যদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, নিয়ে আসছিলেন কেন: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
Published: 27th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বড় একটি ঘটনা হলো ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। যদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, তবে নিয়ে আসছিলেন কেন আপনি? আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় এই অস্ত্রকাহিনির কারণে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে।’
আজ রোববার দুপুরে এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পুরাতন কালেক্টরেট মাঠে আয়োজিত পথসভায় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এসব কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমি বাবর ভাইকে (সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর) সম্মান করি, তিনি কারা নির্যাতিত নেতা। কিন্তু আপনার ওই কাজ আমি সমর্থন করি না। আপনার এই কাজের কারণে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারেনি। হাসিনার মতো একজন খুনি-ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় এসেছিলেন। গত ১৫ বছর বিএনপির নেতা-কর্মীরা নির্যাতিত হয়েছেন, আমার ভাইদের ওপর হত্যা করা হয়েছিল, গুলি চালানো হয়েছিল, এই জন্য আপনিও ইতিহাসের কাঠগড়ায় আপনিও দায়ী থাকবেন। আমরা শান্তি চাই। আমরা অশান্তি চাই না বাংলাদেশে। আমরা মানুষের অধিকার চাই। মানবিক মর্যাদা চাই।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, ‘যার হাতে বিচারালয়ের ক্ষমতা, যার হাতে সংসদীয় ক্ষমতা, যার হাতে নির্বাহী ক্ষমতা—এ জন্য আমরা পাওয়ার ব্যালান্স চেক করার জন্য পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষে নির্বাচন চেয়েছি। কিন্তু যারা ফ্যাসিস্ট ক্ষমতার কাঠামোতে থাকতে চায়, তারা এ বিষয়ে জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করছে। রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধান, সংস্কার এবং শেখ হাসিনার বিচারের টিকিট নিয়েই ঘরে ফিরবেন ইনশা আল্লাহ।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড, বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতা-কর্মীর গুম-খুনের বিচার চাইছি। যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন করেছে, আলেমদের জঙ্গি হিসেবে তকমা দিয়েছে, পাহাড়িদের অত্যাচার করেছে, তাদের বিচার করতেই হবে।’
পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগ, কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম খান পাঠান প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম উপস্থিত থাকলেও বক্তব্য দেননি। পথসভা শেষে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা শেরপুরের উদ্দেশে রওনা হন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স র দ দ ন প টওয় র এনস প র ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
কাবিনে যেহেতু স্বাক্ষর করেছেন, সংসারও করতে হবে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, একটি দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে, আবার সেই স্বাক্ষরের বিপক্ষেই অবস্থান নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার লাকসাম সদরের বাইপাস এলাকায় এনসিপি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ এ কথা বলেন।
জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে ‘না’–এর পক্ষে অবস্থানকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, একটি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে আমাদের মৌলিক বিষয়ের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে, আজ আবার সেই স্বাক্ষরের বিপক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। তাহলে আমরা বলব বিয়েই যেহেতু করবেন না, তাহলে কাবিননামায় স্বাক্ষর কেন করলেন? সংসার যদি না–ই করবা, তাহলে কবুল কেন বললা। কবুল যেহেতু বলেছেন, কাবিনে যেহেতু স্বাক্ষরও করেছেন, আপনাদের সংসারও করতে হবে। সংসার যদি না করতে চান, রাস্তা খোলা আছে, জনগণের সামনে এসে বলতে হবে, আমরা ডিভোর্স দিতে চাই। জনগণের সামনে মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।’
জনগণকে বোকা বানিয়ে সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া যাবে না উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যারা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থা নিয়েছে, তারাই আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেবে, ভোটের অধিকার কেড়ে নেবে। এদের বিষয়ে জাতিকে সজাগ থাকতে হবে।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এ সংস্কারের বিপক্ষে যারা “না”–এর অবস্থান নিয়েছে, তাদের আপনারা চিহ্নিত করে রাখুন। তারাই আবার তত্ত্বাবধায়কের বিপক্ষে ও আপনার ভোট এবং মৌলিক অধিকারের বিপক্ষেই অবস্থান নেবে।’
এর আগে ফিতা কেটে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধন করেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক (কুমিল্লা অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক) নাভিদ নওরোজ শাহ। দলের লাকসাম উপজেলা প্রধান সমন্বয়ক আল মাহমুদের (ফজলে রাব্বী) সভাপতিত্বে পথসভায় বক্তব্য দেন জুলাই আন্দোলনের শহীদ লাকসামের জিসানের নানা জাবেদ মিয়া, এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক সালাউদ্দিন জাবের, লাকসাম উপজেলা সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ। পথসভা সঞ্চালনা করেন মোস্তাফিজুর রহমান ও মো.আশিকুল ইসলাম। সভা শেষে লাকসাম সদরে এনসিপির পক্ষে জনমত গঠনে প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়।