হেফাজতে ইসলামের আ‌মির শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, ‘ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে উদ্বেগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করছি। অতীতে দেখেছি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘মানবাধিকারের’ নামে ইসলামি শরিয়াহ, পারিবারিক আইন এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে হস্তক্ষেপের অপচেষ্টা করেছে। এসব হস্তক্ষেপ সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত এবং ধর্মীয় অনুভূতিরও পরিপন্থি। তাই বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়  হ‌তে দেওয়া হ‌বে না।’ 

জুলাই অভ্যুত্থা‌নের শহীদ‌দের রূহের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দেশব্যাপী দোয়া-মাহফিল ও আলোচনা সভার অংশ হি‌সে‌বে শ‌নিবার রাজধানীর বা‌রিধায় জামিয়া মাদানিয়া মাদ্রাসায় ঢাকা মহানগর হেফাজ‌তে‌র অনুষ্ঠানে এসব কথা ব‌লে‌ছেন বাবুনগরী। 

মহানগর সভাপ‌তি সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবের সভাপতিত্বে আরও উপ‌স্থিত ছি‌লেন হেফাজত মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল হামিদ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী প্রমুখ। 

হেফাজত আ‌মির ব‌লে‌ছেন, ইসলাম অনুযায়ী, শুধু পুরুষ ও নারীর ম‌ধ্যে বি‌য়ে বৈধ। সমকামিতা ইসলাম এবং প্রকৃতি উভয়ের পরিপন্থি। প্রকৃত মানবাধিকার মানে হলো—প্রত্যেক মানুষকে তার প্রকৃতি ও ধর্ম অনুযায়ী সম্মান দেওয়া। নারীর সম্মান নারী হিসেবেই রক্ষা করতে হবে; পুরুষের মর্যাদা ও দায়িত্বও পুরুষ হিসেবেই সংরক্ষণ করতে হবে। 

সরকারের প্রতি মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী ব‌লে‌ছেন, জাতীয় স্বার্থ, সাংস্কৃতিক নিরাপত্তা ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে রক্ষার স্বার্থে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন এবং বিদেশি দূত নিযুক্তির চুক্তি বাতিল করুন। 

মামুনুল হক হুঁশিয়ার করে বলেন, তাওহীদি জনতা দেশের স্বাধীনতা, ইসলামি মূল্যবোধ ও সামাজিক নৈতিকতার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের আগ্রাসন প্রতিরোধে প্রস্তুত রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ম নব ধ ক র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নবাবগঞ্জে যুবদল নেতাকে গ্রেপ্তারে ভোররাতে পুলিশের অভিযান, এক ঘণ্টা পর বাড়ির পাশে মিলল লাশ

ঢাকার নবাবগঞ্জে বাড়ির পাশের খেত থেকে আমজাদ হোসেন (৫০) নামের যুবদলের এক নেতার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নবাবগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আজ রোববার ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলার মাঝিরকান্দা এলাকার মৃধাকান্দা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এর এক ঘণ্টা আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাড়িতে এসেছিল পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ ভোর চারটার দিকে চেক জালিয়াতির মামলায় এক বছরের সাজাসংক্রান্ত পরোয়ানা নিয়ে আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তারে তাঁর বাড়িতে যায় নবাবগঞ্জ থানা-পুলিশ। তাঁকে না পেয়ে পুলিশ ফিরে যায়। পুলিশের গাড়ি চলে গেছে জানতে পেরে আমজাদ ঘর থেকে বের হন। পরিবারের ধারণা, তিনি ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন। তবে ভোর পাঁচটার দিকে স্থানীয় কয়েকজন ধনচেখেতের পাশে আমজাদকে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন।

পরে আমজাদকে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর স্বজনেরা লাশ বাড়িতে নিয়ে যান। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হত্যা’র অভিযোগ তুলে বিভিন্ন পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে যুবদলের নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা আমজাদের বাড়িতে যান।

ঘটনার খবর পেয়ে নবাবগঞ্জ থানা-পুলিশ আমজাদের বাড়িতে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে। আমজাদের নামে রাজনৈতিকসহ অন্তত ২০টির বেশি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। একটি চেক জালিয়াতির মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে এক বছরের সাজা পরোয়ানাও ছিল। লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য তা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

নিহতের স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, ‘আমি জানি না আমার স্বামী কীভাবে মারা গেল। আল্লাহর কাছে বিচার চাই।’

আমজাদের ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই রাজনীতি করে। তার অনেক প্রতিপক্ষ আছে। পুলিশ তাকে ধরতে আসলেও সে কেন ওখানে গিয়ে পড়ে মারা গেল? এটা আমরা বুঝতে পারছি না।’ নিহতের বড় মেয়ে আশা আক্তার বলেন, ‘বাবার মুখে ও চোখের কোণে জখমের চিহ্ন আছে। বাবাকে কেউ হত্যা করেছে কি না, তা এখনো বলতে পারব না।’

নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমজাদ হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত করাটা জরুরি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’

ভোররাতে গ্রেপ্তার অভিযানের বিষয়ে ওসি বলেন, আমজাদের নামে সাজার পরোয়ানা ছিল। পুলিশ ভোর চারটায় তাঁকে ধরতে যায়। বাসার দরজা না খোলায় পুলিশ ফিরে আসে। পরে স্থানীয় লোকজন মুঠোফোনে আমজাদের মৃত্যুর খবর জানান। অভিযানে অংশ নেওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) রাজিবুল ইসলাম ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, তাঁরা আমজাদের বাড়িতে ঢোকেননি।

এদিকে আমজাদের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিএনপি নেত্রী মেহনাজ মান্নান তাঁর বাড়িতে যান। তিনি নিহতের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘আমজাদ দলের একজন ত্যাগী নেতা। অনেক মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। তাঁর এভাবে রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ আমরা খুঁজে বের করতে চাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ