দুটি বিষয় বাদে সংসদে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন এমপিরা
Published: 17th, June 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদের সদস্যগণ (এমপি) শুধু অর্থ বিল এবং আস্থা ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজ দলের প্রতি অনুগত থাকবেন। অন্য যেকোনো বিষয়ে তারা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন৷ এসব বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপের দ্বিতীয় দিনের আলোচনা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো.
আরো পড়ুন:
অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ সচিবালয় কমিশনের ৩৬তম বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারো ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জামায়াতের আলোচনা
চারটি স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ বিরোধী দলের মধ্যে থেকে নির্বাচনের সিদ্ধান্তে ঐকমত্য হয়েছে, উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, এস্টিমেশন কমিটি এবং পাবলিক আন্ডারটেকিংস কমিটিসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়-সংক্রান্ত জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে আসনের সংখ্যানুপাতে বিরোধী দলের মধ্য থেকে নির্বাচন করার ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন।
সংসদে নারীদের জন্য ১০০ আসনের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য পোষণ করেছে। তবে, তাদের নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
আজকের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধানে বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তনের ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে বলে কমিশনের সহ-সভাপতি জানিয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, এ বিষয়ে দুটি রাজনৈতিক দল ছাড়া বাকিরা একমত হয়েছে। পুনর্বার আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যাবে৷
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় অংশ নেয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ২৯টি রাজনৈতিক দল। আগামীকাল সকাল ১১টায় আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন। এতে আজকের অসমাপ্ত আলোচনাসহ জাতীয় সংবিধান কাউন্সিল (এনসিসি), রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, জেলা সমন্বয় কাউন্সিল বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে৷
ঢাকা/এএএম/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার, কোনো অজুহাতে নির্বাচন বিলম্বিত করা যাবে না: সিপিবি
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ‘ঐকমত্য কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, সংস্কার নিয়ে যত কথাই বলি না কেন, সংস্কার বিষয়ে হওয়া ঐকমত্য বাস্তবায়ন করতে হবে আগামীতে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। কোনো অজুহাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিলম্ব করা যাবে না।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিরতিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে এ কথা বলেন রুহিন হোসেন। এ সময় বাম জোটের অন্য শরিক দলের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
রুহিন হোসেন বলেন, অন্য কোনো নির্বাচনের কথা এনে চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের অন্যতম যে আকাঙ্ক্ষা, গণতন্ত্রের পথে হাঁটা, সেটাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। গণহত্যার বিচার ও সংস্কার করেই এ বছরে নির্বাচন করা সম্ভব। তাঁরা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চান।
বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত উল্লেখ করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘সংসদকে প্রতিনিধিত্বমূলক করতে হলে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালু করতে হবে। স্বাধীনতার পর থেকে আমরা এ বিষয়ে কথা বলে আসছি। সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন নিশ্চিত করতে হবে।’
নির্বাচনকে ভয়, অর্থমুক্ত এবং আঞ্চলিক খেলা থেকে মুক্ত করার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এখনো কোনো আলোচনা তৈরি করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সমালোচনা করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘এই অনুচ্ছেদের অধীন এমন কতগুলো বিষয় আছে, যার মাধ্যমে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন না। আমরা বরাবরই এ অনুচ্ছেদের বিষয়ে নতুন করে ভাবার কথা বলে আসছি। আজকের আলোচনায় ৭০ অনুচ্ছেদের অধীন আস্থাভোট এবং অর্থবিল যুক্ত করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। সংসদ সদস্যরা অন্যান্য বিষয়ে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন। এ উদ্যোগের সঙ্গে আমরাও একমত।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে রুহিন হোসেন বলেন, কমিশন সংসদে নারীদের আসন বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাব করেছে। এটা নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে বাম দলগুলো আন্দোলন করছে।