ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাজেটের ৮৮৩ কোটি ৪ লাখ টাকা দেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাত থেকে আসবে ৯০ কোটি টাকা।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের নিয়মিত সভায় বাজেটের অনুমোদন দেওয়া হয়।

কোষাধ্যক্ষ বলেন, ইউজিসির কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা ছিল ১ হাজার ২৫১ কোটি ৬০ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ইউজিসি থেকে বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৮৮৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। বারবার চাহিদার চেয়ে কম টাকা বরাদ্দ দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বিনিয়োগ কমে আসছে।

কোন খাতে কত বরাদ্দ

প্রস্তাবিত বাজেটের ৬২ দশমিক ৬৯ শতাংশ বা ৬৪৮ কোটি ২৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয় হবে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও পেনশনে। এ ছাড়া পণ্য ও সেবা-সহায়তা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ দশমিক ৬২ শতাংশ বা ২৮৫ কোটি ৯৮ লাখ ২২ হাজার টাকা। গত বছর প্রস্তাবিত বাজেটের ৬৭ শতাংশ ব্যয় হয়েছিল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও পেনশনে।

২০২৪-২৫ সেশনের বাজেটে গবেষণা খাতে ২০ কোটি ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা সামান্য বাড়িয়ে ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা করা হয়েছে, যা মোট বাজেটের মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ।

এ বিষয়ে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বাজেট প্রণয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর বাইরে যাওয়া যায় না।

কোষাধ্যক্ষ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে গবেষণা খাতের কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি তিনি প্রস্তাব আকারে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। যত দিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক স্বাধীনতা না আসবে, সরকারের ওপর নির্ভরশীল থাকবে, তত দিন পর্যন্ত মান বাড়ার সুযোগ থাকবে না।

সিনেট অধিবেশন অনিশ্চিত

জুন মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশন আয়োজনের কথা থাকলেও এবার তা হচ্ছে না। এমনকি জুলাইয়ের মধ্যেও তা হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এ বছর প্রশাসনিক জটিলতায় সিনেট অধিবেশন নির্ধারিত সময়ে হচ্ছে না।

কোষাধ্যক্ষ বলেন, ১৫ জুন সিনেটের ২৫ জন শিক্ষকপ্রতিনিধির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ৩৫ রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটের মধ্যে অনেকে ফ্যাসিবাদের সহযোগী রয়েছেন। তা ছাড়া সিনেটে সরকার থেকে প্রতিনিধি থাকেন, এখনো সরকার থেকে প্রতিনিধি মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর দ দ

এছাড়াও পড়ুন:

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য-বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে: ঢাকা চেম্বার

বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সংস্থাটি বলছে, কড়াকড়ি মুদ্রানীতির প্রভাবে ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে ডিসিসিআই জানায়, ২০২৫ সালের জুনের শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে ৬.৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ধারা অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। চেম্বার মনে করে, ব্যবসায়িক পরিবেশে অনিশ্চয়তা, আইন-শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ, জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি এবং কঠোর মুদ্রানীতির কারণে ঋণ প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী ধারা আরো তীব্র হচ্ছে।

ডিসিসিআই আরো জানায়, ঋণ প্রবাহ সংকুচিত হওয়ার ফলে খেলাপি ঋণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকায়, যা ব্যাংকিং খাতে মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ২৭.০৯ শতাংশ। এ পরিস্থিতি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ব্যবসায়িক আস্থা হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিসূদ হার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে-যা ক্ষুদ্র, কুটির, ছোট ও মাঝারি শিল্পসহ উৎপাদনমুখী খাতগুলোর জন্য বড় চাপ তৈরি করছে বলে মনে করে ডিসিসিআই। সংস্থাটির ভাষ্য, দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ সুদের হার উৎপাদন ও বিনিয়োগ খাতে ঋণের ভার বাড়াচ্ছে, ফলে সামগ্রিক অর্থনীতির গতিশীলতা ব্যাহত হচ্ছে।

চলতি মুদ্রানীতিতে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৫) বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আরো কমিয়ে ৭.২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে আগের ছয় মাসে তা ছিল ৯.৮ শতাংশ। বিপরীতে সরকার খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২০.৪ শতাংশ করা হয়েছে। ঢাকা চেম্বারের মতে, এ ব্যবস্থায় সরকারি খাতের চাহিদা মেটাতে গিয়ে বেসরকারি খাতের জন্য আর্থিক খরচ ও প্রতিযোগিতা উভয়ই বেড়ে যাবে।

এ অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে নীতিসূদ হার হ্রাস এবং ঋণ গ্রহণের শর্তাবলি সহজ করার আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই। তারা সৎ ঋণগ্রহীতাদের রক্ষায় সহায়তা এবং তাৎক্ষণিক খেলাপি শ্রেণিতে পড়া এড়াতে ঋণ শ্রেণিবিন্যাসে সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।

সংস্থাটি মনে করে, টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে হলে আর্থিক খাতে কাঠামোগত সংস্কার, ঋণ বরাদ্দে স্বচ্ছতা এবং বাজারে তারল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে।

চূড়ান্তভাবে ডিসিসিআই বলছে, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা, বেসরকারি খাতে আস্থা পুনরুদ্ধার ও বিনিয়োগ বাড়াতে আরো নমনীয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও খাতভিত্তিক প্রতিক্রিয়াশীল মুদ্রানীতির বিকল্প নেই।

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২ আগস্ট ২০২৫)
  • ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে দ্বাদশের ইটিসি-বিটিসি-বিষয়-গ্রুপ-ছবি পরিবর্তন, শুরু ১ আগস্ট থেকে
  • ব্র্যাকে জেলা পর্যায়ে ম্যানেজার নিয়োগ, স্নাতকে আবেদন
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১ আগস্ট ২০২৫)
  • নীতি সুদহার অপরিবর্তিত, বেসরকারি খাতের জন্য সুখবর নেই
  • সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য-বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে: ঢাকা চেম্বার
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা, নীতি সুদহার অপরিবর্তিত
  • সবজির দামে স্বস্তি, মজুরি বৃদ্ধির হার এখনো কম
  • ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা