ভোলা-১ আসনে গোলাম নবীকে বিএনপির প্রার্থী করার দাবি
Published: 18th, June 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা-১ (ভোলা সদর) আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীরকে প্রার্থী হিসেবে চান বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার উকিলপাড়া–সংলগ্ন পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এমন দাবি করেন।
ভোলা পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর উদ্বোধন করেন গোলাম নবী আলমগীর।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, ভোলা-১ আসনে গোলাম নবীর কোনো বিকল্প নেই। যখন বাংলাদেশের কোথাও কোনো আন্দোলন-সংগ্রাম ছিল না, তখনো ভোলায় গোলাম নবীর নেতৃত্বে সফলভাবে ফ্যাসিস্ট হটাও আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে আন্দোলন–সংগ্রাম করে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা পুলিশের সামনে বুক পেতে দিয়েছেন। সেই নেতাকে ছেড়ে অন্য কাউকে ভোলা-১ আসনে জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা মেনে নেবেন না।
নেতা-কর্মীর উদ্দেশে গোলাম নবী বলেন, বিগত সময়ে যাঁরা ফ্যাসিস্ট সরকারের সদস্য, সুবিধাভোগী ও দোসর ছিলেন, তাঁদের কাছে এই সদস্য ফরম বিক্রি করা যাবে না। তাঁদের সদস্য করা তো দূরে থাক, বিএনপির সঙ্গে মিশতেও নেওয়া যাবে না।
ভোলা পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুর রব আখন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রাইসুল আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান, আমিনুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির, এনামুল হক, বসির আহমেদ হাওলাদার, জেলা মহিলা দলের সহসভাপতি অধ্যক্ষ খালেদা খানম, কৃষক দলের সভাপতি আবদুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলালউদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুবদল নেতা তরিকুল ইসলাম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স অন ষ ঠ ন র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
‘টাকা নাই জীবন নাই’ নামের আইডি থেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হতো
জিম্মিদশা থেকে মুক্ত বাংলাদেশি আলমগীর হোসেনকে লিবিয়া থেকে ফিরিয়ে এনেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আরেকজনকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় সঙ্গে জড়িত অভিযোগে বাংলাদেশে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহরণকারীরা ‘টাকা নাই জীবন নাই’ নামের ইমো আইডি থেকে ভুক্তভোগীর স্বজনদের ফোন করে মুক্তিপণ না দিলে হত্যার হুমকি দিত।
পিবিআইবি ঢাকা মহানগর উত্তরের কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, আলমগীর হোসেন (৪২) লিবিয়ায় জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়ে গতকাল বুধবার দেশে পৌঁছেছেন। আর সিরাজ উদ্দিনকে দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, আলমগীর ও সিরাজ লিবিয়ার ত্রিপোলিতে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি সেখান থেকে তাঁদের অপহরণ করা হয়। এরপর ইমো অ্যাপের মাধ্যমে দুজনকে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা মুক্তিপণ চান অপহরণকারীরা। তাঁদের স্বজনেরা অপহরণকারীদের কাছে দেড় লাখ টাকা পাঠান। তবে মুক্তিপণের বাকি টাকার দাবিতে অপহরণকারীরা আলমগীর ও সিরাজকে নির্যাতন চালাতে থাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ ঘটনায় গত ২৯ জানুয়ারি আলমগীরের বড় ভাই আবদুল মালেক (৫২) অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর আদাবর থানায় মামলা করেন। পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তর মামলাটির তদন্ত শুরু করে।
পিবিআই কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ৩০ জানুয়ারি ওই ঘটনায় রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার কড়ইতলা মোড় থেকে রাসেল হক (২৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাসেলের মামা কামাল হোসেন অপহরণের সঙ্গে জড়িত। তিনি লিবিয়ায় থাকেন। মুক্তিপণের টাকা লেনদেন নিয়ে কামালের সঙ্গে রাসেলের মুঠোফোনে কথা হয়েছে। রাসেলের মুঠোফোনে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাসেলের মুঠোফোনটি জব্দ করে পিবিআই।
পিবিআই কর্মকর্তা বলেন, রাসেলকে গ্রেপ্তারের পরও নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় আরও ৪ লাখ টাকা অপহরণকারীদের কাছে পাঠায় ভুক্তভোগীর পরিবার। লিবিয়ায় অপহরণকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থেকে মিন্টু ফরাজীকে (৩৯) গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
পিবিআই কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের পর অপহৃতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন অপহরণকারীরা। কিন্তু অপহৃতদের ওপর নির্যাতন বাড়িয়ে দেন। তাঁরা বেশির ভাগ সময় অপহরণকারীদের মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করে কথা বলতেন। মাঝেমধ্যে ‘টাকা নাই জীবন নাই’ নামের ইমো আইডি থেকে স্বজনদের কল করে টাকা না দিলে অপহৃতদের হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হতো।
আলমগীর ও সিরাজের বরাত দিয়ে পিবিআই কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন বলেন, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা তাঁদের হাত–পা বেঁধে মারধর করতেন। কখনো কখনো পায়ের তালুতে পিভিসি পাইপ ও বিদ্যুতের মোটা তার দিয়ে মারতেন। খাবার ও পানির কষ্ট দিতেন। এমনকি শীতের মধ্যে খালি গায়ে মুখে গামছা ভরে শরীর দেয়ালের সঙ্গে ঠেকিয়ে মারধর করা হতো। পরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে লিবিয়ার ত্রিপোলির জিলজিয়া হাসপাতাল এলাকায় অপহৃত আলমগীর হোসেন ও সিরাজ উদ্দিনকে ফেলে রেখে যাওয়া হয়।
অপহরণকারীরা যাতে মুক্তিপণের টাকা তুলতে না পারে, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সহায়তায় অপহরণকারীদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
পিবিআই কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, পিবিআই বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে আলমগীর ও সিরাজকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়। আলমগীরের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল এবং সিরাজের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। তিনি বলেন, অপহরণের সঙ্গে দেশে যারা জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। লিবিয়ায় অবস্থানরত অপহরণকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের সহযোগিতা নেওয়া হবে।