বাণিজ্যিক ফলবাগানে প্রযুক্তির ছোঁয়া
Published: 19th, June 2025 GMT
বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতিতে বাণিজ্যিক ফলবাগানের গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। দেশি-বিদেশি উচ্চমূল্যের ফল ফসলের আবাদ বিস্তৃত হচ্ছে। তরুণ উদ্যোক্তারা কৃষিতে আসার ফলে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগও দ্রুতগতিতে বাড়ছে।
বর্তমানে সীমিত পরিসরে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। এর ব্যাপক প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে উৎপাদনশীলতা বাড়বে। অধিকতর লাভজনক বাণিজ্যিক বাগান গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এই প্রেক্ষাপটে স্মার্ট গার্ডেন, ড্রিপ ইরিগেশন, মালচিং ফিল্ম, ড্রোন, সেন্সর প্রযুক্তি এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থার সমন্বয়ে রূপ নিচ্ছে আধুনিক কৃষিব্যবস্থা।
স্মার্ট গার্ডেন হলো এমন এক আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বাগান ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, যেখানে স্বয়ংক্রিয় ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উন্নতমানের ফসল উৎপাদন করা হয়। এখানে তাপমাত্রা, আলো, আর্দ্রতা এবং মাটির গুণাগুণ সেন্সরের মাধ্যমে সূক্ষ্মভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে উৎপাদন ব্যয় কমায় এবং ফলনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে।
ড্রিপ ইরিগেশন পদ্ধতি মাটিতে সুনির্দিষ্ট পরিমাণে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করে ফসলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে পানির অপচয় কমে এবং গাছের সুষম বৃদ্ধি নিশ্চিত হয়। পানিসাশ্রয়ী আরেকটি জনপ্রিয় প্রযুক্তি হলো মালচিং ফিল্মের ব্যবহার, যা মাটির আর্দ্রতা সংরক্ষণ, আগাছা নিয়ন্ত্রণ করে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমায়।
উন্নত দেশে কৃষিকাজে ড্রোন ও সেন্সর প্রযুক্তির ব্যবহার কৃষকদের ফসল উৎপাদন ও বাগান ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ এবং দক্ষ করে তুলেছে। এর মাধ্যমে ফলবাগানের রোগ ও পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ভুলভাবে চিহ্নিতকরণ এবং শুধু প্রয়োজনীয় স্থানে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা যায়।
টিস্যুকালচার প্রযুক্তির ব্যবহারে ফলবাগানে উন্নত গুণমানসম্পন্ন, রোগমুক্ত এবং মাতৃগুণাগুণ সম্পন্ন চারা উৎপাদনের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘টিস্যুকালচার ল্যাবরেটরি কাম হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপন ও উন্নয়ন প্রকল্প’-এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে এই খাতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই প্রযুক্তির ব্যবহার বিস্তৃত করছে।
টিস্যুকালচার প্রযুক্তির সাহায্যে অল্প জায়গায় বড়সংখ্যক উন্নতমানের একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন চারা একসঙ্গে উৎপাদন করা সম্ভব। এতে উৎপাদনশীলতা বাড়ে এবং কৃষকের আয়ও বেড়ে যায়। কলা, আনারস, স্ট্রবেরি, আঙ্গুরের মতো উচ্চমূল্যের ফসল চাষে ইতোমধ্যে টিস্যুকালচারের সফল প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে।
ফল ও সবজি সংরক্ষণেও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। এ ক্ষেত্রে ফারমারস মিনি কোল্ডস্টোরেজ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশের কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে সরকার, কৃষিবিদ, উদ্যোক্তা এবং কৃষকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য।
লেখক: প্রকল্প পরিচালক, টিস্যুকালচার অ্যান্ড হর্টিকালচার উন্নয়ন প্রকল্প, ডিএই।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট