সংযোগ সড়কের কাজ অসমাপ্ত রেখেই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ১০৯০ মিটার গার্ডার মওলানা ভাসানী সেতু। পুরো কাজ শেষ না করেই বুধবার (২০ আগস্ট) সেতুর উদ্বোধনের জন্য আসছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। 

একাধিকবার তারিখ পরিবর্তনের পর চিলমারী অংশে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের মেরামত ও কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ না করেই সেতুর উদ্বোধন করা হবে আগামীকাল বুধবার। খুলে দেওয়া হবে সেতুর দরজা, যদিও সড়ক চলাচলের উপযোগী হয়নি। এ কারণে হতাশ কুড়িগ্রামবাসী। তাদের ভাষ্য, এটি কুড়িগ্রামের সাথে বৈষম্য এবং অবমূল্যায়ন।

সেতুর গাইবান্ধা হরিপুর অংশের কাজ অনেক আগে শেষ হয়েছে। তবে চিলমারী অংশের কাজে গাফলতি আর অবহেলা হয়েছে বলে দাবি করে এ অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ। এছাড়াও সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতি রয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। 

সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্র জানায়, উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরের চাহিদার জন্য চিলমারী-হরিপুর তিস্তা নদীর উপর তৈরি হয়েছে ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার মওলানা ভাসানী সেতু। আগামীকাল ২০ আগস্ট (বুধবার) দুপুর ১২ টায় এই সেতুর উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। 

সেতু উদ্বোধনের সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও কুড়িগ্রামের চিলমারী অংশে সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়নি। এতে যেমন হতাশ চিলমারীবাসী, তেমনি সড়ক চলচলের উপযোগী না হওয়ায় যানবাহন চালক ও ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন বিপাকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চিলমারী অংশের প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে মেরামতসহ কার্পেটিং বাকি রয়েছে। এছাড়াও সড়ক রক্ষায় গাইডওয়ালের কাজও অসমাপ্ত রয়েছে। 

১৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের চিলমারী উপজেলা হেডকোয়ার্টার-পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেইঃ ১২২০মিঃ-৫২৩০ মিঃ) উন্নয়ন করণ ও চিলমারী উপজেলা হেড কোয়ার্টার-পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেইঃ ০.

০০ মিঃ-১২২০ মিঃ) উন্নয়ন করণ কাজটি প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার চুক্তি মূল্যে পান মীর হাবিবুল আলম, উত্তর বড়গাছা নোটোর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। মীর হাবিবুল আলম, উত্তর বড়গাছা নোটোর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি পেলেও একাধিক হাত বদল হওয়ায় কাজের মান নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। 

স্থানীয়রা জানান, সংযোগ সড়কের কাজ শেষ না হতেই সেতুটির উদ্বোধন হচ্ছে। এর উপর কাজের মান নিম্ন হওয়ায় বড় বড় যানবাহন চলাচল নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সড়ক দিয়ে বাস, ট্রাক চলাচল করলে বিভিন্ন স্থানে দেবে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল, আকবর ও আকিবুল জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই যেখানে সড়কে ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে, সেখানে ভারী যানবাহন চলাচল শুরু হলে কী অবস্থা হবে? 

চিলমারী উপজেলার শিক্ষক আশিক ইকবাল বলেন, “কাজ শেষ না হওয়ার জন্য দায়ি কুড়িগ্রাম এলজিইডি কর্র্তৃপক্ষ, তারা কোনোভাবে দায় এড়াতে পারে না।”

স্থানীয় বাসিন্দা রাজ্জাক বলেন, “আসলে বলার কিছু নাই, সড়কের সাথে সেতুর বন্ধন আর সেই সড়কের কাজ সমাপ্ত না করে সেতুর উদ্বোধন এটি কেমন কথা! তাহলে কি কুড়িগ্রাম যে অবহেলিত, সেটিই বোঝানো হচ্ছে!” 

স্থানীয় বাসীন্দা মকবুল, মহিরসহ অনেকে বলেন- কুড়িগ্রাম চিলমারীবাসীর সাথে এটি তামাশা করা হচ্ছে। সেতুর উদ্বোধন হচ্ছে, অথচ চিলমারীর রাস্তা অকেজো। সমাপ্ত হবে কবে এটাও বলা মুশকিল।

চিলমারী উপজেলার রমনা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আকা বলেন, “গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ অংশের কাজ দ্রুত শেষ হয়েছে, অথচ চিলমারির বেলায় অজুহাত। এটি খুবই দুঃখজনক।”

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইফনুছ হোসেন বিশ্বাস বলেন, “বৈরী আবহাওয়ার কারণে কাজ শেষ হয়নি। তবে আবহাওয়া একটু ভালো হলেই দ্রুত কাজ শেষ করা হবে। কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।”

ঢাকা/বাদশাহ্/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক র ক জ শ ষ হয়

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ