Prothomalo:
2025-09-18@08:03:53 GMT

সমতার স্বপ্নের জন্য শহীদ

Published: 26th, July 2025 GMT

রৌদ্রদীপ্ত বিকেল। কোটা সংস্কারের দাবির ব্যানার নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মিডিয়া চত্বরে দাঁড়িয়ে আছেন কিছু শিক্ষার্থী। হঠাৎ সামনে থেকে ক্যাপ, চশমা ও চেক শার্ট পরা একজন তরুণ এগিয়ে এলেন। 

সামনে গিয়ে হাত বাড়িয়ে পরিচিত হলাম সেই তরুণের সঙ্গে। বয়সে বড়, তাই সম্মোধন করলাম ভাই বলে। তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ।

আবু সাঈদ ভাই বললেন, ‘এই অন্যায্য বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমিও কথা বলতে চাই।’ সেদিন থেকে মিছিলের সামনে এসে তিনি বক্তৃতা দিতেন। বলতেন ন্যায্যতার কথা, অধিকারের কথা। দিন শেষে ক্লান্ত শরীর নিয়ে আন্দোলনের কর্মকাণ্ড শেষে সংগঠকদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে পার্কের মোড়ে বসে ভাবতাম, আমরা কি পারব এই আন্দোলনে বিজয়ী হতে? আবু সাঈদ ভাই খুব প্রত্যয়ের সঙ্গে বলতেন, ‘পারব, ভয় নাই।’

একদিন চা খেতে খেতে অনেক কথা হলো তাঁর সঙ্গে। আগে তিনি এ রকম কোনো কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেননি। কোটা বৈষম্য মেনে নিতে না পারায় তাঁর এই সম্পৃক্ততা। তখনই জেনেছিলাম, তাঁর কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই।

৩ জুলাই। এখনো স্পষ্ট মনে আছে, মিছিলের উদ্দেশ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হচ্ছিলাম। টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে। আবু সাঈদ ভাই এলেন। প্ল্যাকার্ড নিলেন। তাতে রংতুলিতে লিখলেন সুযোগের সমতার কথা। এরপর সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মিছিলের একেবারে সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। শুরু করলেন সেদিনের কর্মসূচি। নিজেই স্লোগান ধরলেন। মিছিল শেষে ক্যাম্পাসের তৎকালীন নির্মাণাধীন গেটে (বর্তমানে ‘শহীদ আবু সাঈদ গেট’) তাঁর বক্তৃতা আমাদের দারুণ উজ্জীবিত করেছিল।

আন্দোলন নিয়ে বিকেলে যখন আমরা কোনো মিটিং করতাম, হঠাৎ আবু সাঈদ ভাই উঠে চলে যেতেন। একদিন জিজ্ঞেস করলাম, ‘ভাই, প্রতিদিন বিকেলে কোথায় যান?’ বললেন, ‘টিউশন করাতে, এই টিউশন আমাকে ভাত দেয়।’ কথাটা মনে খুব দাগ কেটেছিল। সন্ধ্যায় টিউশন শেষ করে এসে পার্কের মোড় মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে তিনি আমাকে ফোন করতেন। নিচে গিয়ে চা খেতে খেতে কথা হতো পরের দিনের কর্মসূচি নিয়ে। তাঁর অদম্য চিন্তা আর স্পষ্ট প্রতিবাদের আমি সাক্ষী। একটা কথা তিনি সব সময় বলতেন, ‘ভয় পেয়ে কী হবে?’ তাঁর সাহস আমাদের মনেও অদম্য সাহস সঞ্চার করত।

শহীদ আবু সাঈদ চত্বর.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঈদ ভ ই

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ