ইসলামের ইতিহাসে সেলজুক যুগে শিক্ষার ক্ষেত্রে এমনই এক বিপ্লব সংঘটিত হয়, যা পুরো মুসলিম বিশ্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। এই বিপ্লবের নাম নিজামিয়া মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসাগুলো শুধু শিক্ষার কেন্দ্র ছিল না, বরং ইসলামি সভ্যতার পুনর্জাগরণের প্রতীক হয়ে উঠেছিল।

সেলজুক মন্ত্রী নিজামুল মুলক তুসির দূরদর্শী চিন্তা ও পরিকল্পনায় প্রতিষ্ঠিত এই মাদ্রাসাগুলো জ্ঞানের বিস্তার, সুন্নি মতবাদের প্রচার এবং শিয়া প্রভাব মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। কোরআনের ভাষায়, ‘আমি জিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি কেবল আমার ইবাদতের জন্য।’ (সুরা যারিয়াত, আয়াত: ৫৬)

এই আয়াতের আলোকে নিজামিয়া মাদ্রাসা ইলম ও তাকওয়ার মাধ্যমে ইবাদতের পথকে প্রশস্ত করেছে।

নিজামিয়া মাদ্রাসার উৎপত্তি

নিজামিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা ইসলামি শিক্ষার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। যদিও কোনো কোনো ঐতিহাসিক মনে করেন, মাদ্রাসার সূচনা দ্বিতীয় বা তৃতীয় হিজরি শতকে হয়েছিল, তবে নিজামুল মুলক ৪৫৯ হিজরিতে বাগদাদে প্রথম নিজামিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষাকে একটি সুনির্দিষ্ট ও সংগঠিত কাঠামোয় নিয়ে আসেন।এর আগে শিক্ষা মূলত মসজিদের হালাকায় স্বেচ্ছাভিত্তিক ছিল।

সেলজুক আমলে (১০৬৮ ইং) নির্মিত ইরানের খারগির্দে অবস্থিত নিজামিয়া শিক্ষাব্যবস্থায় পরিচালিত একটি মাদ্রাসা ভগ্নাবশেষ.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রিয়ালে আলোনসোর প্রথম পরীক্ষা আজ

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ শুরুর আগে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। সেই পোস্টে সবচেয়ে বড় ছবিটি কিন্তু ক্লাবের তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পের নয়। এমনকি ভিনিসিয়ুস জুনিয়র বা জুড বেলিংহামের নয়। তিন সুপারস্টার ওই পোস্টে আছেন, তবে সেখানে মূল ছবিটা হলো নতুন যোগ দেওয়া কোচ জাবি আলোনসোর; রিয়ালে যা সাধারণত বিরল। 

মাত্র কদিন আগে যোগ দেওয়া এ কোচ নিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত মাদ্রিদিস্তারা। আলোনসোকে ঘিরে তাদের আবেগ এতটাই যে তিন সুপারস্টারও সেখানে পাত্তা পান না। ক্লাব বিশ্বকাপ দিয়ে রিয়ালে আলোনসো যুগ শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায় সৌদি ক্লাব আল হিলালের বিপক্ষে প্রথম কোচ হিসেবে রিয়ালের ডাগআউটে দাঁড়াবেন তিনি।

তবে রিয়ালের কোচের পদটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। এখন যেমন আলোনসোকে নায়ক বানানো হচ্ছে, আবার টুর্নামেন্টে ব্যর্থ হলেই ছুড়ে ফেলতে দুবার ভাববেন না মাদ্রিদিস্তারা। আলোনসো যে তাদের ঘরের ছেলে, সেটা অবলীলায় ভুলে যাবেন। নজিরের জন্য তো বেশি দূরে যেতে হবে না, আলোনসোর পূর্বসূরি কার্লো আনচেলত্তিই সবচেয়ে বড় নজির। কোচ হিসেবে রেকর্ড পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী এ কোচ একটি মৌসুম শূন্য হাতে যেতেই বিদায় করে দেওয়া হয় তাঁকে। তবে আলোনসোর কাজের ধরনে বেশ খুশি রিয়াল সমর্থকরা। এরই মধ্যে তারা অনুশীলন সেশন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলচেলত্তির সঙ্গে তাঁর ব্যবধান তুলে ধরেছেন। 

রিয়াল সমর্থকদের মতে, আনচেলত্তির চেয়ে আলোনসো অনেক বেশি সক্রিয়। অনুশীলনে যখন তিনি মনে করেন খেলা থামিয়ে দেন। সুনির্দিষ্টভাবে শিষ্যদের বুঝিয়ে দেন তিনি কী চান। প্রয়োজনে চিৎকারও করেন। তাঁর খেলোয়াড়দের প্রতিটি পদক্ষেপ তিনি তীক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। প্রতিনিয়ত তাদের শুধরে দেন। অনুশীলনে আলোনসোর এ পরিশ্রমী ও কড়া হেড মাস্টার রূপ দেখে আশাবাদী রিয়াল ভক্তরা।

কোচ হিসেবে আনচেলত্তি খেলোয়াড়দের বেশ স্বাধীনতা দেন। আলোনসো নিজে ইতালিয়ান এ কোচের অধীনে খেলেছেন। তাই বলে তাঁর দর্শন আলোনসোর মাঝে খুব বেশি দেখা যায় না। বরং অন্য গুরু রাফা বেনিতেজ, হোসে মরিনহো ও পেপ গার্দিওলার প্রভাব তাঁর মাঝে বেশি দেখা যায়। ২৬ মে রিয়ালের হয়ে প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই তিনি ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছিলেন কেমন দল চান তিনি, ‘বর্তমান সময়ে ফুটবলে আপনাকে অবশ্যই নমনীয় ও ডায়নামিক হতে হবে। আমরা কীভাবে খেলতে চাই, সে ব্যাপারে আমার একটা ধারণা আছে। তবে সিস্টেম বদলাতেও পারে। চার ডিফেন্ডার বা তিনজন নিয়েও খেলতে হতে পারে।’ 

তবে প্রস্তুতির খুব বেশি সময় তিনি পাননি। তার পরও শিরোপা জেতার ব্যাপারে মরিয়া তিনি, ‘আমরা তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এখানে এসেছি। আশা করি, ভালো একটা টুর্নামেন্ট কাটাতে পারব এবং শেষ পর্যন্ত যেতে পারব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ