সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির
Published: 4th, July 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় মৌলিক সংস্কার ছাড়া কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। ইনশাআল্লাহ, সংস্কার করেই নির্বাচন হবে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা ও মহানগর জামায়াতের আয়োজনে বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, “আগামী নির্বাচনে কালো টাকা ও অপকর্ম রুখতে যুবকদের মাঠে থাকতে হবে। সব যুবককে এ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।”
সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৫৪ বছর ধরে যারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে মায়াকান্না করেছে, তারাই জাতির ক্ষতির জন্য দায়ী। আমরা সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করব। সংবিধানের পাহারাদার হবো। দেশের মালিক নয়, সেবক হবো, ইনশাআল্লাহ।”
আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে ডা.
তিনি আরো বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে দেশে মবতন্ত্র চলছে। জামায়াত মব রাজনীতি সমর্থন করে না। জনগণ মব সন্ত্রাসীদের বিচার দেখতে চায়। মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী কঠোর অবস্থানে থাকবে।”
তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন ও জুলাই বিপ্লবে আবু সাঈদসহ অন্যদের হত্যার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, এ নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না।
জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের ঢল নামে। তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে জনসভাস্থলেই দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায় করেন তারা।
জনসভায় বক্তব্য দেন দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকা জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে এসেছি। এখন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিজেকে উৎসর্গ করব।”
আবু সাঈদের জীবনের বিনিময়ে তার মুক্তি হয়েছে, উল্লেখ করে এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, “অন্যায়ভাবে যারা ১৫ বছর ইসলামপ্রিয় মানুষদেরকে জেল-জুলুম দিয়েছে, তারা মানবতাবিরোধী অপরাধী। এই কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দিতে হবে।”
শুক্রবার বিকেল ৩টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জামায়াতের আমিরের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জনসভা শেষ হয়। সভায় রংপুর অঞ্চলের ৩৩টি আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্যে দিয়ে উত্তরাঞ্চল সফর শুরু করেন ডা. শফিকুর রহমান। সেই ধারাবাহিকতায় এ পর্যন্ত রংপুর বিভাগে তিনি ১০টি জনসভা করেন। এ টি এম আজহারুল ইসলামের কারামুক্তির পর আজ একাদশতম জনসভা করা হলো।
ঢাকা/আমিরুল/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম র র আম র
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলনে সৃষ্টিশীলতা
রিফাত রশিদ
সভাপতি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম একটি শক্তি ছিল দীর্ঘদিনের ক্যাম্পাসে রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক পলিসি মেকিং সম্পর্কিত পাঠচক্রগুলোয় অংশগ্রহণ করা। দেশের মানুষ হরতাল, অবরোধ এই শব্দগুলো নেতিবাচক হিসেবে ধরে। সেখান থেকে কীভাবে আধুনিক আর সৃষ্টিশীল করে সবার কাছে পৌঁছানো যায়, সেটি আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল।
‘স্বপ্নের বাসা’ নামের একটি বাসা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন চাঁনখারপুল এলাকায়। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান স্ট্র্যাটেজিগুলো প্রস্তুত করতাম এবং পরবর্তীকালে আমরা সবার মতামত নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতাম। আমাদের এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামের প্রস্তাবনা করেন আব্দুল হান্নান মাসউদ। পরবর্তীকালে অবরোধ কর্মসূচির জন্য আমরা কার্জন হলের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের হোয়াইট হাউসে বসে অবরোধ নিয়ে আলোচনা করি। সেখানে আসিফ মাহমুদ ভাই সর্বপ্রথম ‘বেঙ্গল ব্লকেড’ নাম দিয়ে অবরোধ করার প্রস্তাবনা করেন। পরবর্তী সময়ে আমরা সকলে এই প্রস্তাবে সম্মত হই। এরপর যখন আমরা স্বপ্নের বাসায় মিটিংয়ে বসি তখন আমি ‘বেঙ্গল’ শব্দটা ব্যবহার না করে ‘বাংলা’ ব্যবহার করার প্রস্তাব করি। কমপ্লিট শাটডাউন টার্মটা পুরোপুরি আসিফ ভাইয়ের মাথা থেকে এসেছে। তিনি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই টার্ম প্রস্তাব করেন। আন্দোলনের সময় যখন ডিবি অফিসে মূল নেতৃবৃন্দ আটক ছিলেন, তখন যে টার্মগুলো ছিল বেশির ভাগই আমার, হান্নান মাসউদসহ বাকিদের একত্রে সম্মত হয়ে দেওয়া। মূলত আমাদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বোঝাপড়া, একসঙ্গে থাকা, জেল খাটা, নিপীড়ন সহ্য করার মাধ্যমে চিন্তা, চেতনায় এক ধরনের মিথস্ক্রিয়া তৈরি হয়েছে, যা আমাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। v