঠে ফিরতে মুখিয়ে আছি।’
গত মে মাসে টটেনহামের বিপক্ষে ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন পাকেতা। সেই ম্যাচের পর পাকেতার স্ত্রী মারিয়া এদুয়ার্দা ফোরনিয়ের জানিয়েছিলেন, তাঁরা দুই বছর ধরে দুঃস্বপ্নের মধে৵ বসবাস করছেন।
এসি মিলান থেকে ২০২০ সালে ফ্রান্সের ক্লাব অলিম্পিক লিওঁতে যোগ দেন পাকেতা। ২০২২ সালের আগস্টে নাম লেখান ওয়েস্ট হামে। ২০২২–২৩ মৌসুমে ইংলিশ ক্লাবটিকে উয়েফা কনফারেন্স লিগ জিততে সহায়তা করেছেন এই ব্রাজিলিয়ান। ২০২৩ সালের আগস্টে ওয়েস্ট হাম ছেড়ে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর; কিন্তু এফএ এরপর তদন্ত শুরু করায় সেই দলবদল আর আলোর মুখ দেখেনি।